যানজটের শহর হিসেবে ঢাকা বিশ্বব্যাপী পরিচিত। বিশ্ব ব্যাংকের সাম্প্রতিক প্রতিবেদন অনুযায়ী ঢাকার গড় ট্রাফিকের গতি ঘন্টায় ৭ কিলোমিটার। আর যানজটের এ নগরীতে স্মার্টফোন ভিত্তিক পরিবহন অ্যাপ ‘পাঠাও’ চালু করে ইতোমধ্যে সাড়া ফেলেছেন যাতায়াত ব্যবস্থায়। বিশ্বের অন্যতম জনবহুল শহর ঢাকার যাতায়াত ব্যবস্থায় রীতিমত বিপ্লব ঘটিয়েছে ‘পাঠাও’।
আর এ প্রতিষ্ঠানটির উত্থান যেন জিরো থেকে হিরো হওয়ার গল্প। একেবারে শুন্য থেকে শুরু হওয়া পাঠাও এখন ১০০ মিলিয়ন USD বা বাংলাদেশী টাকায় ৮২০ কোটি টাকার মালিক।
যেখানে তিন বছরের মধ্যে ফেসবুকের প্রতিষ্ঠাতা মার্ক জুকারবার্গ, আলীবাবার প্রতিষ্ঠাতা জ্যাক মা, অ্যামাজনের প্রতিষ্ঠাতা জ্যাফ বেজুসও এমন সাফল্য পায়নি।
বাংলাদেশের তিনজন যুবকের হাত ধরে ই-কমার্স ব্যবসায় ডেলিভারি পার্টনার হিসেবে ২০১৫ সালে যাত্রা শুরু করে পাঠাও।
৮২০ কোটি টাকার রাইড শেয়ারিং কোম্পানী পাঠাও যখন শুরু করেছিল তখন তাদের কোন মুলধন ছিলনা। তারা সব কিছু করেছিল সততা এবং নীতিগত ভাবে। আর এ খাতে বর্তমানে বাংলাদেশের সর্ববৃহৎ প্রতিষ্ঠান বলে দাবি করেছে প্রতিষ্ঠানটি।
এই তিন উদ্যোগ তাদের মধ্যে একজন হলেন হুসাইন এম ইলিয়াস যিনি নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে মার্কেটিংয়ে সবে মাত্র এমবিএ ডিগ্রি সম্পন্ন করেছেন। অপর আরেকজন হলেন সিফাত আদনান তিনি রাজশাহী প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে কম্পিউটার সায়েন্স এন্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগ থেকে স্নাতক সম্পন্ন করেছেন। আরেকজন হলেন কানাডায় পড়াশোনা করা কিশোয়ার হাশমী।
চাকরি পেছনে না ছুটে নিজে থেকে কিছু একটা করার কথা ভাবলেন এই তরুণরা। আর তাই ২০১৫ সালে তিনজন বন্ধু মিলে পাঠাও কোম্পানী শুরু করে বাই-সাইকেলে পন্য ডেলিভারী দিবার জন্য।
তিনজন মিলে শুরু করলেন দেশীয় ডেভেলপার দিয়ে অ্যাপস তৈরির কাজ। অ্যাপস তৈরির পর রাজধানীতে প্রথমবারের মতো স্মার্ট ফোনভিত্তিক মোটরবাইক সার্ভিস ‘পাঠাও’ চালু করেন তারা। ২০১৬ সালের নভেম্বর মাসে এই সেবা চালু করা হয়।
তারা মোটামুটি ভালো সফলতা পেতে শুরু করলো। তাদের সফলতা দেখে বিভিন্ন বিদেশী ইনভেস্টররা তাদের ব্যবসায় ইনভেস্ট করলো। যার ফলে আমাদের সবার পরিচিত মোটর বাইক রাইড শেয়ারিং কোম্পানী পাঠাও আজ ১০০ মিলিয়ন ডলার বা বাংলাদেশী টাকায় ৮২০ কোটি টাকার মালিক।
একদম শূন্য অবস্থান থেকে শুরু করা এই তিন তরুণ বর্তমানে ১০০ মিলিয়ন USD বা বাংলাদেশি টাকায় ৮২০ কোটি টাকার মালিক! বাংলাদেশের তরুণদের জন্য যা অনন্য রেকর্ড। সম্পদ বলতে কেবল তিনটি বাই সাইকেল নিয়ে ব্যবসা শুরু করেছিল তারা।
আর এবার দেশের গণ্ডি পেরিয়ে এবার বিদেশের মাটিতে সেবা দেওয়ার পরিকল্পনা নিয়েছে বাংলাদেশি রাইড শেয়ারিং প্রতিষ্ঠানটি। ফেসবুকে দেওয়া এক পোস্টে প্রতিষ্ঠানটি জানিয়েছে, কয়েক সপ্তাহের মধ্যেই নেপালে নিজেদের কার্যক্রম শুরু করবে পাঠাও।