Bootstrap Image Preview
ঢাকা, ১৯ শুক্রবার, এপ্রিল ২০২৪ | ৬ বৈশাখ ১৪৩১ | ঢাকা, ২৫ °সে

চাঁপাইনবাবগঞ্জে খেজুরের রস সংগ্রহে ব্যস্ত গাছিরা

জাহিদ হাসান মাহমুদ মিমপা, চাঁপাইনবাবগঞ্জ প্রতিনিধিঃ
প্রকাশিত: ১৮ নভেম্বর ২০১৮, ০৩:৫৮ PM
আপডেট: ১৮ নভেম্বর ২০১৮, ০৩:৫৮ PM

bdmorning Image Preview


চাঁপাইনবাবগঞ্জে দিনে কিছুটা গরম আর বিকেল থেকে রাত ও সকালে কুয়াসা আর ঠান্ডা পড়তে শুরু করেছে। এরই মধ্যে মানুষ শীতের পোশাক পড়তেও শুরু করেছে। শীত মানেই ভাপা পিঠা আর খেঁজুরের রস যেন বাঙ্গালীর ঐতিহ্য। শীতের শুরুতেই খেঁজুরের রস সংগ্রহে ব্যস্ত হয়ে পড়েছে গাছিরা। 

আসন্ন শীত মৌসুমকে কেন্দ্র করে চাঁপাইনবাবগঞ্জের বিভিন্ন এলাকায় শুরু হয়েছে খেঁজুরের রস সংগ্রহের প্রস্তুতি। গৌরব আর ঐতিহ্যের প্রতীক মধু বৃক্ষ এই খেজুর গাছ। এখনো শীতের তীব্রতা তেমন দেখা না মিললেও এর মধ্যে রস সংগ্রহ শুরু করেছেন এ অঞ্চলের গাছিরা। তবে নভেম্বর মাসের মাঝামাঝি থেকে শুরু হয়ে যাবে রস সংগ্রহের ভরা মৌসুম। 

গ্রামীণ জনপদের আসন্ন নবান্ন উৎসবের অপরিহার্য উপাদান খেঁজুরের রস আর গুড়। তাই শীতের শুরুতেই খেঁজুর গাছ থেকে রস সংগ্রহে ব্যস্ত গাছিরা। শীত মানেই যেন খেঁজুর রস। শীতের সকালে নানাভাবে খাওয়া হয় এ রস।

চাঁপাইনবাবগঞ্জের নাচোল, ভোলাহাট, গোমস্তাপুর, রহনপুর, শিবগঞ্জ, কানসাটসহ বরেন্দ্র এলাকাগুলোতে খেঁজুর গাছে গাছিরা রসের জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছে। খেঁজুর গাছের ডালপালা পরিষ্কার ও গাছের উপরিভাগে ধারালো হাসুয়া দিয়ে ছিলে রাখতে দেখা গেছে।

চাঁপাইনবাবগঞ্জের শিবগঞ্জ পিরোজপুরের গ্রামে দেখা মেলে গাছিয়াল খানের সাথে। তিনি জানান, প্রথমে আমরা খেঁজুর গাছ ছিলে পরিষ্কার করছি। আরো ১০-১৫ দিন পর সে ছিলাস্থানে রস সংগ্রহের জন্য মাটির পাত্র বেঁধে রাখব। সেখানেই জমা হবে সুমিষ্টি রস। 

তিনি আরো জানান, আমার মত এ এলাকায় আরো বেশ কিছু পরিবার শীতের সময়ে খেঁজুরের রস সংগ্রহ করে বিক্রি করি। সিজনাল এ ব্যবসা করে ভালই রোজগার হয় আমাদের। পিরোজপুর গ্রামের শেষ প্রান্তে দেখা মিলে সারি সারি খেঁজুরের গাছ মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়ে আছে।

চাঁপাইনবাবগঞ্জের বিভিন্ন উপজেলার কাঁচা ও পাকা সড়ক পথ, রেল লাইনের দুই ধার, বাড়ির আঙ্গিনাসহ বিভিন্ন পতিত জায়গায় ছড়িয়ে আছে কয়েক লাখ খেজুর গাছ।

গাছিয়াল মতিউর জানান, বছরে শীতের এই মাস খুব পরিশ্রম করতে হয় আমাদের। খুব ব্যস্ত সময় পার করছি খেঁজুর গাছের পেছনে। শীত মাত্র শুরু হলো তাই গাছে খুব বেশি রস হচ্ছে না। তবুও গাছের রস সংগ্রহ করতে যেতে হচ্ছে কষ্ট করে। শীত যত বেশি হয় রসও শীতের সাথে সাথে বেশি হয়। 

তিনি বলেন, গাছে রস নেই, গাছে রস সংগ্রহ করে খুব একটা লাভ হয় না। খেঁজুরের জ্বালানি হিসেবে ব্যবহার হয় গাছ গাছালির শুকনা ডালপালা। সেই খড়ির দাম অনেক বেশি রস জ্বাল করে খুব একটা পোষায় না। খেঁজুরের রস থেকে এলাকায় গুড় উৎপাদনও হয়। 

শিবগঞ্জের নাককাটি তলা পুরো এলাকা এখন খেঁজুর ও আখের রস দিয়ে গুড় তৈরিতে ব্যস্ত শত শত কৃষক। বিশাল জমি জুড়ে এ এলাকায় চোখে পড়বে আখের গাছ। 

নাককাটিতলার রাস্তায় প্রায় ৫ কিলোমিটার রাস্তা দু'ধারেই বর্তমানে রস আর গুড়ের কারবার দেদারসে চলছে। দম ফেলার সময় নেই এখানকার কৃষকদের। যা শীতকালে এ অঞ্চলের অর্থনীতিতে বড় ধরনের ভূমিকা রাখে। গ্রামগঞ্জের বাতাসে তাই খেঁজুর রস আর গুড়ের গন্ধে এখন মনপ্রাণ জুড়িয়ে যাচ্ছে।
 

Bootstrap Image Preview