Bootstrap Image Preview
ঢাকা, ১৯ শুক্রবার, এপ্রিল ২০২৪ | ৫ বৈশাখ ১৪৩১ | ঢাকা, ২৫ °সে

চট্টগ্রাম বন্দর জলসীমায় দস্যুতা ঘটেনি এক বছরে

বিডিমর্নিং ডেস্ক
প্রকাশিত: ২০ জানুয়ারী ২০২২, ০৩:৪৯ PM
আপডেট: ২০ জানুয়ারী ২০২২, ০৩:৪৯ PM

bdmorning Image Preview
ছবি সংগৃহীত


চট্টগ্রাম বন্দরের ৫০ নটিক্যাল মাইলের বিশাল জলসীমা ২০২১ সালও দস্যুতামুক্ত রাখতে সক্ষম হয়েছে কর্তৃপক্ষ। ১৪ বছরের ইতিহাসে মাত্র দুইবার অনন্য রেকর্ড অর্জন করেছে এই বন্দর। ২০১৯ সালে প্রথমবার জলসীমাকে দস্যুতাশূন্য করতে পেরেছিল চট্টগ্রাম বন্দর; এরপর ২০২০ সালে পাঁচটি দস্যুতার ঘটনা ঘটেছিল। সেই ধকল কাটিয়ে ২০২১ সালেও দ্বিতীয়বার দস্যুতামুক্ত রাখল দেশের প্রধান এই সমুদ্রবন্দর।

বাণিজ্যিক জাহাজে সংঘটিত সশস্ত্র ডাকাতি, দস্যুতা ও চুরি প্রতিরোধে পর্যবেক্ষণকারী আন্তর্জাতিক সংগঠন রিক্যাপ ২০২১ সালের বার্ষিক প্রতিবেদনে এ তথ্য প্রকাশ করেছে। গত মঙ্গলবার রাতে প্রকাশিত এ প্রতিবেদনে চট্টগ্রাম বন্দরে দস্যুতার ঘটনা কমে আসার সাফল্যের প্রশংসা করেছে রিক্যাপ। এ জন্য নজরদারি জোরদার করা এবং সাগরে টহল বাড়ানোকেই কারণ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে।

বন্দর ব্যবহারকারীরা বলছেন, দেশের বহির্নোঙর ও জলসীমায় আসা জাহাজে চুরি-দস্যুতা-ডাকাতির ঘটনা বাড়লে সমুদ্রপথে পণ্য পরিবহনে নেতিবাচক প্রভাব পড়ে। পণ্য পরিবহনে বাড়তি জাহাজভাড়া আরোপ করে বিদেশি জাহাজ মালিক ও শিপিং লাইনগুলো; এতে বিপাকে পড়তে হয় দেশীয় আমদানি-রপ্তানিকারকদের। আর বাংলাদেশমুখী রুটে জাহাজভাড়া দিতে চায় না বিদেশি জাহাজ মালিকরা। এ ঘটনায় বিশ্বের শিপিং বাণিজ্যে চট্টগ্রাম বন্দরের ভাবমূর্তি উজ্জ্বল হবে; জাহাজভাড়া, চট্টগ্রাম বন্দরমুখী জাহাজ পরিচালনায় বিদেশি শিপিং লাইনগুলোর আগ্রহ আরো বাড়বে।

দেশের জলসীমার উপকূল থেকে সাগরের দিকে ১২ নটিক্যাল মাইল এলাকা পর্যন্ত নজরদারি করে কোস্ট গার্ড। আর ১২ নটিক্যাল মাইলের পর থেকে দেশের সমুদ্রসীমানা পর্যন্ত নজরদারি করে নৌবাহিনী। শুধু বন্দরই নয়, বন্দরের বাইরেও বাংলাদেশের জলসীমায় দস্যুতা বা চুরি-ডাকাতির ঘটনা ঘটেনি।

চট্টগ্রাম বন্দর চেয়ারম্যান রিয়ার অ্যাডমিরাল এম শাহজাহান বলেন, ‘বন্দর, কোস্ট গার্ড ও নৌবাহিনীর তদারকি বৃদ্ধির কারণেই মূলত চট্টগ্রাম বন্দর জলসীমায় এবারও কোনো দস্যুতার ঘটনা ঘটেনি। এর ফলে বন্দরপথে চলাচলরত জাহাজের ইনস্যুরেন্সের প্রিমিয়াম কমবে। তাতে পণ্য পরিবহনের খরচও কমবে। এই সাফল্য ধরে রাখাই আমাদের লক্ষ্য।’

এফবিসিসিআই স্ট্যান্ডিং কমিটির (পোর্ট অ্যান্ড শিপিং) কো-চেয়ারম্যান সাহেদ সারোয়ার বলেন, দস্যুতা থাকলে মালিকরা ২০০-৩০০ কোটি টাকার একটি জাহাজ ভাড়া দিতে একটু ঝুঁকি মনে করেন। এ জন্য ভাড়া বেশি চান, ইনস্যুরেন্স খরচও বেশি চান, দস্যুতামুক্ত থাকলে অবশ্যই জাহাজভাড়ার ঝুঁকি কমবে, ভাড়াও কমবে। অর্থাৎ রিস্ক যত কমবে, পণ্য পরিবহনের খরচও কমবে। এটা দেশেরই লাভ।

জানা গেছে, গত ২০১৯ সালের শেষ দিকে চট্টগ্রাম বন্দরের জলসীমা সাড়ে সাত নটিক্যাল মাইল থেকে বেড়ে ৫০ নটিক্যাল মাইলে উন্নীত হয়েছে। রিক্যাপ প্রতিবেদন অনুযায়ী, চট্টগ্রাম বন্দরের জলসীমায় বিগত ১৪ বছরের মধ্যে ২০১৯ সালেই শুধু দস্যুতার ঘটনা শূন্যে নেমেছে। এর আগে ২০১০ সালে সর্বোচ্চ ২১টি, ২০১১ সালে ১৪টি, ২০১২ সালে ১২টি, ২০১৫ সালে ১০টি, ২০১৬ সালে একটি, ২০১৭ সালে ১১টি এবং ২০১৮ সালে ৯টি দস্যুতা-চুরির ঘটনা ঘটেছিল।

Bootstrap Image Preview