Bootstrap Image Preview
ঢাকা, ২৪ বুধবার, এপ্রিল ২০২৪ | ১১ বৈশাখ ১৪৩১ | ঢাকা, ২৫ °সে

দক্ষিণ আফ্রিকায় বিক্ষোভ-সহিংসতা: মৃতের সংখ্যা বেড়ে ৭২

বিডিমর্নিং ডেস্ক
প্রকাশিত: ১৪ জুলাই ২০২১, ০১:০১ PM
আপডেট: ১৪ জুলাই ২০২১, ০১:০১ PM

bdmorning Image Preview
ছবি সংগৃহীত


দক্ষিণ আফ্রিকায় চলমান বিক্ষোভ, সহিংসতা ও লুটপাটের ঘটনায় নিহতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৭২ জনে। এদের মধ্যে ১০ জন পদদলিত হয়ে মারা যায়।দুর্নীতি ও আদালত অবমানার অভিযোগে দেশটির সাবেক প্রেসিডেন্ট জ্যাকব জুমাকে কারাগারে পাঠানোর প্রতিবাদে শুরু হওয়া বিক্ষোভ এখন কার্যত সহিংসতা ও দাঙ্গায় রূপ নিয়েছে। এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত ১২০০-র বেশি মানুষকে আটক করেছে দেশটির পুলিশ।

সোমবার (১২ জুলাই) রাতে সোয়েতোর একটি শপিং সেন্টারে লুটপাটের সময় এ ঘটনা ঘটে। সোমবার বিকেল পর্যন্ত দুই শতাধিক শপিংমলে লুটপাট চালানো হয়েছে বলে জানিয়েছে সংবাদসংস্থা ব্লুমবার্গ।

গত সপ্তাহে বিক্ষোভ শুরু হওয়ার পর পুলিশকে সহায়তা করতে বর্তমানে সেখানে সেনা মোতায়েন করা হয়েছে।

এক বিবৃতিতে দক্ষিণ আফ্রিকার পুলিশ জানিয়েছে যে, তারা ১২ সন্দেহভাজনকে শনাক্ত করেছেন যারা দাঙ্গায় উস্কানি দিয়েছে। এছাড়া সব মিলিয়ে ১ হাজার ২৩৪ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

দক্ষিণ আফ্রিকার প্রেসিডেন্ট সিরিল রামাফোসা বলেছেন, দক্ষিণ আফ্রিকায় বর্ণবাদ শেষ হওয়ার আগে ১৯৯০ এর দশকের পর তিনি এধরণের জঘন্য সহিংসতা দেখেননি। এতে আগুন দেওয়া হয়েছে, মহাসড়ক বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে, বড় বড় শহরের পাশাপাশি ক্বয়াজুলু-নাটাল এবং গাওটেং মতো ছোট ছোট প্রদেশের ব্যবসায় প্রতিষ্ঠান এবং গুদামে লুটপাট চালানো হয়েছে।

মঙ্গলবার বিকেলে প্রধান বাণিজ্যিক শহর ডারবানের একটি আবাসিক ব্লকের লুটপাট ও অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটে। এ সময় একটি শিশুতে প্রাণে বাঁচাতে তার মা জানালা দিয়ে বাইরে ছুঁড়ে দেয়। পরে শিশুটিকে ধরে ফেলে সাহায্যের জন্য এগিয়ে আসা পথচারীরা। ওই ভবনটির নিচতলার দোকানগুলোতে যারা চুরি করেছিল তারাই আগুনের সূত্রপাত ঘটায় এবং পরে তা ছড়িয়ে পরে। এতে আটকা পড়েন ভবনের উপরের তলার বাসিন্দারা। এ ঘটনার প্রায় ২০ মিনিট পরে ঘটনাস্থলে উদ্ধারকর্মীরা গিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে।

বিবিসি জানায়, দক্ষিণ আফ্রিকার সবচেয়ে বড় শহরাঞ্চল সোয়েতোতে বেশ কিছু শপিংমল পুরোপুরি লুট করা হয়েছে। এই শহরটিতেই নেলসন ম্যান্ডেলার বাড়ি ছিল। শহরটির এটিএমগুলো ভেঙ্গে ফেলা হয়েছে, রেস্তোরাঁ, অ্যালকোহল ও কাপড়ের দোকান সবকিছু ভেঙ্গে-চুরে ফেলা হয়েছে।

বিবিসির প্রকাশিত একটি ভিডিওতে দেখা গেছে, বিক্ষোভ ও সহিংসতার মাঝে দোকানগুলোতে লুটপাট ও অগ্নিকাণ্ডের সময় ডারবানের একটি ভবন থেকে একটি শিশুকে নিচে ছুঁড়ে ফেলা হয়েছে। এছাড়া গত সপ্তাহে শুরু হওয়া এ সহিংসতা নিয়ন্ত্রণে এখন পুলিশকে সহায়তা করার জন্য সেনা সদস্যদেরও মোতায়েন করা হয়েছে।

এদিকে এক বিবৃতিতে দক্ষিণ আফ্রিকার পুলিশ জানিয়েছে, সহিংসতা ও দাঙ্গায় উস্কানিদাতা ১২ জনকে তারা চিহ্নিত করেছে। এছাড়া এখন পর্যন্ত মোট ১ হাজার ২৩৪ জনকে আটক করা হয়েছে।

পুলিশের সাথে মিলে সেনারা কিছু দাঙ্গাকারীকে গ্রেপ্তার করেছে। সব মিলিয়ে ৮০০ মানুষকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। কিন্তু আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদের সংখ্যা দাঙ্গাকারীদের তুলনায় এখনো নগণ্য বলে উল্লেখ করেন তিনি।

দক্ষিণ আফ্রিকার টাইমসলাইভ নিউজ সাইটের প্রতিবেদনে বলা হয়, ক্বয়াজুলু-নাটাল শহরে গবাদিপশুও চুরি করা হয়েছে। কিছু কিছু এলাকায় অ্যাম্বুলেন্সগুলোর উপরও হামলা চালিয়েছে দাঙ্গাকারীরা।

জ্যাকব জুমা ২০০৯ থেকে ২০১৮ সাল পর্যন্ত দক্ষিণ আফ্রিকার প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্বপালন করেন। ক্ষমতায় থাকাকালীন ঘুষসহ দুর্নীতির অভিযোগে জর্জরিত ছিলেন তিনি ও তার সরকার।  দায়িত্ব ছেড়ে দেওয়ার পর তার বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ ওঠে।

অবশ্য ৭৯ বছর বয়সী সাবেক এই প্রেসিডেন্ট বরাবরই এই অভিযোগ অস্বীকার করে গেছেন। এ সম্পর্কে তার বক্তব্য ছিল- দেশের বিরোধীপক্ষ তার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রের অংশ হিসেবে এসব মিথ্যা অভিযোগ তুলেছে।

Bootstrap Image Preview