ইস্তাম্বুলে বোমা হামলার জবাব দিতে শুরু তুরস্ক সরকার। হামলার এক সপ্তাহ পর রোববার ইরাক ও সিরিয়ায় কুর্দি ঘাঁটিগুলোয় বিমান হামলা শুরু করেছে আঙ্কারা। তুর্কি প্রেসিডেন্ট এরদোয়াঁর দাবি, কুর্দি জঙ্গিরা ইস্তাম্বুলে হামলা চালিয়েছে।
তুরস্কের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় জানায়, ‘অপারেশন ক্লো-সোর্ড’ নাম দেয়া হয়েছে অভিযানের। যেসব কুর্দি ঘাঁটি ব্যবহার করে তুরস্কে হামলা চালানো হয়েছে, তাদের বিমান হামলার লক্ষ্যবস্তু সেসব ঘাঁটি।
সিরিয়ান কুর্দিদের এক মুখপাত্র বিবিসিকে জানান, অভ্যন্তরীণভাবে বাস্তুচ্যুত দুটি জনবহুল গ্রাম আক্রান্ত হয়েছে। নিষিদ্ধ কুর্দি সংগঠন পিকেকে ইস্তাম্বুলে হামলা চালানোর কথা অস্বীকার করেছে।
বিমান হামলা শুরুর সঙ্গে সঙ্গে তুরস্কের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় টুইটে বলে, ‘হিসাব নেয়ার সময় এসে গেছে।’
টুইটে একটি যুদ্ধবিমান উড্ডয়নের ছবি এবং একটি বিস্ফোরণের ফুটেজও প্রকাশ করা হয়।
তুরস্কের প্রতিরক্ষামন্ত্রী হুলুসি আকর বলেন, ‘সন্ত্রাসীদের আশ্রয়কেন্দ্র, বাঙ্কার, গুহা, টানেল এবং গুদামগুলো সফলভাবে ধ্বংস করা হয়েছে।’
বিমান হামলার কড়া জবাবের ঘোষণা দিয়েছে সিরিয়ায় কুর্দি নেতৃত্বাধীন বাহিনী। তারা বলছে, কোবানে শহরের পাশাপাশি দুটি ঘনবসতিপূর্ণ গ্রাম হামলায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
অসমর্থিত কিছু প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সেখানে অনেক হতাহতের ঘটনা ঘটেছে। তবে ইরাকে কোন লক্ষ্যবস্তুতে হামলা হয়েছে, তা স্পষ্ট নয়।
ইস্তাম্বুলের ব্যস্ততম রাস্তায় বোমা হামলার এক সপ্তাহ পর এই অভিযান চালানো হয়। ওই ঘটনায় ৬ জন নিহত এবং ৮০ জনেরও বেশি মানুষ আহত হয়।
তুর্কি কর্তৃপক্ষ বোমা হামলার জন্য কুর্দি জঙ্গি গোষ্ঠী পিকেকেকে দায়ী করেছে। তুরস্ক, ইইউ এবং যুক্তরাষ্ট্র পিকেকে-কে একটি সন্ত্রাসী সংগঠন হিসেবে বিবেচনা করে।
যদিও সরাসরি বেসামরিক লোকদের লক্ষ্যবস্তু করবে না বলে জানিয়েছে পিকেকে। ইস্তাম্বুলের হামলায় অভিযোগও অস্বীকার করেছে তারা।
হামলায় জড়িত থাকার অভিযোগে কয়েক ডজন মানষকে গ্রেপ্তার করেছে তুর্কি কর্তৃপক্ষ; তাদের মধ্যে একজন সিরিয়ান নারীও আছেন। বলা হচ্ছে, এই নারীই বোমাটি পেতেছিলেন।
গ্রেপ্তারের আগে তুরস্কের বিচারমন্ত্রী জানিয়েছিলেন, যেখানে বিস্ফোরণ ঘটে, সেখানের একটি বেঞ্চে এক নারী ৪০ মিনিট বসে ছিলেন। তিনি ওঠে যাওয়ার পর ব্যাগে থাকা বোমাটি বিস্ফোরিত হয়।
বার্তা সংস্থা এএফপি বলছে, হামলার ঘটনায় বুলগেরিয়ায় পাঁচজনকে অভিযুক্ত করা হয়েছে।
দক্ষিণ-পূর্ব তুরস্কে কুর্দি স্বশাসন অর্জনের জন্য কয়েক দশক ধরে লড়াই করে আসছে কুর্দি যোদ্ধারা।
সাম্প্রতিক বছরগুলোতে নিজেদের ভূখণ্ডে হামলা ঠেকানোর লক্ষ্যে উত্তর ইরাক এবং সিরিয়ায় অবস্থিত কুর্দি গোষ্ঠীগুলোকে লক্ষ্য করে বেশ কয়েকটি আন্তঃসীমান্ত অভিযান পরিচালনা করেছে আঙ্কারা।