ঈশ্বরদীতে পদ্মা নদীর পানি বাড়ছে। পাকশী হার্ডিঞ্জব্রীজ এলাকায় পানির স্রোতের তীব্রতা দেখে মনে হচ্ছে প্রাণ ফিরে পেয়েছে এক সময়ের প্রমত্তা পদ্মা।
পাকশী হার্ডিঞ্জব্রীজ পয়েন্টে পদ্মা নদীর পানির বিপদসীমা হচ্ছে ১৪ দশমিক ২৫ সেন্টিমিটার। গত বুধবার পানির উচ্চতা ছিল ১৩ দশমিক ৫৯ সেন্টিমিটার। ঈশ্বরদীতে পদ্মার পানি বিপদসীমার সন্নিকটে।
হার্ডিঞ্জ ব্রীজের ১৫টি স্প্যানের নিচে এখন পানিতে পরিপূর্ণ। পানি পৌঁছে গেছে নদী শাসন বাঁধ (গাইড ব্যাংক) পর্যন্ত অথচ এক মাস আগেও ১৫টি স্প্যানের ৮টির নিচেই পানি ছিল না।
হার্ডিঞ্জ ব্রীজের নিচে যে অস্থায়ী দোকানপাট গড়ে উঠেছিল সেগুলোও সরিয়ে ফেলা হয়েছে। প্রমত্তা পদ্মার তীব্র স্রোত ও পানির তীব্রতা দেখতে প্রতিদিন শত শত মানুষ পদ্মা পাড়ে ভিড় জমাচ্ছেন।
পানি বাড়ায় পদ্মার চরে জেগে ওঠা সাঁড়া ইউনিয়নের সাহেবনগর ও মোল্লার চর গ্রামের বসতি সরিয়ে ফেলা হয়েছে। স্রোতের তীব্রতায় চরের অধিকাংশ ফসলী জমি নদী গর্ভে বিলিন হয়ে গেছে।
এছাড়াও পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় সাঁড়া, পাকশী ও লক্ষ্মীকুণ্ডা ইউনিয়নের পদ্মা নদীর তীরবর্তী ফসলী জমি পানিতে তলিয়ে গেছে।
সাঁড়া ইউপির ৭নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য রফিকুল ইসলাম রফিক জানান, পানি বেড়ে যাওয়ায় নদীর মধ্যবর্তী চরে গড়ে উঠা বসতি সরিয়ে ফেলা হয়েছে। নদীর তীরে যেসব আবাদী জমি ছিল তা তলিয়ে গেছে। এতে কৃষকরা বেশ ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছে।
লক্ষ্মীকুণ্ডা ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য জিয়াউল ইসলাম জিয়া জানান, পদ্মার পানি বৃদ্ধি পেলেও এখনও পর্যন্ত লক্ষ্মীকুণ্ডার চরাঞ্চলের ফসলী জমিতে পানি উঠেনি। তবে এখানে পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকলে চরাঞ্চলের ফসলী জমি ডুবে যাওয়ার আশংকা রয়েছে।
সাঁড়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ইমদাদুল হক রানা সরদার জানান, নদীতে পানি বেড়েছে। নদী শাসন বাঁধ থাকায় ভাঙনের কবল থেকে এলাকাবাসী রক্ষা পেয়েছে। স্রোতের তীব্রতা বেশি থাকলেও নদী শাসন বাঁধের কোথাও কোনো ক্ষয়-ক্ষতি হয়নি।
পাবনা পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী এস এম আহসান হাবীব বলেন, পদ্মার পানি প্রতিদিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। হার্ডিঞ্জব্রীজ পয়েন্টে পানির উচ্চতা এখন (বুধবার দুপুর ১টা) ১৩ দশমিক ৫৯ সেন্টিমিটার। এখনকার বিপদসীমা হচ্ছে ১৪ দশমিক ২৫ সেন্টিমিটার।
এদিকে, পদ্মায় পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় পাকশীর হার্ডিঞ্জ ও লালন শাহ সেতু এলাকা, আরামবাড়িয়া স্কুল সংলগ্ন এলাকা ও সাঁড়া এলাকায় প্রতিদিনই শত শত মানুষ পদ্মার পানি দেখার জন্য ভিড় জমাচ্ছেন।
পাকশী হার্ডিঞ্জব্রীজ এলাকার নৌকার মাঝি বিমল জানায়, এক সপ্তাহের বেশি সময় ধরে পদ্মার পানি বেড়েই চলেছে। বেশ কয়েক বছর পর এবার পদ্মায় বেশি পানি দেখা যাচ্ছে।
পাকশী হঠাৎ পাড়া বাসিন্দা আমির হোসেন(৭০) জানান, বহু বছর পর পদ্মা নদীতে এতো পানি দেখলাম। ফারাক্কা বাঁধের আগে পদ্মার এমন রূপ সবসময় দেখা যেত।