Bootstrap Image Preview
ঢাকা, ২৫ বৃহস্পতিবার, এপ্রিল ২০২৪ | ১২ বৈশাখ ১৪৩১ | ঢাকা, ২৫ °সে

মরিয়ম মান্নানর সাথে কোনোভাবেই কথা বলছে না মা!

বিডিমর্নিং ডেস্ক
প্রকাশিত: ২৫ সেপ্টেম্বর ২০২২, ০২:১২ PM
আপডেট: ২৫ সেপ্টেম্বর ২০২২, ০২:১২ PM

bdmorning Image Preview


ফরিদপুরের বোয়ালমারী থেকে উদ্ধারের পর খুলনার দৌলতপুর থানা হেফাজতে নেয়ার পর এখনও মুখ খোলেননি মরিয়ম মান্নানের মা রহিমা বেগম।

মায়ের নিখোঁজের তথ্য জানিয়ে প্রায় এক মাস ধরে তার সন্ধান করছিলেন তার মেয়ে মরিয়ম মান্নান। মরিয়মের কান্নার ছবি ছুঁয়ে যায় সবাইকে।

উদ্ধার হওয়ার পর রহিমাকে সোনাডাঙায় ভিকটিম সাপোর্ট সেন্টারে রাখা হয়েছে। মরিয়ম মান্নানসহ অন্য সন্তানেরা রোববার সকালে সেখানে গেলেও তাদের সঙ্গে কথা বলেননি রহিমা।

সকালে মায়ের সাথে দেখা করতে যান মরিয়ম ও তার ভাই-বোনরা। সংবাদকর্মীদের অনেকে সে সময় ঘটনাস্থলে উপস্থিত ছিলেন। তবে কোনোভাবেই পরিবারের সঙ্গে দেখা করতে রাজি হচ্ছিলেন না রহিমা।

পরে পুলিশের অনুরোধ ভিকটিম সাপোর্ট সেন্টারের জানালার কাছে এসে দাঁড়ান রহিমা বেগম। মরিয়ম মান্নান এ সময় ‘মা’ বলে ডাক দিলে তিনি মুখ ঘুরিয়ে নিয়ে হেঁটে চলে যান।

ভিকটিম সাপোর্ট সেন্টার থেকে সকাল সাড়ে ১০টার দিকে রহিমা বেগমকে বুঝে নেয় পিবিআই।

তাকে জিজ্ঞেসাবাদ শেষে বেলা সাড়ে ১১টার দিকে সাংবাদিকদের ব্রিফ করেন পিবিআই খুলনার পুলিশ সুপার সৈয়দ মুশফিকুর রহমান।

তিনি বলেন, ‘আমরা রহিমাকে আনার পর তেমন কোনো কথা তিনি বলেননি। সকালে পরিবারের সঙ্গেও দেখা করতে চাননি। কী কারণে তিনি এমন করছেন বুঝতে পারছি না।’

মরিয়ম মান্নানের বিষয়ে তিনি বলেন, ‘মরিয়ম বারবার ফেসবুকে পোস্ট দিয়ে আমাদের বিভ্রান্ত করেছেন। এটা তার ঠিক হয়নি।’

এর আগে শনিবার রাতে দৌলতপুর থানার নামপ্রকাশে অনিচ্ছুক এক কর্মকর্তা নিউজবাংলাকে বলেন, ‘জমিসংক্রান্ত বিরোধের জেরে প্রতিপক্ষকে ফাঁসাতে রহিমা ও তার মেয়েরা অপহরণের নাটক সাজান। রহিমা আত্মগোপনে যাওয়ার পর অজ্ঞাতপরিচয় যেকোনো নারীর মরদেহকে মায়ের বলে দাবি করার পরিকল্পনাও সাজিয়ে রেখেছিলেন তার মেয়েরা।’

রহিমা বেগম আত্মগোপন ছিলেন দাবি করে পিবিআই খুলনার পুলিশ সুপার সৈয়দ মুশফিকুর রহমান বলেন, ‘উদ্ধারের সময় রহিমা বেগমের কাছে জামাকাপড় ছিল। ওষুধ ছিল। এটাকে অপহরণ বলা যায় না।’

মরিময়সহ তার ভাই-বোনদের জিজ্ঞাসবাদ করা হবে কিনা- এমন প্রশ্নের সরাসরি জবাব দেননি মুশফিকুর রহমান। তিনি বলেন, ‘এটা তদন্তের বিষয়। রহস্য উদঘাটন না হওয়া পর্যন্ত আমরা কিছু বলতে পারব না।’

এদিকে, পিবিআই প্রধান বনজ কুমার মজুমদার নিউজবাংলাকে বলেন, ‘মাকে উদ্ধারের পর মরিয়ম মান্নান কোনো কথা বলছেন না। যে বাড়িতে উনার মাকে পাওয়া গেছে, সেখানে আমাদের সদস্যরা যাচ্ছেন। তারা ওদের সঙ্গে কথা বলবেন, তিনি ওই বাড়িতে কেন গিয়েছিলেন তা জানান চেষ্টা করা হবে।’

রহিমা বেগমের নিখোঁজ হওয়ার বিষয়ে পিবিআই কোনো ডিজিটাল প্রমাণ পায়নি বলে জানান সংস্থাটির প্রধান।

ফরিদপুরের বোয়ালমারী উপজেলার সৈয়দপুর গ্রাম থেকে রাত সাড়ে ১০টার দিকে রহিমা বেগমকে উদ্ধার করা হয়। এরপর পুলিশের একটি দল রাত ২টার দিকে রহিমা বেগমকে নিয়ে খুলনার দৌলতপুর থানায় পৌঁছায়।

পুলিশ জানায়, রহিমা বেগমের খুলনার বাড়িতে বেশ কয়েক বছর আগে কুদ্দুস মোল্লা নামের এক ব্যক্তি ভাড়া থাকতেন। তার বাড়ি ফরিদপুরের বোয়ালমারী উপজেলার সৈয়দপুরে। ওই বাড়িতেই রহিমা বেগম আত্মগোপনে ছিলেন।

এর আগে গত শুক্রবার ময়মনসিংহে ১২ দিন আগে উদ্ধার করা একটি মরদেহকে মায়ের বলে দাবি করেছিলেন মরিয়ম মান্নানসহ রহিমা বেগমের তিন মেয়ে।

গত ২৭ আগস্ট রাত সাড়ে ১০টার দিকে দৌলতপুরের মহেশ্বরপাশার বণিকপাড়া থেকে রহিমা নিখোঁজ হন বলে অভিযোগ করে তার পরিবার। রাত সোয়া ২টার দৌলতপুর থানায় অপহরণের অভিযোগে সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন রহিমার ছেলে মিরাজ আল সাদী।

সে জিডি থেকে জানা যায়, নিখোঁজের সময় রহিমার দ্বিতীয় স্বামী বেল্লাল হাওলাদার বাড়িতে ছিলেন। পানি আনতে বাসা থেকে নিচে নেমেছিলেন রহিমা। দীর্ঘ সময় পরও তার খোঁজ পাওয়া যায়নি।

মাকে পাওয়া যাচ্ছে না জানিয়ে ২৮ আগস্টে দৌলতপুর থানায় বাদী হয়ে মামলা করেন রহিমার মেয়ে আদুরী।

রহিমা অপহৃত হয়েছেন দাবি করে ১ সেপ্টেম্বর খুলনায় সংবাদ সম্মেলন করেন পরিবারের সদস্যরা।

রহিমার সঙ্গে জমি নিয়ে স্থানীয়দের মামলা চলছে বলেও সে সময় জানানো হয়েছিল। রহিমার করা সেই মামলায় আসামিরা হলেন প্রতিবেশী মঈন উদ্দিন, গোলাম কিবরিয়া, রফিুকল ইসলাম পলাশ, মোহাম্মাদ জুয়েল ও হেলাল শরীফ।

আদালত ১৪ সেপ্টেম্বর রহিমা অপহরণ মামলা পিবিআইতে পাঠানোর আদেশ দেয়। এরপর ১৭ সেপ্টেম্বর নথিপত্র বুঝে নেয় পিবিআই।

Bootstrap Image Preview