২০২২-২৩ অর্থবছরের বাজেটে শুল্ক ও কর আরোপের প্রস্তাবনায় বাড়ছে বেশ কিছু পণ্যের দাম। ২০২২-২৩ অর্থবছরে বাড়ানো হচ্ছে সিগারেটের দাম। এর আগে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড জানিয়েছে তারা সিগারেট থেকে প্রায় এক হাজার কোটি টাকা বাড়তি আদায় করতে চায়।
গত বাজেটে উচ্চ স্তরের সিগারেটের ১০ শলাকার দাম ১০২ টাকা নির্ধারণ করা হয়। খুচরা বাজারে এর দাম দাঁড়ায় প্রতি শলাকা ১১ টাকা। নতুন বাজেটে এটি বেড়ে যথাক্রমে ১১১ টাকা করা হচ্ছে। মধ্যম স্তরের সিগারেটের ১০ শলাকার দর ৬৩ টাকা থেকে বাড়িয়ে ৬৫ টাকা হতে পারে। এর ফলে প্রতি শলাকার দাম ৭ টাকা থেকে বেড়ে ৮ টাকায় দাঁড়াবে। নিম্নস্তরের সিগারেটের ১০ শলাকার দাম ৩৯ টাকা থেকে বেড়ে ৪০ টাকা হতে পারে।
অর্থমন্ত্রী বলেন, সিগারেটের নিম্নস্তরের ১০ শলাকার দাম ৪০ টাকা ও তদূর্ধ্ব এবং সম্পূরক শুল্ক ৫৭ শতাংশ ধার্যের প্রস্তাব করছি। এ ছাড়া, মধ্যম স্তরের ১০ শলাকার দাম ৬৫ টাকা ও তদূর্ধ্ব, উচ্চস্তরের ১০ শলাকার দাম ১১১ টাকা ও তদূর্ধ্ব, অতি-উচ্চ স্তরের ১০ শলাকার দাম ১৪২ টাকা ও তদূর্ধ্ব এবং এই ৩টি স্তরের সম্পূরক শুল্ক ৬৫ শতাংশ নির্ধারণ করার প্রস্তাব করছি।
তিনি আরও জানান, অন্যান্য বছরের মত যন্ত্রের সাহায্য ব্যতীত হাতে তৈরি ফিল্টার বিযুক্ত বিড়ির ২৫ শলাকার দাম ১৮ টাকা, ১২ শলাকার দাম ৯ টাকা ও ৮ শলাকার দাম ৬ টাকা এবং সম্পূরক শুল্ক ৩০ শতাংশ অব্যাহত রাখার প্রস্তাব করছি। ফিল্টার সংযুক্ত বিড়ির ২০ শলাকার দাম ১৯ টাকা ও ১০ শলাকার দাম ১০ টাকা এবং সম্পূরক শুল্ক ৪০ শতাংশ অব্যাহত রাখার প্রস্তাব করছি।
এছাড়াও দাম বাড়ছে বডি স্প্রে, প্রসাধনী পণ্য, জুস, প্যাকেটজাত খাদ্যের।
এরমধ্যেই এক প্রজ্ঞাপনে বিদেশি ফল, বিদেশি ফুল, ফার্নিচার ও কসমেটিকস জাতীয় প্রায় ১৩৫টি পণ্যের ওপর ৩ শতাংশের পরিবর্তে আরোপ করা হয়েছে ২০ শতাংশ নিয়ন্ত্রণমূলক শুল্ক। আবারও শুল্ক আরোপের কারণে বৃদ্ধি পাচ্ছে বিড়ি সিগারেটসহ সব ধরনের তামাকজাত পণ্যের দাম।
দেশীয় শিল্পের সুরক্ষায় শুল্ক আরোপের কারণে বাড়ছে আমদানি করা স্মার্টফোনের দাম। বাড়তে যাচ্ছে বিলাসবহুল গাড়ির দাম, আমদানি করা ফ্রিজ আর এসির দাম।
মহামারি কোভিডের অভিঘাত পেরিয়ে উন্নয়নের ধারাবাহিকতায় প্রত্যাবর্তন শিরোনামে নতুন অর্থবছরের বাজেট উপস্থাপন করছেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল। বরাবরের মতোই, অভ্যন্তরীণ সম্পদের ব্যবহার আর প্রয়োজন বুঝে আমদানির লক্ষ্যে বাজেটে শুল্ক করের হারে আসতে যাচ্ছে অদল বদল।
যদিও নতুন অর্থবছরে শুল্ক আর ভ্যাট ছাড়ের প্রস্তাবনায় দাম কমছেও বেশ কিছু পণ্যের। ল্যাপটপ, ডেস্কটপ, প্রিন্টার ও অন্যান্য কম্পিউটার ও আইসিটি পণ্যে। প্রত্যাহার করা হবে ৫ শতাংশ শুল্ক।
ফলে দেশে উৎপাদিত কম্পিউটার ও আইসিটি পণ্যের দাম কমছে। একই কারণে কমছে দেশীয় কৃষি যন্ত্রপাতির দাম। ভ্যাট অব্যাহতির সুবিধা পেতে যাচ্ছে দেশীয় গাড়ি শিল্প। ফলে মোটরগাড়ি তৈরিতে যন্ত্রপাতি ও যন্ত্রাংশের আমদানিতে শুল্ক ছাড়ের পাশাপাশি ৫ শতাংশ ভ্যাট অব্যাহতি প্রস্তাব আসতে পারে বাজেটে। ফলে দেশে তৈরি গাড়ি তুলনামূলক কম দামে মিলছে। এ ছাড়া কমছে দেশে উৎপাদিত মুঠোফোনের দাম।