সাধারণত তিল বা আঁচিল শরীরের তেমন কোনো ক্ষতি করে না। তাই অযথা এ নিয়ে দুশ্চিন্তা না করাই ভালো। স্বাভাবিক নিয়মে তিল বা আঁচিল সাধারণত মিলিয়ে যায় না। শরীরের বিভিন্ন জায়গায় ছোট তিলগুলো আমাদের আরও আকর্ষণীয় করে তোলে। কিন্তু এই তিল যদি অনেক বেশি হয় বা খুব বড় হলে তা মোটেই সুন্দর থাকে না। আর আঁচিল হলে তো সবাই বিরক্ত।
তবে শরীরের ত্বকের কিছু তিলের পরিবর্তন বা স্ফীতি দেখা দিলে, তার সঙ্গে খাবারে অরুচি, হঠাৎ ওজন হ্রাস, মলত্যাগের অভ্যাসের আকস্মিক পরিবর্তন থাকলে অবহেলা করা ঠিক হবে না। কোনো কোনো সময়ে পরিবর্তিত তিল ক্যানসারের আভাস দিতে পারে।
এই তিল বা আঁচিল এবার কয়েক সপ্তাহের মধ্যে দূর হবে। তাও আবার কয়েকটি ঘরোয়া উপায়েই। কীভাবে, জেনে নিই আসুন:
- এক টুকরো আলু নিন। পাঁচমিনিট ধরে তিল বা আঁচিলের অংশে বারবার ঘষতে থাকুন। দিনে দু’বার করলেই ধীরে ধীরে এই তিল বা আঁচিল মিলিয়ে যাবে।
- রাতে তিল ও আঁচিলের ওপর নারকেল তেল লাগিয়ে রাখুন খুব সহজেই তিল ও আঁচিলের থেকে মুক্তি মিলবে।
- তিল ও আঁচিলের জায়গাটিতে অ্যালোভেরা জেল লাগান। সুতির কাপড় দিয়ে জায়গাটি ঢেকে রাখুন। দিনে দু’বার করলেই মাত্র ক’দিনেই উপকার পাবেন।
- কলার খোসার মধ্যে রয়েছে ভেষজ অ্যানজাইম। তিল ও আঁচিলের সমস্যা থেকে মুক্তি পেতে কলার খোসার ভেতরের দিকটি আঁচিলের অংশে চেপে রাখুন সারা রাত।
অতিরিক্ত তিল কি ক্যানসারের লক্ষণ
- গবেষকদের মতে, শরীরে তিল বা আঁচিলের সংখ্যা থেকে ত্বকের ক্যানসারের বিষয়ে ধারণা করা যায়। কিংস কলেজ লন্ডনের গবেষকেরা প্রায় আট বছর ধরে নারীদের ত্বকের ধরন, তিল ও আঁচিলের সংখ্যা সম্পর্কে বিভিন্ন তথ্য জোগাড় করেন।
- তাঁরা বলছেন, যাদের ডান হাতে ১১টির বেশি তিল বা আঁচিল রয়েছে এবং সারা শরীরে ১০০টির বেশি তিল বা আঁচিল রয়েছে, তাদের মেলানোমার ঝুঁকি বেশি।
- খুবই বিরল হলেও কিছু তিল থেকে ত্বকের ক্যানসার মেলানোমা হতে পারে। যদি নিচের পরিবর্তনগুলো লক্ষ করে থাকেন, তবে তা চিকিৎসককে জানানো উচিত।
- তিলের রং হঠাৎ পরিবর্তন হওয়া, হঠাৎ আকারে অনেক বেড়ে যাওয়া বা ছোট হয়ে যাওয়া, তিলের আকৃতি মসৃণ হওয়া ইত্যাদি পরিবর্তন, তিলের উপরিভাগ যদি শুষ্ক আর মাছের আঁশের মতো খসখসে মনে হয়, চুলকানি দেখা দেয় বা রক্তপাত হয়।
- অনেকের মুখে ও শরীরের বিভিন্ন স্থানে বাদামি, কালো ও লালচে রঙের তিল হয়ে থাকে। মুখে–গলায় অবাঞ্ছিত ও অজস্র তিলের জন্য মুখের সৌন্দর্য নষ্ট হয়। অনেকে এর সমাধানও খুঁজে থাকেন।
তিলের চিকিৎসা
তিল যেহেতু এমনিতে কোনো ক্ষতি করে না, সৌন্দর্যগত কারণেই এটা অপসারণ করা হয়। বহুল ব্যবহৃত একটি পদ্ধতি হচ্ছে ইলেকট্রো সার্জারি। এতে একটি যন্ত্রের মাধ্যমে তিলটি সরিয়ে ফেলা হয়। এ ক্ষেত্রে দাগও মিলিয়ে যায় খুব দ্রুত। এ ছাড়া লেজার রিসারফেসিং, ফ্র্যাকশনাল লেজারও ব্যবহার করা হয়। এসব চিকিৎসা অবশ্যই চর্মরোগ বিশেষজ্ঞের কাছ থেকে করানো উচিত। ভুল চিকিৎসা এবং ক্ষতিকর ব্লিচিং এজেন্ট ব্যবহারের কারণে ত্বকে মারাত্মক ক্ষতি হতে পারে।