প্রথম ম্যাচে বীরত্বপূর্ণ ইনিংসের পর দ্বিতীয় ম্যাচেও মেহেদী হাসান মিরাজের ঝলক! টস জিতে ব্যাটিংয়ে নেমে ৬৯ রানেই ৬ উইকেট নেই বাংলাদেশের। এমন পরিস্থিতিতে আবারও ত্রাতা মিরাজ। তুলে নিলেন বিস্ময়কর এক শতরান। এবার তাকে সঙ্গ দিলেন অনেক সমালোচনাকে সঙ্গী করে মাঠে নামা মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ। এই দুজনের রেকর্ড জুটিতে বিপর্যয়ে পড়েও ভারতকে চ্যালেঞ্জিং লক্ষ্য দিল বাংলাদেশ।
বুধবার মিরপুর শের-ই বাংলা স্টেডিয়ামে সিরিজের দ্বিতীয় ওয়ানডেতে ভারতকে ৭ উইকেটে ২৭২ রানের লক্ষ্য দিয়েছে বাংলাদেশ। মিরাজের ব্যাট থেকে এসেছে ১০০, ক্যারিয়ার সেরা রান। মাহমুদউল্লাহ ফিরেছেন ৭৭ রানে। সপ্তম উইকেট জুটিতে দুজন মিলে গড়েছেন রেকর্ড ১৪৮ রানের জুটি, যা ভারতের বিপক্ষে যেকোনো উইকেট জুটিতে বাংলাদেশের সর্বোচ্চ।
সিরিজ জয়ের মিশনে নেমে বুধবার ১০০ রান তোলার আগেই নেই ৬ উইকেট। বাংলাদেশ তখন ঘোর বিপদে। তখনই ত্রাতা হয়ে এলেন মেহেদি হাসান মিরাজ ও মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ। এই দুজনের ব্যাটে চড়েই বিপর্যয় সামাল দিয়েছে লিটন দাসের দল।
বাংলাদেশ তাদের ৬ষ্ঠ উইকেট খুইয়েছে ৬৯ রানে। এরপর থেকে মেহেদি আর রিয়াদ কোনোপ্রকার ভুল করেননি। বাংলাদেশকে দিয়েছে ধ্বংসস্তুপ থেকে মাথা তুলে দাঁড়ানোর দিশা। দু'জন স্রোতের বিপরীতে দাঁড়িয়ে মাথা তুলে লড়লেন।
ভারতীয় বোলারদের কোণঠাসা করে রিয়াদ খোলস ছেড়ে বেরিয়ে আসেন। লাগসই জবাব দেন সমালোচকদের। সঙ্গে মিরাজ তো অনবদ্য। আগের ম্যাচেই শেষ উইকেট জুটিতে মুস্তাফিজুর রহমানকে সঙ্গে নিয়ে জন্ম দিয়েছিলেন রূপকথার। ৫১ রানের জুটি গড়ে বাংলাদেশকে এনে দিয়েছিলেন ১ উইকেটের নাটকীয় এক জয়। এবার নিজেকেও ছাড়িয়ে গেলেন তিনি। ৫৫ বলে ওয়ানডে ক্যারিয়ারে তৃতীয় হাফসেঞ্চুরি তুলেন মিরাজ।
রিয়াদ সঙ্গ দিয়ে সপ্তম উইকেট জুটিতে বাংলাদেশের শতক পার করেন। রিয়াদও তুলে নেন নিজের ওয়ানডে ক্যারিয়ারের ২৭তম অর্ধ-শতক। মনে হচ্ছিল সেঞ্চুরি তুলে নেবেন এই অভিজ্ঞ ব্যাটসম্যান। কিন্তু দলীয় ২১৭ রানের সময় ব্যক্তিগত ৭৭ রানে ফেরেন রিয়াদ। উমরান মালিকের বলে ক্যাচ তুলে দেন উইকেট কিপার লোকেশ রাহুলের গ্লাভসে। ভেঙে যায় রেকর্ড ১৪৮ রানের জুটি।
২০১৪ সালে ফতুল্লায় তৃতীয় উইকেটে এনামুল হক ও মুশফিকুর রহিমের ১৩৩ রান ছিল এত দিন সর্বোচ্চ। সেটা ছাড়িয়ে গেল মাহমুদউল্লাহ-মিরাজের জুটি। রিয়াদ ফিরলেও মিরাজকে আটকায় কে? শেষ ওভারে এসে ১৫ রান তুললেন। আর একইসঙ্গে বিকেলের আলোতে পেয়ে গেলেন তিন অঙ্কের দেখা।
শতরানেই অপরাজিত থেকে ফিরলেন মিরাজ। ৮৩ বলে ঠিক ১০০ নটআউট। নাসুম আহমেদ ১১ বলে ১৮। বাংলাদেশও পেয়ে গেল চ্যালেঞ্জিং স্কোর।
অথচ এর আগে দুপুরে শুরুতে ইনিংসের দ্বিতীয় ওভারেই ফিরে যান ওপেনার এনামুল হক বিজয় ৯ রান করে। এরপর লিটন দাসকে নিয়ে ইনিংস বড় করতে থাকেন নাজমুল হোসেন শান্ত। তবে ব্যাট হাতে এদিন ভক্তদের হতাশ করেছেন অধিনায়ক লিটন দাস। দলীয় ৩৯ রানের মাথায় ব্যক্তিগত ৭ রান করে ফিরে যান এই তারকা ওপেনার। পরবর্তীতে থিতু হয়েও ইনিংস বড় করতে পারেননি নাজমুল হোসেন শান্ত। ফিরেছেন ২১ রান করে।
তারপর মিরাজ-রিয়াদের ব্যাটে রক্ষা। মিরপুরে এবার ওয়ানডে সিরিজ জয়ের স্বপ্ন তো দেখতেই পারে বাংলাদেশ।