'টাকার অভাবে নিভে না যাক কোন শিক্ষার বাতি 'এ শ্লোগানকে সামনে রেখে ফটিকছড়ি উপজেলা লেলাং ইউনিয়নের ফেনুয়া টি এস্টেট সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে অবহেলিত গরীব শিক্ষার্থীদের মাঝে শিক্ষা সামগ্রী বিতরণ করা হয়েছে। চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যয়নরত হাটহাজারী- ফটিকছড়ি উপজেলার একঝাঁক শিক্ষার্থীদের হাতে গড়া সংগঠন "এক টাকায় শিক্ষা" ফাউন্ডেশনের উদ্যোগে এ সামগ্রী গুলো বিরতণ করা হয়।
লেলাং ফেনুয়া চা বাগানের অত্যন্ত দরিদ্র চা শ্রমিকদের সন্তানেরা পড়াশোনা করেন এই বিদ্যালয়ে, দারিদ্রতার কাছে হার মেনে শিক্ষার আলো থেকে প্রতিনিয়ত বঞ্চিত হচ্ছে অসংখ্য কোমলমতি শিশু। বিশাল চা বাগানের কর্মচারীদের সন্তানদের শিক্ষা গ্রহণের একমাত্র মাধ্যম অত্র বিদ্যালয়। শিক্ষা গ্রহনের জন্য প্রথম শ্রেনীতে দেড়শতাধিক ছাত্র বিদ্যালয়ে আসলেও মাঝ পথে ঝড়ে পড়ে পঞ্চম শ্রেনীতে সে সংখ্যাটি দাঁড়ায় কুড়ির কোটায়, আর প্রাথমিক বিদ্যালয়ের গণ্ডি পেরিয়ে উচ্চ বিদ্যালয়ে যাওয়ার সংখ্যাটাও খুবই নগন্য।
বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের সাথে কথা বলে জানা যায় স্কুলের বেশিরভাগ শিক্ষার্থী গরীব, তাদের পিতা মাতা চা শ্রমিক হিসেবে বাগানে কাজ করে, অনেক সময় দেখা যায় অভাবের কাছে হার মেনে জীবিকার তাগিদে পরিবারের হাল ধরতে চতুর্থ ও পঞ্চাশ শ্রেণীর শিক্ষার্থীরা বাগানের কর্মচারী হিসেবে লেগে যায়। টাকার অভাবে ঝরে পড়া এসব শিক্ষার্থীদের সহযোগিতা করতে অবহেলিত নিরক্ষর শিশুদের শিক্ষার প্রতি আগ্রহ বাড়াতে এবং নিরক্ষর অসচেতনত অভিবাবকদের মাঝে সচেতনতা বৃদ্ধি করতেই "এক টাকায় শিক্ষা" ফাউন্ডেশনটির "নিয়মিত কার্যক্রমের অংশ হিসেবে কর্ণফুলী টি এস্টেট সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়টি নির্ধান করেন। এবং সংগঠনটির লক্ষ উদ্দেশ্যেকে সামনে রেখেই এ শিক্ষা সামগ্রী বিতরণ করেন।
সংগঠনের ফাউন্ডার রিজোয়ানুল হক বলেন, ২০১৬ সালের শেষের দিকে এ সংগঠনের পথচলা শুরু হয়, বাংলাদেশের ঘরে ঘরে শিক্ষার বাতি জ্বালানো এবং টাকার অভাবে মাঝ পথে ঝড়ে পড়া শিক্ষার্থীদের মাঝে শিক্ষার আলো ছড়িয়ে দেওয়া আমাদের লক্ষ উদ্দেশ্য। হয়ত আপনারা ভাবছেন এই ফাউন্ডেশন কিভাবে চলে কিংবা কিভাবে আসে এই টাকা, তার জন্যও রয়েছে অদ্ভুত একটা পরিকল্পনা যা ইতোমধ্যে দু-তিনশ বাচ্চার পড়াশোনার খরচ বহন করি আমরা। তা সম্ভব হয়েছে সুন্দর একটা পরিকল্পনার মাধ্যমে, আর তা হল "এক টাকা" বর্তমানে ফাউন্ডেশনের সদস্য সংখ্যা ১২০০ জন, প্রতি জন সদস্যদের প্রতিদিন টিফিন থেকে এক টাকা বাঁচিয়ে তা ফাউন্ডনশনের কাজের জন্য দিয়ে থাকেন। প্রতিদিন ১২০০ টাকা করে প্রতি মাসে জমানো টাকা দিয়ে এই শিক্ষা উপকরণ গুলো বিভিন্ন এলাকায় শিক্ষার্থীর মাঝে পৌঁছে দেয়। সকলে আমাদের জন্য দোয়া করবেন যাতে করে আমারা সফল হতে পারি এবং আমাদের এ স্বপ্নকে বাস্তবায়ন করে বাংলার প্রতিটি ঘরে ঘরে শিক্ষার আলো ছড়িয়ে দিতে পারি।