Bootstrap Image Preview
ঢাকা, ০৬ শুক্রবার, ডিসেম্বার ২০২৪ | ২১ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ | ঢাকা, ২৫ °সে

দেশ ছাড়ছেন সুন্দরীরা!

বিডিমর্নিং ডেস্ক
প্রকাশিত: ১৭ নভেম্বর ২০১৮, ০৮:২৩ PM
আপডেট: ১৭ নভেম্বর ২০১৮, ০৮:২৩ PM

bdmorning Image Preview
সংগৃহীত ছবি


গত কয়েক বছর ধরে ভেনেজুয়েলার অর্থনীতির অবস্থা টালমাটাল। ফলে সেখানে খাদ্যাভাব ও মুদ্রাস্ফীতি দেখা দেয়। এ জন্য প্রতিদিন হাজার হাজার মানুষ ভেনেজুয়েলা ছেড়ে যাচ্ছেন। অন্যান্য শিল্পের মতোই এতে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বিনোদন জগত। শুধু তাই নয়, মিস ভেনেজুয়েলার মতো প্রতিযোগিতার হাত ধরে যে নারীরা এতদিন কর্মসংস্থান পেতেন, তারাও পড়েছেন সমস্যায়। অর্থনীতির পতনের কারণে সুন্দরীরা পাড়ি দিচ্ছেন মেক্সিকো, কলোম্বিয়া বা পর্তুগালে। জীবিকার খোঁজে তারা পাড়ি দিয়েছেন তুরস্ক বা ভারতের মতো দূরের দেশগুলোতেও।

আসন্ন ‘মিস ইউনিভার্স' প্রতিযোগিতায় প্রতিনিধিত্ব করবেন বছর ২৬-এর আন্দ্রেয়া ডিয়াজ। আন্দ্রেয়ার জন্ম ভেনেজুয়েলার শহর ভালেন্সিয়াতে হলেও প্রথমে পানামা ও পরে মেক্সিকো হয়ে চিলে যান তিনি। আপাতত সেখানেই তার বসবাস। কিন্তু যে দেশের মাটিতে প্রথম ব়্যাম্পে হাঁটতে শেখেন আন্দ্রেয়া, সেই ভেনেজুয়েলায় মডেলের চাহিদা কমতে থাকায় দেশত্যাগ করেন তিনি।

কারাকাস শহরের রেডিও সঞ্চালক রাফায়েল ব্রিসেনোর মতে, নব্বইয়ের দশক থেকেই ভেনেজুয়েলায় বাড়তে থাকে সৌন্দর্য্য প্রতিযোগিতা চলে। বিশেষ করে ‘মিস ভেনেজুয়েলা' শিরোপায় অংশগ্রহণে বাড়ে অল্প বয়সী নারীদের আগ্রহ। শুধু তাই নয়, ‘মিস ইউনিভার্স', ‘মিস ওয়ার্ল্ড' বা ‘মিস আর্থ'-এর মতো আন্তর্জাতিক প্রতিযোগিতায় ভেনেজুয়েলার জয়যাত্রা অব্যাহত থাকার ফলে, বিভিন্ন সৌন্দর্য্য প্রতিযোগিতা হয়ে ওঠে নারীদের কর্মসংস্থানের নির্ভরযোগ্য উপায়।

এই প্রতিযোগিতার মঞ্চ থেকেই উঠে আসেন বহু মডেল, অভিনেত্রী, টেলিভিশন সঞ্চালিকা থেকে মেয়র বা রাষ্ট্রপতি পদপ্রার্থীও।

কিন্তু গত কয়েক বছরে ভেনেজুয়েলার অর্থনীতির টালমাটাল অবস্থা। প্রতিদিন হাজার হাজার মানুষ খাদ্যাভাব ও মুদ্রাস্ফীতি এড়াতে অন্য দেশে বাসা বাঁধছেন। অন্যান্য শিল্পের মতোই এতে ক্ষতিগ্রস্ত সৌন্দর্য্য জগতও। ফলে একের পর এক সুন্দরীরা পাড়ি দিচ্ছেন মেক্সিকো, কলোম্বিয়া বা পর্তুগালে। সোশ্যাল মিডিয়া থেকে জানা গেছে, জীবিকার খোঁজে এই নারীরা পাড়ি দিয়েছেন তুরস্ক বা ভারতের মতো দূরের দেশগুলোতেও।

আগামী মাসে অনুষ্ঠিত হতে চলা ‘মিস ওয়ার্ল্ড' প্রতিযোগিতায় পর্তুগালের হয়ে মঞ্চে নামবেন এক ভেনেজুয়েলান নারী। এই প্রবণতার চিত্র আগেও ‘মিস আর্থ' প্রতিযোগিতায় দেখা গেছে যখন পেরু ও স্পেন, দুই দেশেরই প্রতিনিধিত্ব করেন দুই ভেনেজুয়েলান নারী।

পেরুর প্রতিনিধি, জেসিকা রুসো বলেন, দেশ ছেড়েছি বলে সৌন্দর্য্য প্রতিযোগিতার স্বপ্ন আমি ছাড়িনি। আমার বয়স কম। আমি ভবিষ্যতে সারা বিশ্বের ভালো হয় এমন কোন কাজ করতে চাই।

অনেকে যদিও এই সৌন্দর্য্য প্রতিযোগিতাকে দেখছেন নারীর পণ্যায়ন হিসেবে, নারীদের রোজগারের নির্ভরযোগ্য উপায় হওয়ার কারণে এই সমালোচনা সেভাবে ভেনেজুয়েলার সাধারণ মানুষের কাছে গৃহীত হয় না।

শুধু অর্থনৈতিক পতন নতুন। সুন্দরী নারীদের দেশত্যাগের পেছনে রয়েছে আরও একটি কারণ। ভেনেজুয়েলায় থাকাকালে আন্দ্রেয়া একটি ত্বক পরিচর্যা কেন্দ্রে যান। পরে দেখা যায়, পরিচর্যার বদলে তার মুখে দেখা দিয়েছে ফুসকুড়ি। ফলে কমতে থাকে মডেল হিসেবে ভেনেজুয়েলায় তার কাজের সুযোগ।

নারীর সৌন্দর্য্যের মান কেমন হবে, সে বিষয়ে ভেনেজুয়েলার সৌন্দর্য্য শিল্পের অন্দরমহলে বাস করে কিছু বাঁধাধরা চিন্তা বা স্টিরিওটাইপ, যা ভাঙতে অক্ষম হলে নারীরা অন্য দেশে আশ্রয় নেন। অবশ্য চিলেতে আসার পর আন্দ্রেয়ার এই সমস্যা সমাধান হয়েছে। এখানে উন্নত মেকাপের ফলে সহজেই ঢেকে নিতে পারেন তিনি ত্বকের সব খুঁত।

দুর্বল অর্থনীতি বা সামাজিক চাপ– একাধিক সমস্যার সম্মুখীন হয়ে ভেনেজুয়েলা ত্যাগ করছেন সেই দেশের উঠতি তারকারা। এতে সেই দেশের শিল্প ক্ষতিগ্রস্ত হলেও শেষ পর্যন্ত লাভবান হচ্ছে অন্যান্য দেশের সৌন্দর্য্য বাণিজ্য। 

Bootstrap Image Preview