Bootstrap Image Preview
ঢাকা, ১৯ শুক্রবার, এপ্রিল ২০২৪ | ৬ বৈশাখ ১৪৩১ | ঢাকা, ২৫ °সে

‘ওরা শুধু টাকা-পয়সা নিতেই আসে না, ওদের মূল লক্ষ্য নারীদের ধর্ষণ করা’

বিডিমর্নিং ডেস্ক
প্রকাশিত: ১৩ মে ২০১৯, ০২:১৫ PM
আপডেট: ১৩ মে ২০১৯, ০২:১৫ PM

bdmorning Image Preview


পটুয়াখালীর কুয়াকাটার মহিপুর এলাকায় স্ত্রী-মেয়ে ও মা-বোনদের ইজ্জত বাঁচাতে এবং চোর-ডাকাতের হাত থেকে রেহাই পেতে রাত জেগে পাহারা দিচ্ছেন পুরুষরা।

প্রায় রাতেই চুরি-ডাকাতি ও ধর্ষণের ঘটনায় আতঙ্কিত হয়ে পড়েছেন মহিপুর, আলীপুর, সেরাজপুর, গঙ্গামতি, মিশ্রীপাড়া, কাউয়ার চর, চর চাপলির নারী-পুরুষ ও শিশু-কিশোর। ভীতিগ্রস্ত এলাকাবাসী রাত জেগে পাহারা দিলেও পুলিশ বলছে এসব নিছকই গুজব, এর কোনও সত্যতা মিলছে না। ক্ষতিগ্রস্ত ও ভুক্তভোগীদের দাবি, অভিযোগ দিতে গেলেও তা আমলে নিচ্ছে না থানা পুলিশ। তাই স্ত্রী-মেয়ে ও মা-বোনদের ইজ্জত বাঁচাতে এবং চোর-ডাকাতের হাত থেকে রেহাই পেতে তারা বাধ্য হয়ে রাত জেগে এই পাহারার ব্যবস্থা করেছেন।

 এলাকাবাসী জানায়, গেলো এক মাসে অন্তত ৪৫টি চুরি-ডাকাতি ও ধর্ষণের ঘটনা ঘটেছে। কিন্তু লজ্জার ভয়ে কেউ মুখ খুলে কিছু বলছেন না কিংবা আইনের আশ্রয় নিচ্ছেন না। তবে ওই এলাকায় সর্বশেষ মর্মান্তিক ঘটনাটি ঘটেছে গত ১৪ আগস্ট। এ দিন সেরাজপুরে ইভা (১১)  নামের ৬ষ্ঠ শ্রেণির এক ছাত্রীকে হাত-পা বেধে ধর্ষণ শেষে শ্বাসরোধ করে হত্যা করে একদল দুর্বৃত্তরা। এ ঘটনার পর ওই এলাকার মানুষেরা আরও আতঙ্কিত হয়ে পরেন। স্থানীয়রা কোনও উপায় না পেয়ে নিজেদের স্ত্রী-কন্যা ও মা-বোনের ইজ্জত বাঁচাতে রাত জেগে পাহারার ব্যবস্থা করেন।

এলাকাবাসীর অভিযোগ, শিশু ইভা ধর্ষণ ও হত্যার ঘটনার মত আগেও অনেক ঘটনা ঘটেছে এই এলাকায়। মহিপুর, সেরাজপুর, গঙ্গামতি, আলীপুর, মিশ্রীপাড়া, কাউয়ার চর, চর চাপলিসহ অন্যান্য গ্রামে গত এক মাসে অন্তত ৪৫টি চুরি-ডাকাতি ও ধর্ষণের মত ঘটনা ঘটেছে। 

নাম প্রকাশ না করার শর্তে এলাকার কয়েকজন পুরুষ বলেন, প্রায় রাতেই চুরি-ডাকাতি ও ধর্ষণের ঘটনা ঘটছে। তাই আমাদের স্ত্রী-কন্যা ও মা-বোনদের ইজ্জত বাঁচাতে রাত জেগে পাহারা দিচ্ছি।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে এলাকার কয়েকজন নারী বলেন, ধর্ষণ আতঙ্কে রাতে আমরা ঘুমাতে পারছি না। ৪/৫ ঘরের মহিলারা একত্রিত হয়ে রাত কাটাচ্ছি। ওরা শুধু টাকা-পয়সা নিতেই আসে না। ওদের লক্ষ্যই হচ্ছে নারীদের ধর্ষণ করা। আমরা এর সুষ্ঠু বিচার চাই ও নিরাপত্তা চাই প্রশাসনের কাছে, যাতে আমরা ইজ্জত নিয়ে বাঁচতে পারি। 

এ ব্যাপারে মহিপুর থানার অফিসার ইনচার্জ(ওসি) মো. মিজানুর রহমান জানান, চোর-ডাকাতদের হানা দেয়ার ঘটনা সঠিক নয়, বিচ্ছিন্ন কিছু ঘটনার কথা শোনা গেলেও এর সত্যতা পাওয়া যাচ্ছে না। তারপরও ওই এলাকায় নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে এবং স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের নিয়ে পাহারার ব্যবস্থাও করা হয়েছে। 

অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (কলাপাড়া সার্কেল) মো. জালাল আহমেদ জানান, এসব অভিযোগ সঠিক নয়, একটি মহল এলাকার মানুষের মধ্যে গুজব ছড়িয়ে আতঙ্ক সৃষ্টির পাঁয়তারা করছিল। পুলিশ প্রশাসন তাৎক্ষণিকভাবে স্থানীয় হাট-বাজারসহ জনবসতি এলাকায় মানুষদের মধ্যে ঘটনাটি বুঝিয়ে বলার পর তারা এখন বুঝতে পেরেছেন। এলাকায় এখন কোনও আতঙ্ক নেই। আর যে শিশুটিকে হত্যা করা হয়েছে, ওই বিষয়ে তদন্ত করা হচ্ছে। আশা করি প্রকৃত হত্যাকারীকেও অচিরেই চিহ্নিত করা সম্ভব হবে।   গুজব হোক, আর সত্যিই হোক এ বিতর্কে না গিয়ে ওই এলাকার নারীরা যাতে নির্বিঘ্নে জীবন-যাপন করতে পারে এবং পুরুষরা যাতে নির্বিঘ্নে স্বাভাবিক কাজ-কর্ম করতে পারে এমনটাই প্রত্যাশা সকলের। 

Bootstrap Image Preview