Bootstrap Image Preview
ঢাকা, ২৪ বুধবার, এপ্রিল ২০২৪ | ১১ বৈশাখ ১৪৩১ | ঢাকা, ২৫ °সে

মিয়ানমারে সেনা হেলিকপ্টার থেকে স্কুলে গুলি, ৬ শিশু নিহত

বিডিমর্নিং ডেস্ক
প্রকাশিত: ২০ সেপ্টেম্বর ২০২২, ০১:১৬ PM
আপডেট: ২০ সেপ্টেম্বর ২০২২, ০১:২০ PM

bdmorning Image Preview


মিয়ানমারের সাগাইং অঞ্চলের একটি স্কুলে সেনাবাহিনীর গুলিতে অন্তত ০৬ শিশু নিহত এবং তিন শিক্ষকসহ আরও ১৭ জন আহত হয়েছেন। গত শুক্রবার (১৬ সেপ্টেম্বর) লেট ইয়েট কোন গ্রামের একটি স্কুলে এ হামলার পর সেনারা হতাহতদের দেহ জোরপূর্বক তুলে নিয়ে গেছে বলেও অভিযোগ উঠেছে। স্থানীয় সূত্রের বরাতে এ খবর জানিয়েছে মিয়ানমার-ভিত্তিক সংবাদমাধ্যম ইরাবতি।

খবরে বলা হয়েছে, গত শুক্রবার স্থানীয় সময় দুপুর ১টার দিকে একটি সন্ন্যাসী স্কুলের ওপর আচমকা গুলিবর্ষণ শুরু করে সেনাবাহিনীর দুটি এমআই-৩৫ হেলিকপ্টার। এতে ঘটনাস্থলেই সাত শিশু প্রাণ হারায়। আহত হন তিন শিক্ষক ও আরও ১৪ শিশু। পরে সেনারা মাটিতে নেমে গ্রামে অভিযান চালালে আরও দুই শিশু মারা যায়।

স্থানীয়দের অভিযোগ, হামলার পর প্রমাণ লোপাটের চেষ্টায় হতাহতদের দেহ জোর করে তুলে নিয়ে গেছে সেনারা। আহতদের স্থানীয় একটি হাসপাতালে ভর্তি এবং নিহতদের ১১ কিলোমিটার দূরে একটি সমাধিক্ষেত্রে দাহ করেছে তারা।

পরের দিন সেনারা আরও দুটি মরদেহ দাহ করেছে বলে জানিয়েছেন স্থানীয়রা। তাদের ধারণা, ওই দুজন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছে।

হেলিকপ্টার থেকে হামলার পরে স্কুলটি দেখতে গিয়েছিলেন এমন এক গ্রামবাসী বলেন, গাড়িতে নিয়ে যাওয়া কয়েকটি শিশুর শরীরের নিচের অংশ বা অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ ছিন্ন-বিচ্ছিন্ন ছিল। একটি [খণ্ডিত] শিশুকে মুড়িয়ে বাঁশের ঝুড়িতে রাখা হয়েছিল। স্কুলের ভেতরে রীতিমতো রক্তের পুকুর তৈরি হয়েছিল। ফ্যান, দেওয়াল, ছাদ- সব জায়গায় মাংসের টুকরো ছড়িয়ে ছিটিয়ে ছিল।

লেট ইয়েট কোন গ্রামের আরেক বাসিন্দা বলেন, দুই সন্তানের খোঁজে স্কুলে গিয়েছিলেন তাদের বাবা-মা। কিন্তু সেখানে সন্তানদের পোশাক ছাড়া আর কিছুই ছিল না। জান্তা সৈন্যরা বাচ্চাদের শরীরের একটি অংশও রেখে যায়নি। তাই বাবা-মা সন্তানদের অন্ত্যেষ্টিক্রিয়াও করতে পারেননি।

এদিকে, স্থানীয় সংবাদমাধ্যমের বরাতে বার্তা সংস্থা রয়টার্স জানিয়েছে, মিয়ানমার সেনাদের হেলিকপ্টার থেকে ছোড়া গুলিতে ছয় শিশু নিহত এবং ১৭ জন আহত হয়েছেন। তবে স্বাধীনভাবে এ তথ্য নিশ্চিত করতে পারেনি সংস্থাটি।

গণমাধ্যমে প্রকাশিত ছবিতে ক্ষতিগ্রস্ত স্কুলের ভেতরে রক্তের দাগ ও বইপত্র, স্কুলব্যাগ ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকতে দেখা গেছে।

এক বিবৃতিতে মিয়ানমার সামরিক বাহিনী বলেছে, বিদ্রোহী গোষ্ঠী কাচিন ইন্ডিপেনডেন্স আর্মি (কেআইএ) ও পিপলস ডিফেন্স ফোর্সের (পিডিএফ) সদস্যরা ওই ভবনটিতে লুকিয়ে ছিল। অস্ত্র পরিবহনের জন্য গ্রামটি ব্যবহার করতো তারা।

বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ঘটনাস্থলে হেলিকপ্টারে করে ‘আচমকা পরিদর্শন’-এ গিয়েছিল নিরাপত্তা বাহিনী। সেখানে তারা পিডিএফ এবং কেআইএ’র আক্রমণের মুখে পড়ে।

মিয়ানমার সেনাদের দাবি, নিরাপত্তা বাহিনী প্রতিক্রিয়া জানাতে গুলি ছোড়ে। এই সংঘর্ষে কিছু গ্রামবাসী নিহত হয়েছেন এবং আহতদের চিকিৎসার জন্য সরকারি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছে।

বিবৃতিতে সশস্ত্র গোষ্ঠীগুলোকে গ্রামবাসীদের মানবঢাল হিসেবে ব্যবহার করার অভিযোগ আনা হয়েছে এবং বলা হয়েছে, ঘটনাস্থল থেকে ১৬টি হাতে তৈরি বোমাসহ অস্ত্রশস্ত্র উদ্ধার করা হয়েছে।

Bootstrap Image Preview