বিদেশি সিনেমা আমদানি করার ক্ষেত্রে সহজ নীতিমালা ও দেশীয় সিনেমা নির্মাণ বাড়ানোর আহ্বান জানিয়েছে বাংলাদেশ চলচ্চিত্র প্রদর্শক সমিতি। সরকার বিষয়ে সরকার আনুষ্ঠানিকভাবে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত ও উদ্যোগ না নিলে আগামী ১২ এপ্রিল থেকে দেশের সব প্রেক্ষাগৃহ বন্ধের ঘোষণা দিয়েছে চলচ্চিত্র প্রদর্শকদের এ সমিতি।
বুধবার (১৩ মার্চ) সকালে ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে এক সংবাদ সম্মেলন করেন প্রদর্শক সমিতির নেতারা। সেখানে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন প্রদর্শক সমিতির উপদেষ্টা সুদিপ্ত কুমার দাস, মিয়া আলাউদ্দিন, সভাপতি ইফতেখার নওশাদসহ অনেকেই।
প্রদর্শক সমিতির পক্ষ থেকে দুই উপদেষ্টা সুদীপ্ত দাস ও মিয়া আলাউদ্দিন বলেন, দূরাবস্থা কাটাতে দায়িত্বশীলদের সঙ্গে একাধিকবার বৈঠক করা হয়েছে। কিন্তু তারা সুনির্দিষ্ট সিনেমা হলগুলোকে বাঁচানোর কিংবা দেশের ছবির উৎপাদন বাড়ানোর এবং উপমহাদেশের ছবি আমদানির বাঁধাগুলো অপসারণে কোনো কার্যকর পথ নির্দেশ দেয়নি বলে জানানো হয় সংবাদ সম্মেলনে।
এ বিষয়ে চলচ্চিত্র প্রদর্শক সমিতির সভাপতি ইফতেখার নওশাদ দুপুরে গণমাধ্যমকে বলেন, সিনেমা হল টিকিয়ে রাখার জন্য পর্যাপ্ত কনটেন্ট (সিনেমা) নেই। দীর্ঘদিন ধরে লোকসান গুনতে গুনতে হলের মালিকরা দিশেহারা হয়ে পড়েছেন। সেজন্য ১২ এপ্রিল থেকে অনির্দিষ্টকালের জন্য দেশের সব সিনেমা হল সমিতি বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
সংবাদ মাধ্যমে এক বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, সিনেমা হল ১২৩৫ থেমে ১৭৪-এ নেমে এসেছে। দেশের ছবি নির্মাণের সংখ্যা বছরে ৩৫-৪০-এ এসে ঠেকেছে। আমদানির ছবি এলে পরিচালক-শিল্পীদের রোজগার কমে যাবে এই অযুহাত দেয়া হচ্ছে। সিনেমা হলের সঙ্গে ৫০ হাজার শ্রমিক জড়িত বেকার হয়ে আছে। প্রতিনিয়ত বাড়ছে হল ভাড়া, বিদ্যুৎ বিল। নতুন বিনিয়োগ ও মেধা সম্পন্ন নির্মাতা আসছে না। এর সমাধান কী?
যখন থেকে ছবি আমদানি করা হচ্ছে তখন থেকে প্রদর্শক সমিতিকে আশ্বাস দেয়া হচ্ছে, ভালো নির্মাতা আসছেন, দেশের চলচ্চিত্র ঘুরে দাঁড়াবে। তার উদাহরণ এখন সিনেমা হল সংখ্যা ১৭৪ আর ছবি মুক্তির সংখ্যা বছর ৩৫। এই অবস্থা থেকে বেরিয়ে আসার জন্য বহু দিন প্রদর্শক সমিতি চুপ ছিল, কিন্তু আর নয়।
অনেক ধৈর্য্যের পর প্রদর্শক সমিতি এই অবস্থা থেকে বেরিয়ে আসার জন্য আগামী ১২ এপ্রিল থেকে সারাদেশে অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। সরকার আমলে নেয়ার আগ পর্যন্ত এ সিদ্ধান্ত বহাল থাকবে বলে জানায় প্রদর্শক সমিতি।