আজকে ২১ জুন। পৃথিবীর সবচেয়ে লম্বা দিন। সত্যিই আজকে পৃথিবীর সবচাইতে বড় দিন। কর্কট আর মকর নামে দু দুটো ক্রান্তি রেখা চলে গেছে পৃথিবীর ঠিক উপর দিয়ে। আর ওদের মধ্যে দিন কতটা বড় হবে সেটা ঠিক করে দেয় কর্কটক্রান্তি রেখা। ওটাকে উত্তরের রেখাও বলা যায়। কালকের সকাল আর সন্ধের সূর্যটা সবচাইতে বেশি হেলে থাকবে ওই উত্তরেই। আর ঠিক দুপুরবেলা সূর্য থাকবে কর্কটক্রান্তি রেখার একেবারে মাঝ বরাবর। ওই সময় সূর্যের নিচে গিয়ে দাঁড়ালে কারও কোনো ছায়াই পড়বে না।
কি, বিশ্বাস হচ্ছে না? আরও অনেক দেশের মতো বাংলাদেশের উপর দিয়েও চলে গেছে এই কর্কটক্রান্তি রেখার কিছুটা। বিশ্বাস না হলে দুপুর ১২টায় বাসার বাইরে গিয়ে রোদের নিচে একটু দাঁড়িয়ো। দেখবে, তোমারও ছায়া পড়ছে না মাটিতে।
এই দিনটাকে অনেকগুলো নাম দিয়েছে পৃথিবীর মানুষেরা এই দিনের। কেউ একে বলে কর্কটক্রান্তি দিবস, কেউবা বলে অয়ন দিবস। ইংরেজিতে একে পালন করা হয় সামার সলিস্টিক ডে হিসেবে। এই অয়ন দিবসে সূর্য আকাশে থাকবে মোট ১৩ ঘণ্টা ৩৬ মিনিট ৮ সেকেন্ড।
তবে ছোট্ট একটা সমস্যা আছে এই দিনটিকে নিয়ে। বাংলাদেশের উপর দিয়ে কর্কটক্রান্তি রেখা গেছে বলে তুমি তো অনেক বেশি সময় আজ সূর্য মামাকে কাছে পাচ্ছ। কিন্তু তোমার মতো আরও অনেকে আছে, যাদের দেশের উপর দিয়ে চলে গেছে মকরক্রান্তি রেখা। ওরা থাকে পৃথিবীর দক্ষিণে। আর উত্তরের সবাইকে একটু বেশি আলো দেওয়ার জন্য ওদের কাছে একটু কম সময়ই থাকতে পারবে সূর্য।
তাই তুমি আজ অনেক লম্বা একটা দিন পেলেও পৃথিবীর আরেক প্রান্তে ঠিক তোমার মতো কাউকে কাটাতে হবে অনেক ছোট্ট একটা দিন আর বড় একটা রাত।
আর যাই হোক, এমন একটা দিন নিয়ে শিশু থেকে বুড়ো কারও কিন্তু কম আনন্দ হচ্ছে না। সবাই আজ চেষ্টায় আছে কী করে আরও মজা করে পুরো দিনটাকে পার করিয়ে দেওয়া যায়।
তাদের সবার কথা ভেবেই পৃথিবীর অন্যান্য দেশগুলোর মতো বাংলাদেশেও আয়োজন করা হয়েছে বেশ কিছু অনুষ্ঠানের। অনেকে ব্যক্তিগত উদ্যোগ নিলেও যাদের সেই সুযোগটুকু নেই, তাদের জন্য এগিয়ে এসেছে বিজ্ঞানবিষয়ক সংগঠন ‘অনুসন্ধিৎচক্র’। প্রতি বছরই এই চক্রটি চারপাশের প্রকৃতিতে ঘটে যাওয়া ব্যাপারগুলোকে নিয়ে কথা বলে, অনুসন্ধান করে, সাজায় নানারকমের অনুষ্ঠান। এবারেও তার ব্যতিক্রম হচ্ছে না।