Bootstrap Image Preview
ঢাকা, ২০ শনিবার, এপ্রিল ২০২৪ | ৬ বৈশাখ ১৪৩১ | ঢাকা, ২৫ °সে

নাসার মহাকাশচারীদের ‘সুপারফুড’ চাষ নীলফামারীতে

বিডিমর্নিং ডেস্ক
প্রকাশিত: ১৫ জানুয়ারী ২০২২, ১১:৪৮ AM
আপডেট: ১৫ জানুয়ারী ২০২২, ১১:৪৮ AM

bdmorning Image Preview


সারাবিশ্বে সুপারফুড হিসেবে পরিচিত ‘কিনোয়া’ আবাদ হচ্ছে নীলফামারীর কিশোরগঞ্জে। এখানকার মাগুড়া ইউনিয়নের দুই কৃষক এক বিঘা জমিতে এটি চাষ করছেন এবার।

উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা তুষার কান্তি রায় এই দানাদার ফসল আবাদে পথ দেখাচ্ছেন কৃষকদের। উপজেলা কৃষি বিভাগ সূত্র জানায়, কিনোয়া দানাদার শস্য। এতে প্রচুর এমাইনো অ্যাসিড, ফাইবার, ভিটামিন, মিনারেল, পটাশিয়াম ও আয়রন থাকায় নাসার মহাকাশচারীরা এটি খেয়ে থাকেন।

গ্লাইসেন ইনডেক্স কম থাকায় ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য এটি উপকারী। এতে প্রোটিন আছে ১৪-১৮ ভাগ। ওজন কমানোয় এটি সহযোগিতা করে। সবজি হিসেবেও এটি সুস্বাদু। পোলাও, খিচুড়ি হিসেবে খাওয়া যায়। আবার সালাদ, স্যান্ডউইচেও ব্যবহার করা যায়। রান্না করলে এটি পরিমাণে চার গুণ বৃদ্ধি পায়। পেটে দীর্ঘ সময় থাকে। স্থানীয়ভাবে চাষ হওয়া কাউনের বিকল্প হিসেবে কিনোয়া অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।

কিনোয়ার বীজ শস্য হিসেবে খাওয়া হয়। দক্ষিণ আমেরিকা থেকে এটির চাষ ছড়িয়ে পড়েছে। ১৯৮৩ সাল থেকে এটি যুক্তরাষ্ট্রে চাষ হচ্ছে। ইউরোপের কয়েকটি দেশেও এর বাণিজ্যিক চাষ হয়। সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে অনেক উঁচুতে পাহাড়ি অঞ্চলে এটি চাষ হলেও বাংলাদেশের জলবায়ুর উপযোগী জাত তৈরি করেছেন স্থানীয় বিজ্ঞানীরা।

গবেষণা করে শেরে বাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. পরিমল কান্তি বিশ্বাস এই কিনোয়ার দেশে চাষযোগ্য প্রকরণ উদ্ভাবন করেছেন, যা কৃষকদের মধ্যে ছড়িয়ে দেয়ার চেষ্টা চলছে। ইতিমধ্যে নীলফামারীর কিশোরগঞ্জসহ কয়েকটি উপজেলায় এর আবাদ শুরু হয়েছে।

মাগুড়া ইউনিয়নের মাস্টারপাড়া গ্রামের কৃষক শাহজাহান আলী ১২ শতক এবং পাশের গ্রামের কৃষক বিহারী রায় ২০ শতক জমিতে কিনোয়া আবাদ করেছেন।

কৃষক শাহজাহান আলী বলেন, ‘এটা অনেক দামি ফসল। এর আগে কখনও এদিকে চাষ হয়নি। এক বিঘা জমিতে আবাদ শেষে লাখ টাকারও বেশি লাভ পাওয়া যাবে আশা করি।’

আরেক কৃষক বিহারী রায় বলেন, ‘কৃষি অফিসার উৎসাহ দিয়েছেন এই ফসল আবাদের জন্য। বীজ এনে দিয়েছেন। সেটি লাগিয়েছি। দামি ফসল এটি।’

বিঘাপ্রতি অন্তত পাঁচ মণ ফলন হতে পারে কিনোয়ার। ৭৫ থেকে ৮০ দিনের মধ্যে ঘরে ফসল তোলা যাবে। তিনি বলেন, এখন পর্যন্ত কোনো খরচ করতে হয়নি আবাদে।

কিশোরগঞ্জ উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা তুষার কান্তি রায় জানান, এই ফসল উদ্ভাবনের পর যে চার-পাঁচটি উপজেলায় আবাদ হচ্ছে, তার মধ্যে কিশোরগঞ্জ একটি।

বীজ এনে কৃষককে উদ্বুদ্ধ করে এখানে আবাদ শুরু করা হয়েছে দুই কৃষককে দিয়ে।

তিনি বলেন, ‘এটি পুরোপুরি নতুন শস্য। চাহিদা রয়েছে অনেক। সুপারশপে ১ হাজার ২০০ টাকা পর্যন্ত কেজিতে বিক্রি হয়। আগামী দিনে এক একর জমিতে কিনোয়া আবাদের লক্ষ্য রয়েছে।’

শেরে বাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. পরিমল কান্তি বিশ্বাস জানান, ধনী-গরিব সবার জন্য এই ফসল উদ্ভাবন করা হয়েছে, যাতে পুষ্টি চাহিদা পূরণে সহায়ক হয়।

তিনি বলেন, এই ফসল উৎপাদনের পর বাজারজাত করা নিয়েও প্রস্তাব তৈরি করা হচ্ছে।

Bootstrap Image Preview