Bootstrap Image Preview
ঢাকা, ২৩ মঙ্গলবার, এপ্রিল ২০২৪ | ১০ বৈশাখ ১৪৩১ | ঢাকা, ২৫ °সে

অবরোধের পর কক্সবাজারে এবার নাগরিক সেবা বন্ধ

বিডিমর্নিং ডেস্ক
প্রকাশিত: ০১ নভেম্বর ২০২১, ০৩:৫৭ PM
আপডেট: ০১ নভেম্বর ২০২১, ০৩:৫৮ PM

bdmorning Image Preview
ছবি সংগৃহীত


কক্সবাজার জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সহ-সভাপতি মুনাফ সিকদারকে গুলি করে হত্যাচেষ্টার ঘটনায় কক্সবাজার পৌর মেয়র ও জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মুজিবুর রহমানকে আসামি করার প্রতিবাদে গতকাল কক্সবাজার শহর অবরুদ্ধ করার পর এবার এবার  কাউন্সিলর ও পৌর কর্মীরা। এতে চরম ভোগান্তিতে পড়েছেন সেবা নিতে আসা সমুদ্রের পাড়ের এই শহরটির বাসিন্দারা।

বুধবার রাতে কক্সবাজার জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সহ-সভাপতি মোনাফ শিকদারকে সুগন্ধ পয়েন্ট এলাকায় গুলি করা হয়। তিনি বর্তমানে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। এ ঘটনায় গতকাল রোববার একটি মামলা করেন মোনাফের ভাই শাহজাহান শিকদার। গুলির ঘটনায় নির্দেশদাতা হিসেবে আসামি করা হয় পৌর মেয়র ও জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মুজিবুর রহমানকে। এরপর মেয়রের নামে করা মামলা প্রত্যাহারের দাবিতে চার ঘণ্টা অচল করে রাখা হয় পর্যটন শহর কক্সবাজার। সন্ধ্যার পর পৌরসভার গাড়ি ব্যবহার করে রাস্তায় ব্যারিকেড দেয় পৌর পরিষদ। রাত ১০ টা পর্যন্ত পৌরসভার কাউন্সিলর, সুইপার, ঝাড়ুদারসহ সকল কর্মকর্তা কর্মচারী সড়কে অবস্থান নিয়ে রাস্তা অবরোধ করে রাখে। পরে নাগরিক সেবা বন্ধের ঘোষণা দিয়ে তারা রাস্তা থেকে সরে যায়।

সোমবার (১ নভেম্বর) ভোরে কক্সবাজার পৌরসভা থেকে পাঠানো একটি সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, মেয়র মুজিবুরের বিরুদ্ধে দায়েরকৃত মামলাটি প্রত্যাহার না করা পর্যন্ত কক্সবাজার পৌরসভা কোনো ধরনের নাগরিক সেবা দেবে না। এক জরুরি সভায় পৌর পরিষদ এমন সিদ্ধান্ত নিয়েছে।

কক্সবাজার পৌরসভার প্যানেল মেয়র-১ ও জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মাহবুবুর রহমান চৌধুরীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, মেয়র মুজিবুর রহমানের বিরুদ্ধে 'ষড়যন্ত্রমূলক' মামলাটি প্রত্যাহার না হওয়া পর্যন্ত পরিস্কার পরিচ্ছন্নতা, চলমান সড়ক উন্নয়ন কাজ এবং জাতীয়তা-জন্ম মৃত্যু সনদসহ পৌরসভার সব ধরনের নাগরিক সুযোগ সুবিধা বন্ধ করে দেয়ার ঘোষণা দেন কাউন্সিলররা।

ঘোষণা অনুযায়ী, সবাই পৌরসভায় এলেও কোনো ধরণের সেবা দেওয়া থেকে বিরত রয়েছে কাউন্সিলর, কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা।

সোমবার সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত কয়েকদফা কক্সবাজার পৌরসভায় গিয়ে দেখা যায়, প্রধান ফটক বন্ধ রয়েছে। ভেতরে সেবা প্রার্থীদের প্রবেশ করতে দেয়া হচ্ছে না। 

সেবা নিতে আসা আরাফা বেগম  বলেন, "তিনমাস আগে মেয়ের জন্ম নিবন্ধনের ভুল সংশোধন করতে দিয়েছি। আজ না কাল বলে বলে এ পর্যন্ত দেয়নি। বলছে, সোমবার অবশ্যই দেবে। কিন্তু আজ তো ভেতরেই ঢুকতে দিচ্ছে না। অথচ স্কুলে এই সনদটি জমা দেওয়ার শেষ দিন মঙ্গলবার।"

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন সেবাগ্রহীতা বলেন, "মামলা করেছে যুবলীগ নেতার ভাই। মামলা হয়েছে ব্যক্তি মুজিবুর রহমানের বিরুদ্ধে। এখানে কোন যুক্তিতে পৌর পরিষদের সেবা বন্ধ করেছে সেটাই বুঝছি না। আমরা জনপ্রতিনিধি নির্বাচিত করেছি সেবার জন্য। এখন দেখছি ভোগান্তি তৈরি করা পৌর পরিষদের কাজ।"

পৌর পরিষদের সেবা বন্ধের বিষয়ে কক্সবাজার পৌরসভার প্যানেল মেয়র-২ ও শহর আওয়ামী লীগ নেতা হেলাল উদ্দিন কবির বলেন, "মেয়র মুজিব জনপ্রিয় নেতা। তার জনপ্রিয়তায় ইর্ষান্বিত হয়ে একটি মহল মিথ্যা মামলাটি দায়ের করেছে। মিথ্যা মামলাটি প্রত্যাহার করা হলে মেয়র মুজিবুরের নির্দেশ পেলেই সেবা কার্যক্রম পুনরায় চালু করা হবে।"

স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের কক্সবাজারের উপসচিব (ডিডিএলজি ) শ্রাবস্তী রায় বলেন, "নাগরিক সেবা যে বন্ধ আমি জানতাম না। এটি কোনোভাবেই করতে পারে না পৌরসভা।"

সেবা বন্ধের বিষয়ে জানতে মোবাইলে একাধিকবার ফোন দেওয়া হলেও ধরেননি মেয়র মুজিবুর রহমান।

কক্সবাজার পৌরসভার প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা তারিকুল ইসলাম ফোন ধরলেও নাগরিক সেবা বন্ধের বিষয়টি নিয়ে কথা বলতে চাইলে 'ব্যস্ততা' দেখিয়ে পরে কথা বলবেন বলে সংযোগ কেটে দেন।

Bootstrap Image Preview