Bootstrap Image Preview
ঢাকা, ১৯ শুক্রবার, এপ্রিল ২০২৪ | ৬ বৈশাখ ১৪৩১ | ঢাকা, ২৫ °সে

মায়ের কবরের পাশেই দাফন হবেন আইয়ুব বাচ্চু

বিডিমর্নিং ডেস্ক
প্রকাশিত: ১৮ অক্টোবর ২০১৮, ০২:৪৮ PM
আপডেট: ১৮ অক্টোবর ২০১৮, ০২:৪৯ PM

bdmorning Image Preview


কিংবদন্তি ব্যান্ড তারকা আইয়ুব বাচ্চুকে চট্টগ্রামে মায়ের কবরের পাশে দাফন করা হবে বলে জানিয়েছে তার পরিবার। এর আগে আজ বৃহস্পতিবার সকালে নিজ বাসায় হার্ট অ্যাটাক হলে অচেতন অবস্থায় ঢাকার স্কয়ার হাসপাতালে নেওয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

তার স্বজনরা জানান, আজ সকালে ধানমন্ডির বাসায় হৃদরোগে আক্রান্ত হন আইয়ুব বাচ্চু। সকাল সাড়ে নয়টার দিকে তাকে রাজধানীর স্কয়ার হাসপাতালে নেয়া হয়।

সকাল ৯টা ৫৫ মিনিটে তাকে মৃত ঘোষণা করেন চিকিৎসক। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৫৬ বছর।

পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে, আইয়ুব বাচ্চুর ছেলে-মেয়ে দেশের বাইরে অবস্থান করছে। তারা দেশে ফিরলে আগামীকাল সন্ধ্যার পর চট্টগ্রামের উদ্দেশে লাশ নিয়ে রওনা দেওয়া হবে। আগামী শনিবার আরেক দফা নামাজে জানাজা শেষে মায়ের কবরের পাশে দাফন করা হবে সংগীত জগতের খসে যাওয়া এই তারকাকে।

এদিকে আইয়ুব বাচ্চুর মৃত্যুতে সংস্কৃতি অঙ্গনসহ ভক্ত-শ্রোতাদের মনে নেমে এসেছে শোকের ছায়া। প্রিয় শিল্পীকে এক নজর দেখতে রাজধানীর স্কয়ার হাসপাতালে ভিড় জমাচ্ছেন শিল্পী ও ভক্ত-অনুরাগীরা।

স্কয়ার হাসপাতালের মেডিকেল সার্ভিসের পরিচালক মির্জা নাজিমউদ্দিন সাংবাদিকদের বলেন, সকালে উনার হার্ট অ্যাটাক হয়। সকাল সোয়া ৯টার দিকে তার ড্রাইভার তাকে হাসপাতালে নিয়ে আসে। তবে তার আগেই তার মৃত্যু হয়।

সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের পক্ষ থেকে চলচ্চিত্র পরিচালক নাসির উদ্দিন ইউসুফ বাচ্চু সাংবাদিকদের জানান, আগামীকাল শনিবার সকাল সাড়ে ১০টা থেকে সাড়ে ১২টা পর্যন্ত সর্বসাধারণের শ্রদ্ধা নিবেদনের জন্য কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে আইয়ুব বাচ্চুর মরদেহ রাখা হবে। এরপর রাজধানীর কেন্দ্রীয় ঈদগাহ মাঠে তার প্রথম নামাজে জানাজা অনুষ্ঠিত হবে।

আইয়ুব বাচ্চু ১৯৬২ সালের ১৬ আগস্ট তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানের (বর্তমান বাংলাদেশ) চট্টগ্রাম জেলায় জন্মগ্রহণ করেন।তার সংগীতজগতে যাত্রা শুরু হয় ১৯৭৮ সালে ‘ফিলিংস’ ব্যান্ডের মাধ্যমে। তার কণ্ঠের প্রথম গান- ‘হারানো বিকেলের গল্প’। গানটির কথা লিখেছিলেন শহীদ মাহমুদ জঙ্গী।

১৯৮০ থেকে ১৯৯০ সালে তিনি সোলস ব্যান্ডের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। ১৯৮৬ সালে প্রকাশিত ‘রক্তগোলাপ’ আইয়ুব বাচ্চুর প্রথম প্রকাশিত একক অ্যালবাম। এই অ্যালবামটি তার জীবনে সফলতা বয়ে না আনলেও ১৯৮৮ সালে তার দ্বিতীয় একক অ্যালবাম ‘ময়না’ তার জীবনে সফলতার দ্বার উন্মোচন করে।

১৯৯১ সালে বাচ্চু এলআরবি ব্যান্ড গঠন করে। এই ব্যান্ড গঠনের পর প্রথম অ্যালবাম প্রকাশিত হয় ১৯৯২ সালে। এটি বাংলাদেশের প্রথম দ্বৈত অ্যালবাম। এই অ্যালবামের ‘শেষ চিঠি কেন এমন চিঠি’, ‘ঘুম ভাঙা শহরে’, ‘হকার’ গানগুলো জনপ্রিয়তা লাভ করে।

পরবর্তী সময়ে ১৯৯৩ ও ১৯৯৪ সালে তার দ্বিতীয় ও তৃতীয় ব্যান্ড অ্যালবাম ‘সুখ’ ও ‘তবুও’ বের হয়। ১৯৯৫ সালে তিনি বের করেন তৃতীয় একক অ্যালবাম ‘কষ্ট’। সর্বকালের সেরা একক অ্যালবামের একটি বলে অভিহিত করা হয় এটিকে। একই বছর তার চতুর্থ ব্যান্ড অ্যালবাম ‘ঘুমন্ত শহরে’ প্রকাশিত হয়।

‘অনন্ত প্রেম তুমি দাও আমাকে’ তার বাংলা ছবির অন্যতম একটি জনপ্রিয় গান। এটি তার গাওয়া প্রথম চলচ্চিত্রের গান। ২০০৯ সালে তার একক অ্যালবাম বলিনি কখনও প্রকাশিত। ২০১১ সালে এলআরবি ব্যান্ড থেকে বের করেন ব্যান্ড অ্যালবাম যুদ্ধ।

ছয় বছর পর ২০১৫ সালে তার পরবর্তী একক অ্যালবাম জীবনের গল্প বাজারে আসে। গিটারে তিনি সারা ভারতীয় উপমহাদেশে বিখ্যাত। জিমি হেন্ড্রিক্স ও জো স্যাট্রিয়ানীর বাজনায় তিনি দারুণভাবে অনুপ্রাণিত। ঢাকার মগবাজারে ‘এবি কিচেন’ নামে তার নিজস্ব একটি মিউজিক স্টুডিও রয়েছে।

Bootstrap Image Preview