Bootstrap Image Preview
ঢাকা, ১৮ বৃহস্পতিবার, এপ্রিল ২০২৪ | ৫ বৈশাখ ১৪৩১ | ঢাকা, ২৫ °সে

সরাইলে দাফন,৮ দিন পর নারায়ণগঞ্জ থেকে জীবিত উদ্ধার

বিডিমর্নিং ডেস্ক
প্রকাশিত: ১৫ সেপ্টেম্বর ২০১৮, ০৬:০৭ AM
আপডেট: ১৫ সেপ্টেম্বর ২০১৮, ০৬:০৭ AM

bdmorning Image Preview
সংগৃহীত


ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার সরাইল উপজেলার অরুয়াইলে এক ব্যক্তির লাশ দাফনের আট দিন পর নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁ উপজেলার টিপুরদী এলাকা থেকে তাকে জীবিত উদ্ধার করা হয়েছে।

শুক্রবার(১৪ সেপ্টেম্বর) সোনারগাঁ থানা পুলিশ সরাইল থানার এসআই জাকির হোসেন খন্দকারের কাছে জীবিত আসাদুল্লাহকে হস্তান্তর করে। এ নিয়ে এলাকায় ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়।

সাত সন্তানের জনক আসাদ উল্লাহ(৩৮) সরাইল উপজেলার অরুয়াইল ইউনিয়নের উত্তরপাড়ার আলী আকবরের ছেলে।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, গত ৬ সেপ্টেম্বর উপজেলার চুন্টা থেকে অর্ধগলিত অজ্ঞাতনামা যুবকের লাশকে আসাদ উল্লাহর (৩৮) লাশ বলে শনাক্ত করে তার পরিবার।

স্থানীয় জনগণ, পুলিশ ও মামলাসূত্রে জানা যায়, সরাইলের অরুয়াইল-ধামাউড়া সড়কের পাশে ৫২ শতক জমি ইজারা নিয়েছিলেন আসাদ উল্লাহ। এর মূল্য প্রায় কোটি টাকা। এ জায়গার পাশে রয়েছে হরিপদ নামের এক হিন্দু লোকের জায়গা। ইজারা নেওয়া জায়গার দখলকে কেন্দ্র করে হরিপদের সঙ্গে বিরোধের সৃষ্টি হয় আসাদের। হরিপদের অভিযোগ, সরকারি জায়গা দখল করে তার কিছু জায়গাও দখল করেছেন আসাদ।

আর আসাদের দাবি, তিনি সরকারি জায়গাই দখল করেছেন। এ জায়গা নিয়ে একসময় উভয় পক্ষই মামলা-মোকদ্দমায় জড়িয়ে পড়ে। পরে আসাদ সেই জায়গার কিছু অংশ বিক্রি করে দেন। এ নিয়ে অরুয়াইলে দুটি পক্ষের সৃষ্টি হয়। ৫ আগস্ট আসাদ উল্লাহ সরাইল থানায় একটি জিডি করেন। জিডিতে তিনি অরুয়াইল ইউনিয়নের ধামাউড়া গ্রামের আক্তার মিয়ার ছেলে ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক গাজী শফিকুল ইসলাম (৩৫), একই এলাকার তাজুল ইসলামের ছেলে মোখলেছ মিয়া (৩৫), এলাছ উদ্দিনের ছেলে কাপ্তান মিয়া (৪৫), এন্তাজ আলীর ছেলে আলী মিয়া (৪০) ও রানিদিয়া গ্রামের তাজুল ইসলামের ছেলে আক্কাস মিয়ার (৩৫) বিরুদ্ধে তাকে মারধর ও হত্যার হুমকি দেওয়ার অভিযোগ করেন।

তদন্তের পর সেই জিডিটি ৯ আগস্ট ননএফআইআর হিসেবে নথিভুক্ত করা হয়। সেই দিন সন্ধ্যা ৭টার পর সরাইল সদরের উচালিয়াপাড়া মোড় থেকে আসাদ উল্লাহ অপহরণ হয়েছেন মর্মে সরাইল থানাকে মৌখিকভাবে অবহিত করেন তার স্বজনরা। ২০ আগস্ট আসাদ উল্লাহর মেয়ে মোমেনা বেগম বাদী হয়ে আদালতে একটি অপহরণ মামলা করেন। এই মামলায় কাপ্তান মিয়া, গাজী শফিকুল ইসলাম, মোখলেছ মিয়া ও আক্কাস মিয়াকে আসামি করা হয়।

আরপর ৫ সেপ্টেম্বর স্থানীয় আওয়ামী লীগ, যুবলীগ ও স্বেচ্ছাসেবক লীগের নেতৃত্বে অরুয়াইল বাজারে একটি প্রতিবাদ মিছিল ও ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি আবু তালেবের সভাপতিত্বে একটি পথসভা অনুষ্ঠিত হয়।

সভায় বক্তারা মোমেনার দায়েরকৃত মামলাকে মিথ্যা, বানোয়াট ও উদ্দেশ্যপ্রণোদিত উল্লেখ করে মামলাটি প্রত্যাহারের দাবি জানান। ৬ সেপ্টেম্বর উপজেলার চুন্টা উত্তরপাড়ার শ্মশানের কাছে হাওরের পানিতে ভেসে ওঠা অজ্ঞাতনামা এক ব্যক্তির অর্ধগলিত লাশ উদ্ধার করে সরাইল থানা পুলিশ। খবর পেয়ে থানায় আসেন আসাদ উল্লাহর স্বজনরা। তারা লাশটি আসাদ উল্লাহর বলে দাবি করেন। ময়নাতদন্ত শেষে লাশটি গ্রহণ করেন আসাদের মেয়ে মোমেনা। পরে বাড়িতে নিয়ে জানাজা শেষে দাফনও করা হয়।

এ ঘটনায় গত শুক্রবার মোমেনা বাদী হয়ে ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মো. শফিকুল ইসলামকে প্রধান এবং স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাতজনের নাম উল্লেখ ও অজ্ঞাতনামা আরো পাঁচ-ছয় জনকে আসামি করে থানায় একটি মামলা করেন।

এ সম্পর্কে সরাইল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. মফিজ উদ্দিন ভূঁইয়া আসাদ উল্লাহকে জীবিত পাওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, তার সঙ্গে কথা বলে ব্যাপক তদন্ত শেষে পরবর্তী পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে।

Bootstrap Image Preview