নিজেদের গোটা ফুটবলীয় ক্যারিয়ারে একে অপরকে টপকে যাওয়ার কাজ করেছেন। সার্জিও রামোস চেষ্টা করেছেন যেকোনো মূল্যেই লিওনেল মেসিকে আটকে রাখার আর মেসি চেয়েছেন রামোসকে পেছনে ফেলে গোলের দিকে বল নিয়ে এগিয়ে যাওয়ার। কখনো মেসি সফল তো কখনো রামোস। তবে বদল গেছে সে চিত্র। এখন আর বল নিয়ে এগিয়ে যাওয়ার সময় মেসিকে ট্যাকেল করবেন না রামোস। কেননা দুইজনই রিয়াল মাদ্রিদ ও বার্সেলোনার পাঠ চুকিয়ে পাড়ি জমিয়েছেন প্যারিস সেইন্ট জার্মেইতে।
আপাতত পরিবার নিয়ে প্যারিসের বিলাসবহুল হোটেল লে রয়্যাল মনচিআওতে রয়েছেন মেসি, যেখানে রাত প্রতি ব্যয় হচ্ছে প্রায় ২০ লাখ টাকা। যত দিন পিএসজি তার জন্য বাড়ি না খুঁজে দিতে পারছে, তত দিন এখানেই থাকবেন মেসি। হোটেলটা যথেষ্ট বিলাসবহুল, তবে দিন শেষে সেটা তো হোটেলই। নিজের মতো করে থাকার ব্যাপারে সেখানে মন সায় না দেওয়াই স্বাভাবিক। রামোস বোঝেন সেটা। বোঝেন বলেই মেসিকে প্রস্তাব দিয়েছেন নিজের বাড়িতে থাকার জন্য।
দুজনেই দীর্ঘদিন স্পেনের লা লিগায় চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী দুই ক্লাবে খেলেছেন। সার্জিও রামোস ও লিওনেল মেসি তাই একে অপরকে চেনেন প্রতিপক্ষ হিসেবেই। কিন্তু দুজনই এ বছরে স্পেন ছেড়ে ফ্রান্সের ক্লাব পিএসজিতে পাড়ি জমানোয় এক সময়কার প্রবল প্রতিপক্ষ দুই খেলোয়াড় এখন সতীর্থ। পুরোনো বৈরিতা ভুলে তাই মেসিকে নিজের বাড়িতে থাকার আমন্ত্রণ জানালেন রামোস।
স্প্যানিশ সংবাদমাধ্যম এল পাইসের এক প্রতিবেদন থেকে এ কথা জানা যায়।
বার্সেলোনা থেকে পিএসজিতে লিওনেল মেসির দলবদলটা হয়েছে আচমকাই। হুট করেই তাই ফ্রান্সের রাজধানী প্যারিসে বসবাসের জন্য কোনো বাড়ি খুঁজে পাওয়া সম্ভব হয়নি মেসির পক্ষে। তাই আর্জেন্টাইন ফরোয়ার্ডের উদ্দেশে রামোস বলেন, "তুমি যদি হোটেলে না থেকে কোনো বাসায় থাকতে চাও, চাইলে আমার বাসায় থাকতে পার।"
তবে ৩৫ বছর বয়সী স্প্যানিশ ডিফেন্ডারের আমন্ত্রণের জবাবে এখন পর্যন্ত কোনো মন্তব্য করেননি মেসি। আপাতত পরিবারকে নিয়ে প্যারিসের বিলাসবহুল হোটেল লে রয়্যাল মনচিআওতে রয়েছেন মেসি। ফরাসি ক্লাবটি বাড়ি খুঁজে দেওয়ার আগ পর্যন্ত এখানেই থাকবেন সাবেক বার্সেলোনা অধিনায়ক।
১৯২৮ সালে প্যারিসের কেন্দ্রবিন্দুতে অবস্থিত হোটেলটি চালু করা হয়। পাঁচ তারকা এই হোটেলটি কাতারভিত্তিক প্রতিষ্ঠান কাতারা হসপিটালিটির মালিকানাধীন। পিএসজির স্টেডিয়াম পার্ক দে প্রিন্সেস থেকে হোটেলটি রয়েছে মাত্র ১৫ মিনিটের দূরত্বেই। হোটেলটির সর্বনিম্ন রুম ভাড়া ৭০০ পাউন্ড হলেও প্রতি রাতে এই হোটেলের ভাড়া বাবদ মেসিকে গুণতে হচ্ছে ১৭ হাজার পাউন্ড। বাংলাদেশি মুদ্রায় অঙ্কটা প্রায় ২০ লাখ টাকা।
হোটেলটিতে রয়েছে ২৩ মিটার দৈর্ঘ্যের সুইমিং পুল, যা প্যারিসে থাকা হোটেলগুলোর মধ্যে সবচেয়ে বড়। এছাড়া, সিনেমা দেখার ব্যক্তিগত জায়গা ছাড়াও ৬টি বিলাসবহুল রেস্তোরাঁ রয়েছে এ হোটেলে।
মেসির ঘনিষ্ঠ বন্ধু ও বর্তমান ক্লাব সতীর্থ নেইমারও এক সময়ে এই হোটেলে ছিলেন। ২০১৭ সালে মেসির মতোই বার্সেলোনা ছেড়ে পিএসজিতে যোগদানের পর কিছুদিন এই বিলাসবহুল হোটেলে ছিলেন ব্রাজিলিয়ান উইঙ্গার।
শুধু নেইমারই নন, ব্রিটেনের সাবেক প্রধানমন্ত্রী উইনস্টন চার্চিল, হলিউডের সিনেমা প্রযোজক ওয়াল্ট ডিজনি ও অভিনেতা রবার্ট ডি নিরোর মত বিখ্যাত ব্যক্তিরাও রয়্যাল মনচিআও হোটেলে থেকেছেন।
উল্লেখ্য, ২০২৩ সাল পর্যন্ত পিএসজির সঙ্গে দুই বছর মেয়াদি চুক্তি করেছেন মেসি। চাইলে চুক্তির মেয়াদ আরও এক বছর বাড়ানোরও সুযোগ রয়েছে। বেতন-ভাতা মিলিয়ে ৩৪ বছর বয়সী মেসি ক্লাব থেকে পারিশ্রমিক পাবেন ৩ কোটি ৫০ লাখ ইউরো।