Bootstrap Image Preview
ঢাকা, ২৮ বৃহস্পতিবার, মার্চ ২০২৪ | ১৪ চৈত্র ১৪৩০ | ঢাকা, ২৫ °সে

পোস্টার দেখে সিনেমার বিচার করলে পোস্টার করাই বৃথাঃ বুলবুল বিশ্বাস

বিডিমর্নিং ডেস্ক
প্রকাশিত: ০৩ নভেম্বর ২০১৮, ০৬:৩৫ PM
আপডেট: ০৩ নভেম্বর ২০১৮, ০৬:৩৫ PM

bdmorning Image Preview


বাংলা সিনেমার অশ্লীল সময়ের কাহিনিকে কেন্দ্র করে চলচ্চিত্র নির্মাণের ঘোষণা দিয়েছেন ‘রাজনীতি’ খ্যাত নির্মাতা বুলবুল বিশ্বাস। সিনেমার একটি পোস্টারে আবেদনময়ী রূপে হাজির হয়েছেন এক সময়ের সাড়া জাগানো চিত্রনায়িকা পপি। একটি পোস্টারেই আলোড়ন সৃষ্টি করেছেন এই নির্মাতা। ছবির বিভিন্ন দিক নিয়ে বিডিমর্নিং এর সঙ্গে কথা বলেন তিনি।

বর্তমান সময়ে এই ধরনের পোস্টার কতটুকু যুক্তিযুক্ত?

বুলবুল বিশ্বাসঃ পোস্টারে তেমন কিছু দেখছি না। রাজনীতির পোস্টার নিয়েও সমালোচনা হয়েছে। রাজনীতি শুরু করার পর থেকে সাধারণ মানুষ ও ইন্ড্রাস্ট্রির মধ্যে শঙ্কা তৈরি হয়েছিল। রাজনৈতিক ব্যক্তিরাও তাকিয়ে ছিলো আমি আসলে রাজনীতি সিনেমায়  কি দেখাচ্ছি। ‘কাট পিছ’ একটা ভয়ংকর বিষয় তাই পোস্টারে দেখাতে চেয়েছি ‘কাট পিছ’ এর আমলটা কেমন ছিলো। সে সময়তো পোস্টারে নান্দনিকতার ছোঁয়া থাকতো না। এই পোস্টারে নান্দনিকতার ছোঁয়া আছে। পোস্টার দেখে যদি সিনেমার বিচার করেন তাহলে পোস্টার করাই বৃথা।

নায়িকা হিসেবে পপি কেন?

বুলবুল বিশ্বাসঃ আমার এমন একজন হিরোইন দরকার ছিলো, যার ক্যারিয়ারে অনেক কাজের অভিজ্ঞতা আছে। সে পুরো সময়টাকে দেখেছে। সেদিক থেকে পপিকে চূড়ান্ত করতে হয়েছে। এছাড়া পপি সু-অভিনেত্রী, ব্যক্তিগতভাবে একজন অসাধারণ মানুষ। তিন বার জাতীয় পুরস্কার পেয়েছে। বিভিন্ন দিক পর্যালোচনা করে মনে হলো পপি সেরা, তাই নায়িকা হিসেবে তাকে নিয়েছি।

পপি অনেকদিন ধরেই বড় পর্দা থেকে দূরে আছেন, দর্শক কি এখন তাকে গ্রহণ করবে?

বুলবুল বিশ্বাসঃ পপির একটা আলাদা দর্শক আছে। আমি নিজেও পপির ভক্ত। আমরা যদি দর্শকের কাছে গ্রহণযোগ্য ভাবে উপস্থাপন করতে পারি তাহলে দর্শক যে কোনো কিছু ভালোভাবে গ্রহণ করবে। পপির অনেক পুরাতন দর্শক আছে, যারা এখন সিনেমা দেখতে আসেন না। পপিকে দেখে সেই লোকগুলো হলে আসবে।

পপি কি দর্শকের চাহিদা পূরণ করতে পারবে?

বুলবুল বিশ্বাসঃ হ্যাঁ, অবশ্যই। যে কোনো নতুন কিছুই দর্শক গ্রহণ করে। নতুনের প্রতি দর্শকের আকর্ষণ বেশি। আমরা পপিকে নতুনভাবে উপস্থাপন করবো।

পপির নায়ক কে হচ্ছেন?

বুলবুল বিশ্বাসঃ এই সিনেমার নায়ক আমরা এখনো চূড়ান্ত করি নাই। কারণ গল্প আরো ভালোভাবে লেখা হচ্ছে। সব মিলিয়ে সময় লাগছে। কেন্দ্রীয় চরিত্রে একজন থাকবে, তবে সাথে একাধিক হিরোও থাকবে।

ছবির গল্প...

বুলবুল বিশ্বাসঃ ‘কাট পিছ’ হচ্ছে সিনেমার ক্যান্সার। একটা সময় কিছু অসাধু ব্যবসায়ী টাকা ইনকামের জন্য ভালো সিনেমার মধ্যে খারাপ দৃশ্য দিয়ে চালিয়ে দেয়। যার জন্য সিনেমার এই খারাপ অবস্থা শুরু হয়। আমি কাট পিছ এর মধ্যে সেই সময়টা তুলে ধরার চেষ্টা করবো। আপাতত এর বেশি কিছু জানাতে চাচ্ছি না।

অনেকেই ভাবছেন ভারতীয় সিনেমা ‘ডার্টি পিকচার’ এর অনুকরণ ‘কাট পিছ’ এ প্রসঙ্গে আপনার মতামত?

বুলবুল বিশ্বাসঃ ‘ডার্টি পিকচার’ হচ্ছে একজন অভিনেত্রীকে নিয়ে, আর ‘কাট পিছ’ হচ্ছে একটা সময় নিয়ে বা একটা অধ্যায় নিয়ে। ‘ডার্টি পিকচার’ ও ‘কাট পিছ’ দুইটি সিনেমার প্রেক্ষাপট সম্পূর্ণ আলাদা। কিন্তু হ্যাঁ, একটা জায়গায় মিল রয়েছে। সেটি হলো ‘ডার্টি পিকচার’ এর অভিনেত্রী যে দোষে দোষী ‘কাট পিছ’ এর তৎকালীন সময়ে অভিনেতা বা অভিনেত্রীরা একই দোষে দোষী।

‘রাজনীতি’র পর দীর্ঘ বিরতির কারণ কি?

বুলবুল বিশ্বাসঃ দীর্ঘ বিরতি বলবো না, কারণ এক বছর বিরতি। সঠিকভাবে একটা সিনেমা বানানোর জন্য কিছুটা সময় নিয়েছি। যারা সিনেমার পেছনে টাকা লগ্নি করেন তাদের সঙ্গে বোঝাপড়াটা শক্ত হতে কিছুটা সময় লেগেছে। আমার কাজের অভিজ্ঞতা ছিলো না হুট করেই ইন্ড্রাস্ট্রিতে আসা। সব মিলিয়ে আস্তে ধীরেই আগাচ্ছি।

ইন্ড্রাস্ট্রির বর্তমান অবস্থা কেমন?

বুলবুল বিশ্বাসঃ সত্যি বলতে বর্তমান অবস্থা একটু খারাপ যাচ্ছে। গত ১৬ সেপ্টেম্বর সন্ধ্যায় রাজধানীর একটি অভিজাত হোটেলে ‌‘নতুন মুখের সন্ধানে ২০১৮’ প্রতিযোগীতার আনুষ্ঠানিক উদ্ধোধন করা হয়। এতে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আব্দুল মুহিত। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সংস্কৃতি মন্ত্রী আসাদুজ্জামান নূর ও তথ্য প্রতিমন্ত্রী তারানা হালিম। তারা আশ্বাস দিয়েছেন আমাদের এই চলচ্চিত্র ইন্ড্রাস্ট্রির জন্য সহযোগিতা করবেন। চলচ্চিত্রের ব্যাপারে যা চাওয়া হয়েছে তা দিলে আমাদের ইন্ড্রাস্ট্রির অবস্থা ভালো হবে এবং আগের থেকে অনেক উন্নত মানের সিনেমা হবে।

একজন পরিচালকের দৃষ্টিকোণ থেকে কিভাবে এই ইন্ড্রাস্ট্রির মান উন্নয়ন সম্ভব?

বুলবুল বিশ্বাসঃ সুশিক্ষায় শিক্ষিত হতে হবে। আমাদের সুশিক্ষিত পরিচালক নেই, প্রযোজকও নেই। টাকা থাকলে ভালো কিছু হবে না, শিক্ষিত পরিচালক ও প্রযোজক দরকার। আমাদের সিনেমা হলগুলো ডিজিটাল করতে হবে। বাংলাদেশের সবগুলো শপিং কমপ্লেক্সে সিনে কমপ্লেক্স করতে হবে তাহলে মানুষ শপিং করবে, খাবে, সিনেমা দেখবে। মানুষের কাছাকাছি থাকলেই শিল্পের সাধনা পরিপূর্ণতা লাভ করবে।

এতক্ষণ সময় দেয়ার জন্য আপনাকে ধন্যবাদ।

বুলবুল বিশ্বাসঃ আপনাকেও ধন্যবাদ।

Bootstrap Image Preview