শরীরে পুনরায় ‘প্রাণ ফিরে আসবে’ এ আশায় মরদেহের উপর মশারি টানিয়ে অপেক্ষায় বসে আছে পরিবার। কুমিল্লার চান্দিনায় সাপের কামড়ে এক সাপুড়ের মৃত্যু হয়েছে। পরিবারের দাবি, ‘সাপে কাঁটা রোগী সাত দিন পর্যন্ত দম চেপে থাকে। ভাল ওঝা পেলেই ‘বেঁচে’ যাবেন তিনি।’
নিহত সাপুড়ির নাম আবদুল মালেক (৫৫) চান্দিনার মহিচাইল গ্রামের বাসিন্দা।তিনি বেদে সম্প্রদায়ের না হলেও সাপ ধরায় পারদর্শিতার কারণে এলাকার লোকজন ‘সাপুড়িয়া’ বলে ডাকতো। তিনি নিজেকে ‘সাপুড়িয়া সর্দার’ পরিচয় দিয়ে অন্তত পারঙ্গমতার সঙ্গে এসব সাপ আটকে বস্তাবন্দী করে নিয়ে আসতেন।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, শনিবার রাতে গ্রামের মহিচাইল কৃষকের মাছ ধরার ফাঁদে একটি বিষধর সাপ আটকে যায়। রাতেই আব্দুল মালেক ফাঁদ থেকে সাপটি ধরে একটি ব্যাগে আটকে রাখে। পরদিন সকাল ১০টার দিকে সাপটিকে খাবার খাওয়ানোর জন্য ব্যাগ থেকে বের করার সঙ্গে সঙ্গে সাপটি আব্দুল মালেকের হাতে কামড় দেয়।
এসময় আব্দুল মালেক বিষয়টি গুরুত্ব না দেওয়ায় সকাল ১১টার দিকে তিনি নিজ বাড়িতে ঢলে পড়লে তাৎক্ষণিকভাবে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। কিন্তু ততক্ষণে মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়েন আব্দুল মালেক। বিকেলে তার মরদেহ বাড়িতে আনার পর বাড়ির উঠানে মশারী টানিয়ে তাকে নিয়ে বসে থাকতে দেখা যায় পরিবারের সদস্যদের।
পরিবারের সদস্যরা জানান, ‘শুনেছি সাপে কাটা রোগী নাকি সাত দিন পর্যন্ত দম চেপে থাকে। ভাল ওঝা পাইলে শেষ চেষ্টা করে দেখবো। আমরা চারিদিকে ভাল ওঝার সন্ধান করতেছি।’
এ ব্যাপারে কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের চিকিৎসক ডা. মনিরুজ্জামান বলেন, বিষয়টি সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন। প্রাণীর ২-৪ মিনিট হার্টবিট বন্ধ থাকলে তার মৃত্যু ঘটে। আর যেখানে একটি হাসপাতালের ডাক্তার তাকে মৃত ঘোষণা করেছেন, সেখানে আর কোনো কথাই থাকতে পারে না।