Bootstrap Image Preview
ঢাকা, ২৬ শুক্রবার, এপ্রিল ২০২৪ | ১৩ বৈশাখ ১৪৩১ | ঢাকা, ২৫ °সে

শুরু হয়েছে সর্বাত্মক হামলা, মিয়ানমারের ১৫০০ সেনা নিহত

বিডিমর্নিং ডেস্ক
প্রকাশিত: ০৪ সেপ্টেম্বর ২০২২, ০১:০৯ AM
আপডেট: ০৪ সেপ্টেম্বর ২০২২, ০১:০৯ AM

bdmorning Image Preview


মিয়ানমারে চলমান গৃহযুদ্ধের ফলে অধিক সংখ্যক শরণার্থীকে ভারতে ঠেলে দিচ্ছে। টাইমস অব ইন্ডিয়ার এক খবরে এ কথা জানিয়ে বলা হয়েছে, মিয়ানমারের সঙ্গে ভারতের আছে অভিন্ন ১৬০০ কিলোমিটার স্থল সীমান্ত। কিন্তু বাংলাদেশ সীমান্তবর্তী রাখাইন প্রদেশের মংডু শহরে জেট বিমান ও হেলিকপ্টার সহ সামরিক বিমান  থেকে বৃহস্পতিবার বোমা হামলা করা হয়েছে। দ্য ইরাবতীকে উদ্ধৃত করে রিপোর্টে বলা হয়, আরাকান আর্মির বিদ্রোহীরা আউটপোস্টের এক পুলিশকে আটক করার পর সেনাবাহিনী এই বিমান হামলা শুরু করে।

এদিকে মিয়ানমারের দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলীয় কায়াহ রাজ্যে ২০২১ সালের মে থেকে এ পর্যন্ত প্রায় দেড় হাজার সেনা সদস্য নিহত হয়েছেন। এই ১৫ মাসে সরকারি বাহিনীর সঙ্গে সংঘর্ষে নিহত হয়েছেন দেড় শতাধিক সশস্ত্র প্রতিরোধ যোদ্ধা।

গত বছরের মে থেকে এই অঞ্চলে সামরিক শাসনের বিরুদ্ধে সশস্ত্র প্রতিরোধ শুরু হওয়ার পর থেকে প্রতিদিনই তীব্র গোলাগুলি, বিমান ও কামান হামলার খবর পাওয়া যাচ্ছে। অঞ্চলটিতে ন্যাশনালিটিজ ডিফেন্স ফোর্স (কেএনডিএফ), কারেন আর্মি (কেএ) সহ আরও কয়েকটি সশস্ত্র প্রতিরোধ গোষ্ঠী সামরিক বাহিনীর বিরুদ্ধে লড়াই করছে।

 

এদিকে জাতিগত সশস্ত্র ওই গ্রুপটি ১৭ জন পুলিশকে হত্যা করেছে বলে দাবি করা হয়েছে। অভিযোগে আরও বলা হয়েছে, এ সময় তারা অস্ত্রশস্ত্র ও সামরিক সরঞ্জাম জব্দ করেছে। জবাবে সামরিক জান্তা অধিক সংখ্যক সেনা ও সমরাস্ত্রের সমাবেশ ঘটিয়েছে। দেখে মনে হচ্ছে এটা সর্বাত্মক এক হামলা। ২রা আগস্ট থেকে ওই এলাকায় এবং চিন রাজ্যের পালেটওয়া শহরে ভারী যুদ্ধ চলছে। চিন রাজ্যটি ভারতের মিজোরামের সঙ্গে সীমান্ত শেয়ার করে।কর্মকর্তারা বলছেন, সর্বশেষ এই সামরিক অপারেশনের ফলে মিজোরামের দক্ষিণে সীমান্তবর্তী জেলা লাওংত্লাই’তে নতুন করে শরণার্থীর ঢল নেমেছে। শুক্রবার নাগাদ ওই জেলায় মিয়ানমারের কমপক্ষে ৫০০ মানুষ গিয়ে আশ্রয় নিয়েছেন।

কর্মকর্তারা আরও বলেছেন, বিদ্রোহী গ্রুপগুলোর বিরুদ্ধে তাদের আক্রমণ আরও জোরালো করার প্রস্তুতি নিচ্ছে সামরিক জান্তা। এর ফলে শরণার্থীর সংখ্যা আরও বাড়ার আশংকা করা হচ্ছে।  ওই রিপোর্টে আরও বলা হয়, ২০২১ সালের ১লা ফেব্রুয়ারি মিয়ানমারে সামরিক অভ্যুত্থান ঘটে। এরপর মিয়ানমারে যে গৃহযুদ্ধ শুরু হয়েছে তাতে কমপক্ষে ৩০ হাজার মানুষকে এরই মধ্যে আশ্রয় দিয়েছে মিজোরাম। তবে সমস্যাটা হলো, ১৯৫১ সালের ইউএন রিফিউজি কনভেনশন বা ১৯৬৭ সালের প্রটোকলে স্বাক্ষরকারী দেশ নয় ভারত। যেসব মানুষ ভারতে আশ্রয় নিচ্ছেন, তাদেরকে সরকারিভাবে শরণার্থী মর্যাদা দিচ্ছে না কেন্দ্রীয় সরকার, যদিও এক্ষেত্রে মানবিক আবেদন আছে। তবে তাদেরকে বেআইনি অভিবাসী হিসেবে বিবেচনা করে ভারত।  তাই বলে, যারা ভারতে আশ্রয় প্রার্থনা করছেন তাদেরকে সহায়তা করা থেকে বিরত থাকছে না মিজোরাম। কেন্দ্রীয় সরকারের একটি নোটিফিকেশন প্রকাশ্যে অস্বীকার করেছে রাজ্য এবং রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী জোরামথাঙ্গা এ বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে একটি চিঠি লিখেছেন। তাতে তিনি বলেছেন, মিয়ানমারের যেসব ভাইয়েরা তাদের জীবন নিয়ে পালিয়ে আসছেন, তাদেরকে আশ্রয় দেয়ার বিষয়টি প্রত্যাখ্যান করতে পারে না মিজোরাম।  মিয়ানমারের চিন রাজ্যের জনগণের সঙ্গে মিজোরামের জনগণের জাতিগত একটি সম্পর্ক আছে। ঐতিহাসিকভাবে, মিয়ানমারে সামরিক নিষ্পেষণকারীদের কবল থেকে পালিয়ে যাওয়া চিন সম্প্রদায়ের প্রাথমিক গন্তব্য হলো মিজোরাম।

 এই সংকটকে কার্যকরভাবে ম্যানেজ করার জন্য মিজোরাম সরকার কমপক্ষে ৩০ হাজার শরণার্থীকে এরই মধ্যে আইডেনটিটি কার্ড বা পরিচয়পত্র ইস্যু করেছে। মিজোরামে শুধু পরিচয়ের জন্য এসব কার্ড ব্যবহার করা যাবে। সরকারি কোনো স্কিমের জন্য তা বৈধ হবে না।  ওদিকে ক্যাডারদের শক্তি ক্ষয় হয়ে আসার মুখে নিষিদ্ধ ঘোষিত বিচ্ছিন্নতাবাদী সংগঠন ইউনাইটেড লিবারেশন ফ্রন্ট অব আসাম (ইন্ডিপেন্ডেন্ট) বা উলফা (আই) এই সুযোগে তাদের নতুন সদস্য সংগ্রহ করছে। একই সময়ে তারা গুপ্তচরবৃত্তি এবং পুলিশ ইনফরমার হিসেবে কাজ শুরু করেছে। একজন সদস্য সম্প্রতি কয়েকবার মিয়ানমারে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করার অভিযোগে এই সংগঠন তাকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছে। এর নিজস্ব ধরনের করপোরাল রিহোন আওম’কে ষড়যন্ত্র, বিপ্লব বিরোধী কর্মকাণ্ড, পুলিশের পক্ষে গুপ্তচরবৃত্তি এবং অন্যান্য অপরাধে অভিযুক্ত করা হয়। পরেশ বড়ুয়া নেতৃত্বাধীন এই বিদ্রোহী গ্রুপ এক বিবৃতিতে এসব কথা বলেছে। মে মাসের দিকে তারা একই রকম অভিযোগে হত্যা করেছে আরও দু’জনকে।

Bootstrap Image Preview