আর্থিক সংকটে-প্রতিবন্ধী কিশোর ছেলেকে (১৪) দিয়ে ভিক্ষা করিয়ে সংসার চালাচ্ছেন খুন হওয়া শিক্ষকের স্ত্রী। অভাবের কারণে প্রতিবন্ধী ছেলেকে দিয়ে ভিক্ষাবৃত্তি করেই সংসার চালাচ্ছেন। সরকারসহ বিত্তবানদের সহযোগিতা কামনা করেছেন নিহত শিক্ষকের স্ত্রী কোহিনুর বেগম। জানা যায়, তিনি ২০১৬ সালে লক্ষ্মীপুরের রায়পুরে কেরোয়া ইউপির মোল্লারহাট গ্রামে পীর ফজলুল্মাহ ইসলামি মিশন দাখিল মাদ্রাসা জুনিয়র শিক্ষক ছিলেন। সাত বছর আগে আনোয়ার উল্লাহ মৌলভীর বাড়িতে জমিসংক্রান্ত বিরোধের জের ধরে প্রতিবেশীর হাতে নির্মম হত্যার শিকার হন তিনি। তার স্ত্রী কোহিনুর বেগম, এক মেয়ে ও দুই ছেলে রয়েছে। শিক্ষকের বড় ছেলে রিফাত হোসেন বাক ও শারীরিকপ্রতিবন্ধী। সে ৯০০ টাকা প্রতিবন্ধী ভাতাও পাচ্ছে।
নিহত শিক্ষকের স্ত্রী কোহিনুর জানান, ২০১৬ সালে জমিসংক্রান্ত বিরোধের জেরে তার শিক্ষক স্বামীকে পিটিয়ে হত্যা করে কয়েকজন প্রতিবেশী। থানায় মামলা হলে আসামিরা উচ্চ আদালত থেকে জামিনে বের হয়ে বর্তমানে বীরদর্পে চলাফেরা করছে। অর্থ সংকটের কারণে মামলাও চালাতে পারছেন না তিনি। তিনি বলেন, স্বজন ও প্রতিবেশীর কাছ থেকে এতদিন ধারদেনা করে চলেছি। আর সংসার চালাতে পারছি না। সোমবার থেকে রান্না করি না। চাল থাকলে, তরকারি নাই, তরকারি থাকলে চাল নাই। এ অবস্থায় অবুঝ শিশুসন্তানদের কান্না সইতে পারি না। কোনো বাসায় কাজ করতে গেলে লোকেরা খারাপ চোখে দেখে আর আজেবাজে কথা বলে।
তিনি আরও বলেন, প্রতিবন্ধী ছেলে ছয় মাস অন্তর ৯০০ টাকা করে ভাতা পায়। নিহত শিক্ষকের স্ত্রীর মনে এই প্রশ্ন বারবার উঁকি দেয়— স্বামীকে হত্যার সাত বছর চলে যাচ্ছে, কবে শুরু হবে বিচার, সমাজের কাছে কী পেলেন তিনি।কেরোয়া ইউপির সদস্য শিপন মোল্লা যুগান্তরকে বলেন, নিহত শিক্ষক পরিবারের বড় ছেলেকে প্রতিবন্ধী ভাতা দেওয়া হচ্ছে। বিভিন্ন সময় সরকারের দেওয়া সুযোগ-সুবিধাও দেওয়া হচ্ছে।