চলে গেলেন কিংবদন্তী পরিচালক মৃণাল সেন। রোববার সকাল সাড়ে দশটার দিকে ভারতের ভবানীপুরে নিজের বাড়িতেই হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মারা যান তিনি। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৯৫ বছর। দীর্ঘদিন ধরেই বার্ধক্যজনিত অসুখে ভুগছিলেন তিনি। মৃণালের প্রয়াণে বাংলা চলচ্চিত্র জগতে একটা যুগের অবসান হল বলেই মনে করছেন অনেকেই।
তার পরিবার জানায়, দীর্ঘদিন ধরেই বার্ধক্যজনিত অসুখে ভুগছিলেন মৃণাল সেন। তার প্রয়াণে বাংলা চলচ্চিত্র জগতে একটা যুগের অবসান হল বলেই মনে করছেন বহু মানুষ।
১৯২৩ সালের ১৪ মে বাংলাদেশের ফরিদপুরে জন্মগ্রহণ করেন মৃণাল সেন। হাইস্কুলের পড়া শেষ করে কলকাতায় পাড়ি জমান তিনি। পদার্থবিদ্যা নিয়ে স্কটিশ চার্চ কলেজে পড়াশোনা করেন। কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি লাভ করেন তিনি। আজীবন বামপন্থায় বিশ্বাসী ছিলেন। কমিউনিস্ট পার্টি অব ইন্ডিয়ার সাংস্কৃতিক কাজকর্মের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। কিন্তু কখনও পার্টির সদস্য হননি তিনি।
১৯৫৫ সালে ‘রাতভোর’ ছবি দিয়ে চলচ্চিত্র জগতে যাত্রা শুরু মৃণাল সেনের। এ ছবিতে অভিনয় করেছিলেন বাংলার মহানায়ক উত্তম কুমার। প্রথম ছবিতে তেমন সাফল্য না পেলেও পরের ছবি ‘নীল আকাশের নিচে’-তে নিজের জাত চেনান তিনি।
এরপর ‘বাইশে শ্রাবণ’ ছবির হাত ধরে আন্তর্জাতিক স্তরে স্বীকৃতি মেলে মৃণাল সেনের।
ভারতের সর্বশ্রেষ্ঠ সম্মান দাদাসাহেব ফালকে পুরস্কার, ভারতের জাতীয় পুরস্কার পেয়েছেন তিনি। এ ছাড়া জাতীয় ও আন্তর্জাতিকভাবে অসংখ্য পুরস্কারে ভূষিত হয়েছেন। ‘রাতভোর’ ছবি নির্মাণের মাধ্যমে চলচ্চিত্র জগতে ১৯৫৫ সালে যাত্রা শুরু মৃণাল সেনের। বাংলা ছাড়াও হিন্দি, উড়িষ্যা ও তেলেগু ভাষায় ছবি নির্মাণ করেছেন তিনি।
তাঁর পরিচালিত উল্লেখযোগ্য ছবিগুলোর মধ্যে রয়েছে ‘বাইশে শ্রাবণ’, ‘নীল আকাশের নীচে’, ‘মৃগয়া’, ‘আকালের সন্ধানে’, ‘ভুবন সোম’, ‘কলকাতা-৭১’, ‘খারিজ’, ‘পদাতিক’, ‘আকাশ কুসুম’ প্রভৃতি।