প্রত্যেকটি মানুষের জীবনে দাম্পত্য একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। একসঙ্গে থাকতে থাকতে টুকটাক তর্ক-বিতর্ক, মতান্তর, ঝগড়া পেরতে পেরতে সম্পর্কের রসায়নে আর সেই চাকচিক্য থাকে না বলেই বেশির ভাগ মানুষ মনে করেন। দু’জন মানুষের নিজস্ব মত, চিন্তা-ভাবনা, জীবনযাপনের পন্থাই দীর্ঘ দাম্পত্যে নানা দূরত্ব তৈরি করে বসে বলে মনে করেন মনোবিদরাও।
কিন্তু একদল গবেষকের দাবি করেছেন, দীর্ঘমেয়াদি সম্পর্কের তারও টানটান বাঁধা থাকতে পারে সহজেই। বহু বাঁক পেরনো পুরনো দাম্পত্যেও সুখে থাকার চাবিকাঠির হদিশ আর দূরে নয়।
সম্প্রতি বার্কলে ও স্ট্যানফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের মনোবিদ্যার গবেষকদের মতে, ‘অনেকেই মনে করেন, বিশ্বাস, ভালবাসা আর সহজ যোগাযোগই হয়তো একসঙ্গে থাকা দুই মানুষের ভিতরের দূরত্ব সরিয়ে রাখতে সক্ষম। কিন্তু এই গবেষণায় এ সব ‘গুণ’-কে পিছনে ফেলে সুখে থাকার উৎস হিসাবে উঠে এল অন্য স্বভাব।
১৩ বছর ধরে চলা এই গবেষণা চলে কয়েক হাজার মধ্যবয়সী ও প্রৌঢ় দম্পতির উপর। ১৫ মিনিট ধরে তাদের মধ্যেকার কোনো সমস্যা নিয়ে আলোচনা করেন। সেই আলোচনা রেকর্ডও করা হয়। তার পর তাদের সেই রেকর্ড করা কথোপকথন, সমস্যা নিয়ে কথা বলার ভঙ্গি, আচরণ সব কিছু খতিয়ে দেখে ‘নেগেটিভ ইমোশন’ বা নেতিবাচক আবেগকেই সম্পর্ক ম্যাড়মেড়ে হওয়ার অন্যতম কারণ হিসাবে মনে করছেন বিজ্ঞানীরা।
রাগ, অভিমান বা ক্ষোভের বহিঃপ্রকাশে ব্যবহৃত কুকথা, দোষারোপ, খারাপ মন্তব্যই যে কোনও সম্পর্ককে নষ্ট করে দেওয়ার মূলে বলে মনে করছেন তারা। এই আবেগকে নিয়ন্ত্রণ করতে পারলেই দাম্পত্যে সুখে থাকার আয়ু বাড়বে আরও অনেকগুলো বছর।
আসলে খুব কম মানুষই নিজেকে পেরিয়ে গিয়ে অন্যকে ভালবাসতে পারেন। আর তার প্রভাব পড়ে রাগ, ক্ষোভের সময়। এই সময়ে কাছের জনের থেকে পাওয়া আঘাত সহজে ভুলতে পারে না মানুষ। আর সেই ছাপই পড়ে দাম্পত্যের রসায়নেও।’