কুকুরের দুধ পান করে বড় হচ্ছে একটি বিড়াল। অন্যরকম ভালোবাসার এ দৃশ্য দেখা গেছে টাঙ্গাইলের সখীপুর উপজেলার কাকড়াজান ইউনিয়নের দূর্গাপুর গ্রামের পল্লিচিকিৎসক আশিষ বর্মণের বাড়িতে।
স্থানীয়রা বিষয়টিকে অলৌকিক মনে করলেও প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা বলছেন, এক প্রাণীর সঙ্গে আরেক প্রাণীর মধ্যে ভালোবাসা থেকেই এমন ঘটনা ঘটে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, দূর্গাপুর গ্রামের আশিষ চন্দ্র বর্মণের বাড়িতে কুকুর ও একটি বিড়াল ছোট থেকে বড় হয়েছে। বিড়ালটি সব সময় কুকুরের আশপাশে ঘোরাঘুরি করত। সম্প্রতি বিড়ালটি সকাল-বিকেল কুকুরের দুধ পান করা শুরু করে। তবে কুকুরটি আগে কোনো বাচ্চা প্রসব করেনি। বিড়াল কুকুরের দুধ পান করছে বিষয়টি দেখতে এলাকার লোকজন ভিড় করছে।
আশিষের কাকিমা লক্ষ্মী রানী বর্মণ বলেন, মাস তিনেক আগে মা বিড়াল দুটি ছানা প্রসব করে। এর সপ্তাহখানেক পর মা বিড়ালটি মারা যায় এবং আরেকটি বিড়ালকে আর পাওয়া যায়নি। এরপর থেকেই বিড়ালটিকে কুকুরের আশপাশে থাকতে দেখা গেছে। সম্প্রতি কুকুরের দুধ পানের দৃশ্যটি আমরা দেখতে পাই। দুধ পানের ঘটনা জানাজানি হলে অনেকেই বিড়াল ও কুকুরটি দেখতে আসে।
আশিষ চন্দ্র বর্মণ বলেন, কুকুরটির বয়স এক-দেড় বছর হবে। আমাদের বাড়িতেই থেকে খাবার খেয়ে বড় হয়েছে। তবে কুকুরটির আগে কোনো বাচ্চা হয়নি। কয়েকদিন আগে সকালে বাড়ির লোকজন দেখতে পায়, কুকুরটির দুধ পান করছে বিড়াল। পরে সেই দুগ্ধ পানের দৃশ্য মোবাইলে ধারণ করি। এরপর প্রতিদিনই এমন দৃশ্য দেখা যাচ্ছে। বিড়ালটিকে আপন করে নিয়েছে কুকুর। সন্তানের মতো আদর করে বিড়ালকে দুধ দিচ্ছে। ৫-৭ মিনিট ধরে কুকুর বিড়ালকে দুধ পান করায়।
কাকরাজান ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য দেলোয়ার হোসেন জানান, দুধ পানের ঘটনাটি বিরল। এটা আগে কখনো দেখিনি। শোনার পর ওই বাড়িতে গিয়ে বিষয়টি দেখেছি। সত্যিই বিড়ালটি কুকুরের দুধ পান করেছে।
প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. আব্দুল জলিল বলেন, এটি খুবই স্বাভাবিক বিষয়। একটি প্রাণীর সঙ্গে অপর একটি প্রাণীর ভালোবাসায় এমনটি হতেই পারে। তবে দেশে কুকুরের দুধ বিড়াল খাওয়া নিয়ে কোনো গবেষণা হয়নি। যে কারণে বলা যাচ্ছে না, এতে কোনো ক্ষতিকর প্রভাব আছে কি না। তবে বিড়ালটা যেহেতু কয়েকদিন ধরে কুকুরের দুধ পান করছে এবং তাতে বিড়ালের তেমন পরিবর্তন হয়নি, এতে বোঝা বিড়ালের কোনো ক্ষতি হবে না।