শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ বলেছেন, পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে শিক্ষক নিয়োগের একটি অভিন্ন নীতিমালা প্রণয়ন করা হবে। এজন্য সবার মতামত নেয়া হয়েছে। এর ভিত্তিতে চূড়ান্ত নীতিমালা প্রণীত হবে। সকল বিশ্ববিদ্যালয়ে একই নিয়মে নিয়োগ ও পদোন্নতি হবে।
আজ বুধবার সকাল ১০ টায় শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের আয়োজনে, বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন (ইউজিসি) এর অডিটোরিয়ামে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় সমূহের শিক্ষক নিয়োগ/পদন্নতি/ প্রশিক্ষণ বিষয়ে অভিন্ন নীতিমালা বিষয়ক একটি কর্মশালায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে শিক্ষামন্ত্রী এসব কথা বলেন।
সভায় বিশেষ অতিথি হিসেবে ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের চেয়ারম্যান প্রফেসর আবদুল মান্নান। পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের মোট ৩০জন উপাচার্য এবং শিক্ষক মতবিনিময় সভায় নীতিমালার বিভিন্ন অংশ সংস্কারের দাবি করেন।
নুরুল ইসলাম নাহিদ বলেন, শিক্ষকরা শিক্ষার্থীদের রোল মডেল। আজকের আলোচনার মাধ্যমে তারাও শিখবে যে কিভাবে শান্তিপূর্ণ উপায়ে, তর্কবিতর্ক এবং আলোচনা একটি স্থিতিশীল ও অভিন্ন সমাধানে পৌঁছান যায়।
তিনি বলেন, অভিন্ন শিক্ষক নিয়োগ, পদোন্নতি/পদোন্নয়ন নীতিমালা চূড়ান্ত করা হবে। আলোচনার মাধ্যমে উপাচার্যগণ অভিজ্ঞতার আলোকে মতামত দিয়েছেন। এর ভিত্তিতে এ বিষয়ে গঠিত কমিটি নীতিমালা চূড়ান্ত করবে। এ নীতিমালা বাস্তবায়িত হলে শিক্ষক নিয়োগে স্বচ্ছতা আরো বৃদ্ধি পাবে এবং যোগ্যতম প্রার্থীরা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক হিসেবে নিয়োগ পাবেন।
শিক্ষামন্ত্রী বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ে যুগের সাথে সঙ্গতিপূর্ণ শিক্ষা দিতে হবে। এজন্য উপযুক্ত পরিবেশ তৈরি করতে হবে। বিশ্ববিদ্যালয়ে গবেষণা, জ্ঞানচর্চা বাড়াতে হবে। জ্ঞান অনুসন্ধান ও নতুন জ্ঞান সৃষ্টি করতে হবে। বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের চেয়ারম্যান প্রফেসর আবদুল মান্নান বলেন, সরকারপক্ষ থেকে শিক্ষকদের গবেষণা খাতে ইতিমধ্যে ৬৬ কোটি টাকা অর্থায়ন করা হয়েছে এবং আরও করা হবে।
তিনি আরও বলেন, আমাদের দেশের শিক্ষার পরিবেশ এমন করতে হবে যেন বাইরের দেশের শিক্ষার্থীরা আমাদের দেশে কম খরচে পড়াশোনা করতে নয় বরং মানসম্পন্ন পড়াশোনা করতে আসে। সভায় শিক্ষকরা বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ে উচ্চশিক্ষার মান সমুন্নত রাখা এবং মেধা লালনের জন্য গ্রহণযোগ্য এবং সময়োপযোগী একটি অভিন্ন নীতিমালা সময়ের দাবি।
উল্লেখ্য যে, শিক্ষক ফেডারেশনের সভাপতি মাকসুদ কামাল বলেন, এই নীতিমালার সিংহভাগই শিক্ষকদের তৈরি। কিন্তু ৯০ দশকে সরকারের সঙ্গে তেমন আলোচনার সুযোগ ছিল না বলে সেটা গ্রহণযোগ্যতা পায়নি। এই সরকার নিজস্ব কিছু সংস্কারের মাধ্যমে এই নিতিমালাটি বাস্তবায়নের প্রয়াস নিয়েছে। কিন্তু এখনও শিক্ষকরা নীতিমালার যেসকল পরিবর্তন দাবি করেন তা জানতেই এই কর্মশালা আয়োজিত হয়।
সমাপনি বক্তব্যে সঞ্চালক আখাতার হোসেন বলেন, দেশের সকল পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে সামঞ্জস্যপূর্ণ শিক্ষা ব্যাবস্থা বজায় রাখতে সকল শিক্ষকের সমান মূল্যায়ন হওয়া অতি জরুরি। পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য এবং শিক্ষক নেত্রীবৃন্দের সাথে আরও আলোচনার মাধ্যমে নীতিমালাটি চূড়ান্ত করা হবে।