মানিকগঞ্জের ঘিওরে স্ত্রীকে গলা কেটে হত্যার ঘটনায় স্বামী রূপককে আসামি করে হত্যা মামলা করেছেন নিহত সুমি আক্তারের পিতা রহম আলী। গত বৃহস্পতিবার রাত ১০টার দিকে ঘিওর থানায় এই মামলা করা হয়। তবে এখন পর্যন্ত পুলিশ ঘাতক রূপককে আটক করতে পারেনি।
মানিকগঞ্জ সদর হাসপাতালে ময়নাতদন্ত শেষে গতকাল দুপুরে সুমির মরদেহ তার বাবার বাড়ি বানিয়াজুরী ইউনিয়নের কাকজোর গ্রামে নিয়ে আসা হয়। বিকাল ৪টার দিকে প্রাইমারি স্কুলের মাঠে জানাজা শেষে স্থানীয় কবরস্থানে তার দাফন সম্পন্ন হয়েছে। জানাজায় গ্রামের শত শত মানুষ অংশ নেন। এ সময় স্বজন ও এলাকাবাসীর কান্নাকাটি ও আর্তনাদে পুরো এলাকা ভারি হয়ে ওঠে।
জানাজা নামাজে দাঁড়িয়ে নিহতের পিতা রহম আলী কান্না জড়িত কণ্ঠে বলেন, সবেমাত্র আমার মেয়ের বিয়ে হয়েছে। ভেবেছিলাম ওরা সুখে শান্তিতে সংসার করবে। কিন্ত এমন কী হয়েছে যার কারণে মেয়েকে গলা কেটে হত্যা করা হলো। আমার মেয়েকে যারা গলা কেটে নির্মমভাবে হত্যা করেছে আমি তাদের বিচার চাই, ফাঁসি চাই। জানাজা নামাজে নামাজে উপস্থিত ছিলেন বানিয়াজুরী ইউপি চেয়ারম্যান এস আর আনসারী বিল্টুসহ বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ।
নিহত সুমির বাবার বাড়ি বানিয়াজুরী ইউনিয়নের কাকজোর গ্রামে। ৩ মাস আগে পার্শ্ববর্তী শোলধারা গ্রামের মরহুম আব্দুর রশিদের ছেলে রূপক (২৮)’র সঙ্গে বিয়ে হয়। রূপক পেশায় মুহুরী, তিনি মানিকগঞ্জ জজ কোর্টে কাজ করতেন। তবে এ ঘটনায় শাশুড়ি আহতের তথ্য নিশ্চিত করেছেন শিবালয় সার্কেল নুরজাহান লাবলী।
শিবালয় সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার নুরজাহান লাবলী বলেন, বৃহস্পতিবার দুপুর আড়াইটা নাগাদ মানিকগঞ্জের একজন আইনজীবী ফোন করে আমাদের জানায় তার খালাতো বোন গলায় আঘাতপ্রাপ্ত হয়েছে তাকে হাসপাতালে ভর্তি করা হবে তার জন্য একটি জিডি প্রয়োজন। আমরা তার কাছে জানতে চাই কীভাবে আঘাতপ্রাপ্ত হয়েছে। তিনি জানিয়েছেন ছেলের বৌ নাকি এই ঘটনা ঘটিয়েছে। এ কথা শোনার পর অভিযুক্ত আসামিকে (ছেলের বৌ) গ্রেপ্তারের জন্য শোলধারা গ্রামে চলে আসি। এসে দেখি দরজা বাহির থেকে লক করা। পরে ঘরের ভেতরের একটি ষ্টোর রুমে গিয়ে দেখি অভিযুক্ত ছেলের বৌয়ের গলা কাটা লাশ পড়ে আছে। পেছনে হাত বাঁধা অবস্থায় ছিল। ধারণা করা হচ্ছে পারিবারিক কোনো ঘটনার জেরে এই হত্যাকাণ্ডটি ঘটে থাকতে পারে।
ঘিওর থানার ওসি মো. রিয়াজ উদ্দিন আহমেদ বিপ্লব বলেন, হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় রূপককে আসামি করে একটি মামলা দায়ের করেছে নিহত সুমির বাবা। আমরা উন্নত প্রযুক্তি ব্যবহার করে আসামি শনাক্ত ও গ্রেপ্তারে জোর প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি।