Bootstrap Image Preview
ঢাকা, ২০ শনিবার, এপ্রিল ২০২৪ | ৬ বৈশাখ ১৪৩১ | ঢাকা, ২৫ °সে

কি এই অলাতচক্র? সাতক্ষীরার যুবতী মেয়েরা কোথায় হারিয়ে যায় !

বিডিমর্নিং ডেস্ক
প্রকাশিত: ১৩ জানুয়ারী ২০২২, ০৯:৩৪ PM
আপডেট: ১৩ জানুয়ারী ২০২২, ১০:০১ PM

bdmorning Image Preview
ছবি সংগৃহীত


হরর মুভির একটা স্বতন্ত্র বৈশিষ্ট্য হলো, এর কাহিনী রচনা করা হয় একটা নির্দিষ্ট ধর্মের মিথোলজিকে কেন্দ্র করে। সেজন্য হলিউডে সেসব হরর ফ্লিকই বিভিন্ন সময় উঠে এসেছে, যা ইহুদি-খ্রিষ্টান ধর্মের সাথে সাদৃশ্যপূর্ণ। যেমন- খ্রিস্টান স্যাটানিজম, ভুডু, উইচক্র্যাফট, ব্ল্যাক ম্যাজিক ইত্যাদি ইত্যাদি। 

বলিউড সে স্রোতে গা ভাসাল 'পরী'র মধ্য দিয়ে। কারণ, এ সিনেমার গল্প গড়ে উঠেছে ইফরিত নামক একপ্রকার মন্দ জ্বিন ও তার অনুসারীদের কেন্দ্র করে। এই সিনেমা মুক্তির পর বলিউডের হরর ধারার সিনেমার যেমন নতুন ধারার সূচনা করেছিল এই সিনেমা মুক্তির পর বাংলাদেশের মানুষও চমকে উঠেছিল। কারণ সিনেমাটি নির্মিত হয়েছিল ১৯৯০ সালের বাংলাদেশের কেয়ামত আন্দোলনকে কেন্দ্র করে। যে বিষয়ে সে সময় অনেকেই জানতো না। 

তবে ১৯৯০ সালে কি ঘটেছিলো আর কেয়ামত আন্দোলনই বা কী? আজ আমরা জানবো গাঁ শিউরে উঠা সেই কেয়ামত আন্দোলনের খুঁটি নাটি। 

১৯৯০ সালে বাংলাদেশের সাতক্ষীরা অঞ্চল থেকে হওয়া এক খবর বাইরের বিশ্বে খুব হইচই ফেলে দিয়েছিলো।সাতক্ষীরা ও এর আশেপাশের অঞ্চল থেকে আচমকা নিখোঁজ হয়ে যেতে শুরু করে যুবতী নারীরা। 

কিছুতেই তাদের খোজ পাওয়া যায় না । "অলাতচক্র" নামে এক গ্রুপের এই ঘটনার পেছনে প্রত্যক্ষ হাত ছিলো বলেই জনশ্রুতি ঘটে । সবাই বলতে শুরু করে এই অলাতচক্রই মেয়েদের হঠাৎ করে হারিয়ে যাওয়ার পেছনে দায়ী ।

তবে কে বা কি এই অলাতচক্র?

স্যাটানিজমের নাম আমরা সবাই শুনেছি । সৃষ্টিকর্তা হিসেবে শয়তানকে বিশ্বাস করা ও তার পূজা করাই এক কথায় স্যাটানিজম । জনসম্মুখে ও প্রকাশ্যে এর চর্চা করা প্রায় সকল ধর্ম এবং সমাজেই নিষিদ্ধ। তাই, শয়তানের উপাসনা করতে হয় অত্যন্ত গোপনে, লোকচক্ষুর অন্তরালে।  তাই যুগে যুগে বিভিন্ন গ্রুপ গোপ্নে এই স্যাটানিজমের চর্চা করে এসছে । "অলাতচক্র" তেমনি একটি গ্রুপ ।

কিন্তু অলাতচক্র মেয়েদের কেন অপহরণ করা শুরু করলো?

অনুসন্ধান চালিয়ে জানা যায়, ইফরিত নামক এক ভয়ংকর ও শক্তিশালী জ্বিনের অনুসারীরা হল  "অলাতচক্র"। আর তারাই সেই যুবতী মেয়েদের অপহরণ করে নিয়ে গেছে।কারন ইফরিতের অনন্য, অন্যতম, ও অবাক করা বৈশিষ্ট্য হলো, মানুষের সাথে যৌন মিলনের এদের পূর্ণ সক্ষমতা রয়েছে। 

ইফরিতের অনুসারীরা ভূত-শাস্ত্রীয় আচার-পালনের মাধ্যমে, যুবতী নারীদের সাথে ইফরিতের মিলনের ব্যবস্থা করে দেয়। উদ্দেশ্য, মানব সমাজে ইফরিতের বংশধর ও অনুসারী বিস্তার করা।

সাধারণ মানুষ ন'মাসের মাথায় জন্মগ্রহণ করলেও ইফরিতের সন্তান জন্ম নিতে সময় নেয় একমাস। যুবতীর গর্ভে ২৯ দিনেই বেড়ে উঠে ইফরিতের ঔরসজাত ওই সন্তান। সে জন্ম নেয় কোনোপ্রকার ন্যাভাল কর্ড বা নাভিরজ্জু ছাড়াই। অর্থাৎ, নাভি মায়ের অমরার সাথে যুক্ত না থাকায় সে মায়ের থেকে কোনো পুষ্টি গ্রহণ করেনি। শুধু মায়ের পেটকে একমাসের জন্য একটা থলে হিসেবে ব্যবহার করেছে। কিন্তু সন্তানটাকে হৃষ্টপুষ্ট করে বড় করেছে তুলেছে, স্বয়ং ইফরিত জ্বিন।

বাচ্চা জন্মানোর পর ওই যুবতীকে মেরে ফেলা হয়। আর বাচ্চাকে বড় করা হয় দুনিয়াতে মানবকূলে ইফরিতের বংশবিস্তারের উদ্দেশ্যে। তাদের সাথে যোগাযোগ করতে পারে শুধুমাত্র কালাপরী নামক এক প্রকার অশুভ ডাইনি। ইফরিতের রক্ত প্রচণ্ড বিষাক্ত হওয়ায়, তাদের সন্তানের রক্তেও সে বিষ বাহিত হয়। প্রাণঘাতী সে বিষ যদি ইফরিত সন্তান ২৮ দিনের মধ্যে নিজের শরীর থেকে খালাস না করতে পারে, তবে বিষের প্রভাবে সন্তান নিজেই মৃত্যুবরণ করবে। এই ইফরিতকে দেখার সাধ্য সাধারণ মানুষের নেই। শুধু এর শব্দ এবং নিঃশ্বাস আঁচ করা যায়।

একসময় ফাঁস হয়ে যায় অলাতচক্রের সেই গোপনীয় ও বর্বরোচিত আখ্যানের কথা। সেসময় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন প্রফেসর ড. কাসিম আলী, ইফরিতের অনুসারী ও বংশধরদের নির্মূল করার উদ্দেশ্যে 'কেয়ামত আন্দোলন' নামে এক আন্দোলনের নেতৃত্ব দেন। জনসমর্থনকে পুঁজি করে প্রথমদিকে এই আন্দোলন নিজ গতিতে অগ্রসর হতে থাকলেও, প্রফেসরের অধিকাংশ কর্মকাণ্ডই ছিল ভয়ানক ও চরমপন্থী। তাই সরকারের পক্ষ থেকে এ আন্দোলনের উপর আসে নিষেধাজ্ঞা, নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয় এর সকল কার্যক্রম। কিন্তু হাল ছাড়েননি প্রফেসর, গোপনে চালিয়ে যেতে থাকেন ইফরিত জ্বিনের বংশধর দমনের কাজ। এ কাহিনীর উপর ভিত্তি করে কাসিম আলী 'দ্য ইভিল চাইল্ড' নামে একটি বই লিখেছেন। 

যদিও ইফরিতের কাহিনী তুলে ধরতে গল্পলেখক পুরোপুরি ইসলামিক মিথোলজির আশ্রয় নেননি, খানিকটা নিজ মনের মাধুরীও মিশিয়েছেন। কারণ, সাতক্ষীরার এ কাহিনী, অলাতচক্র, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রফেসর কাসিম আলী, সবই লেখকের কল্পনাপ্রসূত। এর বাস্তবিক কোনো ভিত্তি নেই।

একসময় ফাঁস হয়ে যায় অলাতচক্রের সেই গোপনীয় ও বর্বরোচিত আখ্যানের কথা। সেসময় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন প্রফেসর ড. কাসিম আলী, ইফরিতের অনুসারী ও বংশধরদের নির্মূল করার উদ্দেশ্যে 'কেয়ামত আন্দোলন' নামে এক আন্দোলনের নেতৃত্ব দেন। জনসমর্থনকে পুঁজি করে প্রথমদিকে এই আন্দোলন নিজ গতিতে অগ্রসর হতে থাকলেও, প্রফেসরের অধিকাংশ কর্মকাণ্ডই ছিল ভয়ানক ও চরমপন্থী। তাই সরকারের পক্ষ থেকে এ আন্দোলনের উপর আসে নিষেধাজ্ঞা, নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয় এর সকল কার্যক্রম। কিন্তু হাল ছাড়েননি প্রফেসর, গোপনে চালিয়ে যেতে থাকেন ইফরিত জ্বিনের বংশধর দমনের কাজ। এ কাহিনীর উপর ভিত্তি করে কাসিম আলী 'দ্য ইভিল চাইল্ড' নামে একটি বই লিখেছেন। 

যদিও ইফরিতের কাহিনী তুলে ধরতে গল্পলেখক পুরোপুরি ইসলামিক মিথোলজির আশ্রয় নেননি, খানিকটা নিজ মনের মাধুরীও মিশিয়েছেন। কারণ, সাতক্ষীরার এ কাহিনী, অলাতচক্র, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রফেসর কাসিম আলী, সবই লেখকের কল্পনাপ্রসূত। এর বাস্তবিক কোনো ভিত্তি নেই।

 

 

Bootstrap Image Preview