Bootstrap Image Preview
ঢাকা, ২৯ শুক্রবার, মার্চ ২০২৪ | ১৫ চৈত্র ১৪৩০ | ঢাকা, ২৫ °সে

বিমান দুর্ঘটনার পর আমাজনের গহীন জঙ্গলে ৩৮ দিন যেভাবে ছিলেন সেনা

বিডিমর্নিং ডেস্ক
প্রকাশিত: ০৯ এপ্রিল ২০২১, ১২:৪৯ PM
আপডেট: ০৯ এপ্রিল ২০২১, ১২:৪৯ PM

bdmorning Image Preview
ছবিঃ সংগৃহীত


ব্রাজিলে আমাজন বনের ওপর দিয়ে সিঙ্গেল-প্রপেলার সেসনা ২১০ বিমান চালিয়ে যাচ্ছিলেন অ্যান্তোনিও সেনা। হঠাৎ করেই তার বিমানের ইঞ্জিন বন্ধ হয়ে যায়। এমন পরিস্থিতিতে জঙ্গলে ক্র্যাশ-ল্যান্ড করার জন্য জায়গা খুঁজে পেতে মাত্র কয়েক মিনিট সময় পান সেনা।

কোনও আঘাত ছাড়াই বিমান দুর্ঘটনায় বেঁচে যান সেনা। কিন্তু আটকা পড়েন বিশ্বের সবচেয়ে বড় রেইনফরেস্টে। সেখানেই একে একে ৩৮ দিন কাটিয়ে দেন তিনি। পেয়েছেন জীবনের সবচেয়ে বড় শিক্ষাও।

অ্যামাজনের ভেতর ‘ক্যালিফোর্নিয়া’ নামে পরিচিত একটি অবৈধ স্বর্ণের খনিতে পণ্য বহনের জন্য আলেনকুয়ের শহর থেকে উড্ডয়নের জন্য ৩৬ বছর বয়সী সেনাকে ভাড়া করা হয়। তার বিমানটি প্রায় ১ হাজার মিটার উচ্চতায় উড়ছিল। কিন্তু যখন ইঞ্জিন বন্ধ হয়ে যায় তখন তিনি বুঝতে পারেন যে তার হাতে খুব বেশি সময় নেই।

তিনি বিমানটিকে একটি উপত্যকার ওপর নিয়ে আসেন এবং যতটা সম্ভব ভালোভাবে অবতরণের চেষ্টা করেন। এরপর একটি ব্যাকপ্যাক, তিন বোতল পানি, চারটি সফট ড্রিঙ্কস, রুটি, কিছু দড়ি, একটি জরুরি কিট, একটি হ্যারিকেন এবং দুটি লাইটার নিয়ে যত দ্রুত বিমান থেকে বেরিয়ে যান তিনি।

এরপর কিছুক্ষণ পরই বিমানটি বিস্ফোরিত হয়। গত ২৮ জানুয়ারির ঘটনা এটি। ব্রাসিলিয়ায় নিজের বাসায় বসে এএফপিকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, প্রথম পাঁচদিন আমার খোঁজে দমকল কর্মীরা অভিযান চালাচ্ছে সেটার শব্দ আমার কানে আসে। কিন্তু জঙ্গল এতটাই ঘন ছিল যে উদ্ধারকারীরা আমাকে খুঁজে পায়নি।

এরপর আমি আর কোনও ইঞ্জিনের শব্দ পাইনি বলে জানান সেনা। তিনি বলেন, তারা হয়তো আমাকে মৃত ভেবে উদ্ধার অভিযান পরিত্যক্ত করে। আমি খুব ভেঙে পড়েছিলাম। ভেবেছিলাম আমি হয়তো এখান থেকে বের হতে পারবো না, আমি হয়তো মারা যাবো।

পরে মোবাইল ফোনের সাহায্যে জিপিএস দিয়ে তিনি কোথায় আছেন সেটা দেখে পূর্ব দিকে হাঁটার সিদ্ধান্ত নেন সেনা। ওই দিকে তিনি এর আগে দুটি এয়ার স্ট্রিপ দেখেছিলেন। এরপর সকালের সূর্য দেখে তিনি হাঁটা শুরু করতেন। এর আগে নেয়া জঙ্গলের বেঁচে থাকার ট্রেনিংও তার কাজে আসে।

সেনা বলেন, আমার কাছে পানি ছিল কিন্তু কোনও খাবার ছিল না। আমি চিতা, কুমির ও অ্যানাকোন্ডার হামলার শিকার হওয়ার ভয়ে ছিলাম। আমি সময়টা ফল খেয়ে ছিলাম। বানররা খাচ্ছিল দেখে ওই ফল খাই। ব্লু তিনামৌ পাখির তিনটি ডিমও চুরি করে খেয়েছিলাম বলে জানান সেনা।

সেনার ভাষায় তার মনে হচ্ছিল আমাজন একটি রেইনফরেস্ট না। বরং এখানে চার বা পাঁচটি বন রয়েছে। কিন্তু পরিবারকে দেখার ইচ্ছা তাকে বাঁচিয়ে রাখে। শেষ পর্যন্ত নিরাপদেই স্বজনদের কাছে ফেরেন সেনা। শেষ হয় এক রুদ্ধশ্বাস অভিযান।

Bootstrap Image Preview