Bootstrap Image Preview
ঢাকা, ২৯ শুক্রবার, মার্চ ২০২৪ | ১৫ চৈত্র ১৪৩০ | ঢাকা, ২৫ °সে

নীতিমালা উপেক্ষা করে পাইকগাছায় গড়ে উঠেছে ক্লিনিক ও প্যাথলোজি

আব্দুল ওহাব বাবলু, পাইকগাছা প্রতিনিধিঃ
প্রকাশিত: ১৬ সেপ্টেম্বর ২০১৮, ০৯:০২ AM
আপডেট: ১৬ সেপ্টেম্বর ২০১৮, ০৯:০৪ AM

bdmorning Image Preview


পাইকগাছায় সরকারি নীতিমালা উপেক্ষা করে যত্রতত্রভাবে গড়ে উঠেছে অসংখ্য ক্লিনিক ও প্যাথলোজি। যেখানে নেই নিয়মিত ডাক্তার, দক্ষ নার্স ও উপযুক্ত পরিবেশ।

এর ফলে কর্তৃপক্ষের নির্দেশ উপেক্ষা করে বন্ধ ক্লিনিক চালু রাখায় আশালতা ক্লিনিকের মালিক দেবাশীষকে ৬ মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড প্রদান করে ভ্রাম্যামাণ আদালত।

সরেজমিনে তথ্যানুসন্ধানে জানা যায়, উপজেলার সদর, কপিলমুনি, বাঁকাসহ কয়েকটি ইউনিয়নে এ সব বেসরকারি ক্লিনিক ও প্যাথলোজি গড়ে উঠেছে। প্রতি বছর কোন না কোন ক্লিনিকে ২/১টি রোগী মারা যায়। এ নিয়ে তাৎক্ষণিকভাবে পত্র পত্রিকা ও বিভিন্ন মিডিয়ায় লেখালেখি হলে কর্তৃপক্ষ তড়িঘড়ি করে নড়েচড়ে বসে এবং আকস্মিকভাবে ক্লিনিক বন্ধ করলেও কিছুদিন যেতে না যেতেই আবারো পূর্বের অবস্থানে ফিরে যায়।

চলতে থাকে ক্লিনিকের কার্যক্রম। প্যাথলোজিগুলোতে ডাক্তার, নার্স ও এক শ্রেণির দালালরা রোগী আসলেই পরীক্ষা নিরীক্ষার জন্য পাঠিয়ে দেয় পছন্দের প্রতিষ্ঠানে। সেখানে তারা তাদের প্রাপ্য কমিশন আদায় করে থাকে বলে জানা গেছে।

পাইকগাছা উপজেলার ক্লিনিক, প্যাথলোজি ও ডেন্টাল ক্লিনিক সব মিলিয়ে এ ধরণের কার্যক্রম চলছে হরহামেশাই। প্রতিষ্ঠানগুলো হল, পাইকগাছা সার্জিক্যাল ক্লিনিক, শাপলা ক্লিনিক, শাপলা ডায়াগনস্টিক সেন্টার, সৈকত ডায়াগনস্টিক সেন্টার, পাইকগাছা ডায়াবেটিক সেন্টার, নিউ মডার্ণ ডায়াগনস্টিক সেন্টার, কপোতাক্ষ ডায়াগনস্টিক সেন্টার, নিউ পাইকগাছা ডায়াগনস্টিক সেন্টার, বাঁকা সার্জিক্যাল ক্লিনিক, এম. মনোয়ারা ক্লিনিক, স্বপ্ননীল ক্লিনিক, কপিলমুনি সার্জিক্যাল ক্লিনিক, কপিলমুনি ডায়াগনস্টিক সেন্টার, ডিজিটাল ডেন্টাল কেয়ার, জনতা ডেন্টাল ক্লিনিক, কেয়ার ডায়াগনস্টিক সেন্টার, নিরালা স্টোল, ডেন্টাল কেয়ার, সাতক্ষীরা নিশান ডেন্টাল, আশালতা ক্লিনিক, শুভ ডায়াগনস্টিক সেন্টার, অপন্সরা ডায়াগনস্টিক সেন্টার, মুন ডায়াগনস্টিক সেন্টার, ফারিন হসপিটাল, আল-আমিন ক্লিনিক, পলক ক্লিনিক, নুরজাহান মেমোরিয়াল হাসপাতাল ও মতুয়া হাসপাতাল।

ক্লিনিকগুলোতে সার্বক্ষণিক কোন ডাক্তার নেই, নেই নার্স। যেকোন ধরণের রোগী আসলেই ভর্তি করতে এতটুকু কার্পন্য করে না তারা। তবে ক্লিনিকগুলোর সামনে অধিকাংশ দেয়ালজুড়ে অসংখ্য ডাক্তারের নাম, ঠিকানার কম নেই। বলতে গেলে, সে সকল ডাক্তারের অবস্থান নেই পাইকগাছাতে। এক প্রকার প্রতারণার মাধ্যমে হাতুড়ি বা কোয়াক ডাক্তাররা বিভিন্ন অপারেশনের ঝুঁকি নিয়ে থাকে। যার ফলে অনেক রোগীদের মৃত্যু ঘটেছে।

এছাড়া ক্লিনিকগুলো পরিস্কার পরিচ্ছন্নতার দিক দিয়ে রয়েছে অনেক পিছিয়ে। এমনকি উপরে ক্লিনিক থাকলেও নিচে রয়েছে ময়লা আবর্জনাসহ কাঁকড়ার ডিপো। কর্তৃপক্ষ দেখেও না দেখার ভান করেন। আবার অনেক ক্লিনিক মালিকের সাথে সখ্যতার কারণে নিয়ম-নীতিকে উপেক্ষা করে হরহামেশাই তাদের কার্যক্রমের অনুমতি দেন বলে জনশ্রুতি রয়েছে।

তবে আশালতা ক্লিনিক লাইসেন্সবিহীন ও কর্তৃপক্ষের নির্দেশ উপেক্ষা করে কার্যক্রম পরিচালনা করায় উপজেলা নির্বাহী ম্যাজিস্টেট ডাঃ মোঃ আব্দুল আউয়াল বুধবার (১২ সেপ্টেম্বর) মালিককে ৬ মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড দিয়েছে। বিভিন্ন ক্লিনিকগুলোতে প্রায় একই অবস্থা বিরাজ করলেও সেদিকে কর্তৃপক্ষের এতটুকু নজর নেই বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। দ্রুত এ সকল প্রতিষ্ঠানগুলোতে ভ্রাম্যমাণ আদালত বসিয়ে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হলে সাধারণ জনগণ ভোগান্তি থেকে রক্ষা পাবে।

উপজেলা স্বাস্থ্য ও প.প. কর্মকর্তা মুকুল কুমার মজুমদার জানান, আমার যোগদানের পর একটি ক্লিনিকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। অন্যান্য ক্লিনিক বা প্যাথলোজিগুলোতে অভিযান চালিয়ে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। 

Bootstrap Image Preview