Bootstrap Image Preview
ঢাকা, ২৯ শুক্রবার, মার্চ ২০২৪ | ১৫ চৈত্র ১৪৩০ | ঢাকা, ২৫ °সে

‘কেউ জীবিত ফিরে যাবে না’ মৃত্যু নিয়ে আইয়ুব বাচ্চুর আবেগঘন স্ট্যাটাস

বিডিমর্নিং ডেস্ক
প্রকাশিত: ১৮ অক্টোবর ২০১৮, ০৫:৫২ PM
আপডেট: ১৮ অক্টোবর ২০১৮, ০৫:৫২ PM

bdmorning Image Preview


ব্যান্ডসংগীত কিংবা গিটারে দুটোতেই কিংবদন্তি তিনি। মঞ্চে বাচ্চু মানেই কানায় কানায় পূর্ণ গ্যালারি। কিন্তু তিনি আজ না ফেরার দেশে। কিছু দিন আগ থেকেই মৃত্যু নিয়ে একটু বেশিই ভাবছিলেন আইয়ুব বাচ্চু। যার প্রমাণ গত ২৫ আগস্টে তার ফেসবুকে দেওয়া এক স্ট্যাটাস।

সেখানে তিনি লিখেছিলেন, ‘চিন্তার কোনো কারণ নেই। এই পৃথিবী থেকে কেউ জীবিত ফিরে যাবেনা।’ এই কথাটি এখনো ঝুলছে তার ফেসবুক ওয়ালে। দু মাস না পেরুতেই তিনি নিজেই চলে গেলেন না ফেরার দেশে।

আরেকটি স্ট্যাটাসে এবি লিখেছিলেন, ‘আসলে জীবন কারো জন্য থেমে থাকেনা।’

১১ সেপ্টেম্বর আইয়ুব বাচ্চু একটি ছবি পোস্ট করেছিলেন সামাজিক মাধ্যমে। ছবিটির বক্তব্য ছিল - নিজের সীমাকে জানো।

ক্যাপশনে তিনি লিখেছিলেন, এটাই সত্যবাক্য।

ছবিটির কমেন্টে অনেকেই মৃত্যু নিয়ে আবেগঘন কথা লিখেছিলেন। একজনের কমেন্টে এবি উত্তর দিয়েছিলেন সেই চিরসত্য কথাটি - প্রতিটি প্রানী কে মৃত্যুর স্বাদ গ্রহণ করিতে হইবে।

গত ১৬ আগস্ট ছিল এ কিংবদন্তির জন্মদিন। সে প্রসঙ্গে তিনি ফেসবুকে সবার কাছে কৃতজ্ঞতা জানিয়ে লিখেছিলেন, এক জীবনে এর চেয়ে বেশি আর কি চাওয়া থাকতে পারে আমার মত একজন সাধারন মানুষের। আমি কৃতজ্ঞ।

কোটি কোটি ভক্তদের রেখে আজ বৃহস্পতিবার সকাল ৯টা ৫৫ মিনিটে মারা যান ব্যান্ড সংগীতের কিংবদন্তি শিল্পী আইয়ুব বাচ্চু।

আউয়ুব বাচ্চু যখন গীটার হাতে নিয়েছিলেন তখন গীটার ও ব্যান্ডগানকে ভালোভাবে নেয়নি এ দেশের মানুষ। গীটারকে একতারা, দোতারার শত্রু হিসেবেই দেখেছিল এ দেশের মানুষ সে সময়। সেখান থেকেই আইয়ুব বাচ্চু তার সেই গিটারের সূরের মূর্ছনায় কয়েক যুগ মাতিয়ে রেখেছিলেন সংগীত প্রেমীদের।

আইয়ুব বাচ্চু সম্পর্কে কিছু অজানা কথা-

১৯৬২ সালের ১৬ আগস্ট তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানের (বর্তমান বাংলাদেশ) চট্টগ্রাম জেলায় জন্মগ্রহণ করেন।তার সংগীতজগতে যাত্রা শুরু হয় ১৯৭৮ সালে ‘ফিলিংস’ ব্যান্ডের মাধ্যমে। তার কণ্ঠের প্রথম গান- ‘হারানো বিকেলের গল্প’। গানটির কথা লিখেছিলেন শহীদ মাহমুদ জঙ্গী।

১৯৮০ থেকে ১৯৯০ সালে তিনি সোলস ব্যান্ডের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। ১৯৮৬ সালে প্রকাশিত ‘রক্তগোলাপ’ আইয়ুব বাচ্চুর প্রথম প্রকাশিত একক অ্যালবাম। এই অ্যালবামটি তার জীবনে সফলতা বয়ে না আনলেও ১৯৮৮ সালে তার দ্বিতীয় একক অ্যালবাম ‘ময়না’ তার জীবনে সফলতার দ্বার উন্মোচন করে।

১৯৯১ সালে বাচ্চু এলআরবি ব্যান্ড গঠন করে। এই ব্যান্ড গঠনের পর প্রথম অ্যালবাম প্রকাশিত হয় ১৯৯২ সালে। এটি বাংলাদেশের প্রথম দ্বৈত অ্যালবাম। এই অ্যালবামের ‘শেষ চিঠি কেন এমন চিঠি’, ‘ঘুম ভাঙা শহরে’, ‘হকার’ গানগুলো জনপ্রিয়তা লাভ করে।

পরবর্তী সময়ে ১৯৯৩ ও ১৯৯৪ সালে তার দ্বিতীয় ও তৃতীয় ব্যান্ড অ্যালবাম ‘সুখ’ ও ‘তবুও’ বের হয়। ১৯৯৫ সালে তিনি বের করেন তৃতীয় একক অ্যালবাম ‘কষ্ট’। সর্বকালের সেরা একক অ্যালবামের একটি বলে অভিহিত করা হয় এটিকে। একই বছর তার চতুর্থ ব্যান্ড অ্যালবাম ‘ঘুমন্ত শহরে’ প্রকাশিত হয়।

‘অনন্ত প্রেম তুমি দাও আমাকে’ তার বাংলা ছবির অন্যতম একটি জনপ্রিয় গান। এটি তার গাওয়া প্রথম চলচ্চিত্রের গান। ২০০৯ সালে তার একক অ্যালবাম বলিনি কখনও প্রকাশিত। ২০১১ সালে এলআরবি ব্যান্ড থেকে বের করেন ব্যান্ড অ্যালবাম যুদ্ধ।

ছয় বছর পর ২০১৫ সালে তার পরবর্তী একক অ্যালবাম জীবনের গল্প বাজারে আসে। গিটারে তিনি সারা ভারতীয় উপমহাদেশে বিখ্যাত। জিমি হেন্ড্রিক্স ও জো স্যাট্রিয়ানীর বাজনায় তিনি দারুণভাবে অনুপ্রাণিত। ঢাকার মগবাজারে ‘এবি কিচেন’ নামে তার নিজস্ব একটি মিউজিক স্টুডিও রয়েছে।

Bootstrap Image Preview