Bootstrap Image Preview
ঢাকা, ২৮ বৃহস্পতিবার, মার্চ ২০২৪ | ১৪ চৈত্র ১৪৩০ | ঢাকা, ২৫ °সে

'সরকার শিল্প খাত এগিয়ে নেয়ার জন্য আপ্রাণ চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে'

বিডিমর্নিং ডেস্ক
প্রকাশিত: ১৬ নভেম্বর ২০১৮, ০১:৪৫ PM
আপডেট: ১৬ নভেম্বর ২০১৮, ০১:৪৫ PM

bdmorning Image Preview


আমাদের দেশে একের পর এক আন্তর্জাতিক মানসম্পন্ন গ্রিন ফ্যাক্টরি গড়ে উঠছে ।সরকার শিল্প খাত এগিয়ে নেয়ার জন্য আপ্রাণ চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। এ কারণেই দ্রুত এগিয়ে যাচ্ছে দেশের তৈরি পোশাক শিল্প বলে মন্তব্য করেছেন বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ।

বৃহস্পতিবার রাজধানীর বসুন্ধরা কনভেনশন সিটিতে ‘আন্তর্জাতিক পোশাক শিল্প মেলার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।

ইতিমধ্যে ৭৫টি ফ্যাক্টরিকে গ্রিন ফ্যাক্টরির সার্টিফিকেট দেয়া হয়েছে। আরও ২৮০টি ফ্যাক্টরি গ্রিন সার্টিফিকেটের জন্য আবেদন করেছে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের গ্রিন বিল্ডিং কাউন্সিল তৈরি পোশাক খাতে বিশ্বের সেরা ১০টি গ্রিন ফ্যাক্টরির যে স্বীকৃতি দিয়েছে- এর মধ্যে প্রথম, দ্বিতীয় ও তৃতীয়সহ ৭টি বাংলাদেশের।

রেডকার্পেট ৩৬৫ লিমিটেড আয়োজিত এ মেলায় ‘বাংলাদেশ আন্তর্জাতিক গার্মেন্ট অ্যান্ড টেক্সটাইলস, প্রিন্টিং অ্যান্ড প্যাকেজিং মেশিনারি, ডাইস, পিগমেন্টস ও কেমিক্যাল, ইয়ান ও ফেব্রিক-এর ওপর ৪টি আন্তর্জাতিক প্রদর্শনী অনুষ্ঠিত হচ্ছে।

উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে বাংলাদেশে গ্রিসের অনারারি কনস্যুলার জেনারেল এবং বিজিএমইএ’র সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট ফারুক হাসান, বিকেএমইএ’র ফার্স্ট ভাইস প্রেসিডেন্ট মনসুর আহমেদ, বাংলাদেশ পেপার মিলস অ্যাসোসিয়েশনের চেয়ারম্যান মোস্তাফিজুর রহমান, বাংলাদেশ ইনডেন্টিং এজেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের প্রেসিডেন্ট মুহা. আইয়ুব, ওয়েল গ্রুপের চেয়ারম্যান সৈয়দ নূরুল ইসলাম বক্তব্য দেন।

প্রদর্শনীতে এশিয়া, ইউরোপ ও আমেরিকার ১২ দেশের প্রতিষ্ঠান তৈরি পোশাকের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন যন্ত্রপাতি ও টেকনোলজি প্রদর্শন করছে। আগামী ১৮ নভেম্বর পর্যন্ত প্রদর্শনী চলবে। খোলা থাকবে প্রতিদিন সকাল সাড়ে ১০টা থেকে সন্ধ্যা সাড়ে ৭টা পর্যন্ত।

পোশাক খাতের ধারাবাহিক উত্থানের কথা উল্লেখ করে বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, এ শিল্পে দেশের প্রায় ৪০ লাখ মানুষ কাজ করছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বর্তমান সরকার নগদ আর্থিক সহায়তা প্রদানসহ বিভিন্নভাবে সহায়তা দিয়ে যাচ্ছে। গত অর্থবছরে বাংলাদেশ তৈরি পোশাক রফতানি করে ৩০ দশমিক ৬১ বিলিয়ন মার্কিন ডলার আয় করেছে।

এ বছর ৩২ বিলিয়ন মার্কিন ডলার রফতানির লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে এখন বেশি রফতানি হচ্ছে। আশা করা যায়, এ বছর ৩৩ বিলিয়ন মার্কিন ডলার মূল্যের তৈরি পোশাক রফতানি করা সম্ভব হবে। তিনি বলেন, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে রফতানি বেড়েছে ১৯ ভাগ এবং নতুন বাজারে রফতানি বেড়েছে ৪০ ভাগ।

বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, শুধু পোশাকখাত নয়, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বর্তমান সরকার দেশের শিল্প খাতকে এগিয়ে নেয়ার জন্য আপ্রাণ চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। সরকারের সহায়তা পেয়ে কাগজ ও সিমেন্ট শিল্প দাঁড়িয়ে গেছে। ১৯৯৬ সালে সরকার কাগজ উৎপাদনের কাঁচামাল মণ্ড আমদানি শুল্কমুক্ত করে দেয়। ফিনিশ কাগজ আমদানির ওপর অধিক হারে শুল্ক আরোপের কারণে দেশ এখন কাগজ উৎপাদনে স্বয়ংসম্পূর্ণ হয়েছে। দেশের চাহিদা পূরণ করে এখন কাগজ বিদেশে রফতানি হচ্ছে।

তিনি বলেন, দেশের উন্নয়ন কাজে ব্যবহৃত সিমেন্টও আমদানিনির্ভর ছিল। সরকার একইভাবে সিমেন্ট উৎপাদনের কাঁচামাল আমদানির ওপর শুল্কশূন্য করে ফিনিশ সিমেন্ট আমদানির ওপর অধিক হারে শুল্ক আরোপ করে। ফলে বাংলাদেশ এখন সিমেন্ট উৎপাদনে স্বয়ংসম্পূর্ণ। একসময় দেশে মাত্র ৯ লাখ টন সিমেন্ট উৎপাদিত হতো, ৫ বছরের মধ্যে দেশে সিমেন্ট উৎপাদন ৭০ লাখ টনে বৃদ্ধি পায়। দেশে এখন ৩ কোটি টন সিমেন্ট উৎপাদিত হচ্ছে এবং উৎপাদনক্ষমতা ৬ কোটি টন।

মন্ত্রী বলেন, একসময় দেশ কৃষির ওপর নির্ভরশীল ছিল। আজ জিডিপিতে কৃষির অবদান ১৫ ভাগ, শিল্পের ১৩ ভাগ এবং সেবা খাত ৫৫ ভাগ অবদান রাখছে। ২০২৪ সালের মধ্যে বাংলাদেশ এলডিসি থেকে উন্নয়নশীল দেশে উন্নীত হবে।

চলমান রাজনীতি প্রসঙ্গে তোফায়েল আহমেদ বলেন, বিএনপি বুঝতে পেরেছে ২০১৪ সালে নির্বাচন ঠেকানোর নামে মানুষ হত্যা ও অগ্নিসন্ত্রাস করা ভুল ছিল। পুলিশ-নির্বাচন কর্মকর্তা হত্যা, ভোট কেন্দ্রে অগ্নিসংযোগ, সাধারণ মানুষ হত্যা করে নির্বাচন ঠেকানোর চেষ্টা করে তারা ব্যর্থ হয়েছিল। বুধবার বিএনপি অফিসের সামনে পুলিশের ওপর আক্রমণ হয়েছে, পুলিশের গাড়ি পুড়িয়ে দেয়া হয়েছে- এটা কেউ প্রত্যাশা করেনি। দেশের আইনশৃঙ্খলা বাহিনী এখন নির্বাচন কমিশনের নিয়ন্ত্রণে।

বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, আমরা এখন মন্ত্রণালয়ের শুধু রুটিনমাফিক কাজ করছি। নির্বাহী ক্ষমতা প্রয়োগের মতো কোনো কাজ করছি না। দেশের রাজনৈতিক দলগুলোর অনুরোধের পরিপ্রেক্ষিতে নির্বাচন কমিশন ভোট গ্রহণের তারিখ ২৩ ডিসেম্বর থেকে ৩০ ডিসেম্বর পুনর্নির্ধারণ করেছে। নির্বাচন আর পেছানো ঠিক হবে না। দেশে একটি অবাধ নিরপেক্ষ ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনের জন্য সবকিছুই সঠিক পথে এগিয়ে যাচ্ছে।

Bootstrap Image Preview