Bootstrap Image Preview
ঢাকা, ২৪ বুধবার, এপ্রিল ২০২৪ | ১১ বৈশাখ ১৪৩১ | ঢাকা, ২৫ °সে

সমাবেশ নিয়ে কৌশলী বিএনপি, গুরুত্বপূর্ণ নেতা-কর্মীদের ধরপাকড়

বিডিমর্নিং ডেস্ক
প্রকাশিত: ০৭ ডিসেম্বর ২০২২, ১০:৪৩ AM
আপডেট: ০৭ ডিসেম্বর ২০২২, ১০:৪৩ AM

bdmorning Image Preview


আগামী ১০ ডিসেম্বর বিএনপির ঢাকা বিভাগীয় সমাবেশের স্থান নিয়ে এখনো অনিশ্চয়তা কাটেনি। পুলিশ সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে ২৬ শর্তে সমাবেশের অনুমতি দিলেও বিএনপি সেখানে যেতে নারাজ। চাহিদা অনুযায়ী বিকল্প স্থানে সমাবেশ করতে না দিলে শেষ পর্যন্ত নয়াপল্টনে থাকতেই অনড় দলটি। নয়াপল্টন এলাকা নিজেদের দখলের রাখতে বেশ কৌশলী ভূমিকায়ও দলটি। এরই মধ্যে নেতাকর্মীদের পদচারণায় সরগরম হয়ে উঠেছে নয়াপল্টন।

মঙ্গলবার (৬ ডিসেম্বর) সন্ধ্যা থেকে রাত পর্যন্ত ঢাকার বাইরে থেকে আসা নেতাকর্মীরা নানামুখী স্লোগান আর সরকার পতনের দাবিতে নয়াপল্টন এলাকায় অবস্থান করছেন। তারা একসঙ্গে বেশি লোক জড়ো হচ্ছেন না। অনেক নেতাকর্মীকে পল্টনের আশপাশে রাতে ঘুমাতেও দেখা গেছে। সব মিলিয়ে আগামী ১০ ডিসেম্বরের সমাবেশকে কেন্দ্র করে নয়াপল্টন এলাকা ক্রমশ উত্তাপ ছড়াচ্ছে।

ঢাকা ও আশপাশে ধরপাকড়:  এদিকে গণমাধ্যমকে বিএনপির দেওয়া তালিকা অনুযায়ী, ১ ডিসেম্বর থেকে গতকাল পর্যন্ত ঢাকা মহানগরের গ্রেপ্তার ব্যক্তিদের মধ্যে বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের গুরুত্বপূর্ণ ৪৫ নেতা-কর্মী রয়েছেন। তাঁদের মধ্যে মহানগর দক্ষিণের নিউমার্কেট থানা বিএনপির সহসভাপতি আরিফ মোল্লা, ওয়ারী থানার ৩৮ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক মুনির হোসেন, মহানগর পূর্ব ছাত্রদলের যুগ্ম আহ্বায়ক মো. হাসান এবং মহানগর উত্তরের মিরপুরের ১৩ নম্বর ওয়ার্ডের সভাপতি মেজবাহ উদ্দিন, পল্লবী থানা বিএনপির সাবেক প্রচার সম্পাদক ফারুক হোসেন, দক্ষিণখানের ৫০ নম্বর ওয়ার্ডের সাধারণ সম্পাদক আতাউর রহমান ও ভাটারার ১৪ নম্বর ওয়ার্ডের জ্যেষ্ঠ সহসভাপতি আতিকুল ইসলাম অন্যতম। এ ছাড়া ৩ ডিসেম্বর রাজশাহীতে বিএনপির সমাবেশ থেকে ফেরার পথে সাভারের আমিন বাজার থেকে যুবদলের কেন্দ্রীয় সভাপতি সুলতান সালাউদ্দিনসহ তিনজনকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।

১০ ডিসেম্বর ঢাকায় বিএনপির গণসমাবেশকে কেন্দ্র করে নেতা-কর্মীদের গ্রেপ্তার করা হচ্ছে, দলটির এমন অভিযোগের বিষয়ে ডিএমপি কমিশনার খন্দকার গোলাম ফারুক গতকাল বলেন, এ অভিযোগ তাঁর জানা নেই। পরোয়ানাভুক্ত ও মামলার আসামিদের গ্রেপ্তার করতে বিশেষ অভিযান চালানো হচ্ছে।

তবে বিশিষ্ট আইনজীবী শাহদীন মালিক বলেন, বিশেষ অভিযানে গ্রেপ্তার হওয়া এসব ব্যক্তি সম্পর্কে সরকার যা-ই বলুক, মানুষ মনে করে ১০ ডিসেম্বর বিএনপির সম্মেলনকে বাধাগ্রস্ত করতে এ কথিত অভিযান চলছে। এ ধরনের অভিযানে সরকারের প্রতি জনগণের আস্থা আরও কমবে।

বিএনপির তথ্য অনুযায়ী, ঢাকা মহানগরের বাইরে ঢাকা জেলার বিভিন্ন এলাকা থেকে দলটির ২৬ নেতা-কর্মী গ্রেপ্তার হয়েছে। আশপাশের জেলার মধ্যে মুন্সিগঞ্জ থেকে জেলা বিএনপির সভাপতি আবদুল হাইসহ জেলার ১৬ নেতা-কর্মী, নারায়ণগঞ্জে জেলা ছাত্রদলের সাবেক সহসভাপতি কাজী আরিফসহ ১৩ জন, নরসিংদী থেকে সাভার থানা বিএনপির সহসভাপতি সোহরাব হোসেনসহ ১১ নেতা-কর্মীকে গ্রেপ্তার হওয়ার তথ্য পাওয়া গেছে।

বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব ও নরসিংদী জেলার আহ্বায়ক খায়রুল কবির বলেন, নেতা-কর্মীদের মধ্যে আতঙ্ক সৃষ্টির মাধ্যমে ঢাকার গণসমাবেশকে বাধাগ্রস্ত করতে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ পুলিশকে ব্যবহার করছে। ‘গায়েবি’ মামলা করে জনমনে আতঙ্ক সৃষ্টি করা হচ্ছে।

প্রতিনিধিদের পাঠানো তথ্যানুযায়ী, বিশেষ অভিযান শুরুর পর নরসিংদীর সাতটি থানায় বিএনপি ও এর অঙ্গসংগঠনের ৪১৯ নেতা–কর্মীর নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাতনামা আরও ৯৪০ নেতা–কর্মীকে আসামি করে ১৬টি নতুন মামলা করেছে পুলিশ। এই জেলায় গত পাঁচ দিনে বিএনপির ৬৭ জন নেতা–কর্মীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তাঁদের মধ্যে রয়েছেন জেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক ফাইজুর রহমান, শহর শাখার সাধারণ সম্পাদক ফারুক উদ্দিন ভূঁইয়া, শহর যুবদলের আহ্বায়ক মাহমুদ হোসেন চৌধুরী, রায়পুরা উপজেলা বিএনপির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক নাজমুল হক ভূঁইয়া ও মাধবদী থানা যুবদলের সদস্যসচিব শহীদুজ্জামান উল্লেখযোগ্য।

একই সময়ে নারায়ণগঞ্জে ১১টি মামলা দায়েরের তথ্য পাওয়া গেছে। এসব মামলায় বিএনপির ৩১৫ জন নেতা–কর্মীর নাম উল্লেখ করা হয়। তাঁদের সঙ্গে অজ্ঞাতনামা আরও ৮০০ জনকে আসামি করা হয়েছে। গ্রেপ্তার করা হয়েছে ১৭০ জনকে। তাঁদের মধ্যে বিএনপির শতাধিক নেতা–কর্মী রয়েছেন বলে দলটির দাবি।

মানিকগঞ্জ সদর থানায় ১৭ জন নেতা-কর্মীর নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাতনামা ১৫–২০ জনের বিরুদ্ধে নাশকতার মামলা করা হয়েছে। বিশেষ অভিযানে গ্রেপ্তার করা হয়েছে আটজন নেতা-কর্মীকে।

Bootstrap Image Preview