Bootstrap Image Preview
ঢাকা, ১৯ মঙ্গলবার, মার্চ ২০২৪ | ৫ চৈত্র ১৪৩০ | ঢাকা, ২৫ °সে

এবার গান-বাদ্যে শর্তাবলী দিয়ে আলোচনায় ইউপি চেয়ারম্যান মাওলানা সাইফুল্লাহ

বিডিমর্নিং ডেস্ক
প্রকাশিত: ২৫ জুন ২০২২, ০৬:৫০ AM
আপডেট: ২৫ জুন ২০২২, ০৬:৫০ AM

bdmorning Image Preview
ছবি সংগৃহীত


ফের আলোচনায় লক্ষ্মীপুরের কমলনগর উপজেলার চরকাদিরা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মাওলানা খালেদ সাইফুল্লাহ। রাতে বিয়েসহ অন্যান্য অনুষ্ঠানে উচ্চৈঃস্বরে গান-বাজনা চালানো নিয়ে সতর্কবার্তা জারি করেছেন। তিনি বলেছেন, এ নির্দেশনা লঙ্ঘনে জরিমানাও গুনতে হতে পারে।  স্থানীয় চরকাদিরার আওলিয়ানগর মাদরাসা মাঠে গত ১১, ১২, ১৩ ফেব্রুয়ারি বার্ষিক মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়।

সেখানে ১২ ফেব্রুয়ারি গান-বাজনার জরিমানা ও ছাত্রীদের বোরকা পরা সংক্রান্ত বক্তব্য দেন চেয়ারম্যান খালেদ সাইফুল্লাহ। তিনিই ওই মাহফিলের আয়োজক ছিলেন। তাঁর ওই বক্তব্য এলাকায় প্রতিক্রিয়ার জন্ম দেয় বলে স্থানীয়ভাবে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে।

এদিকে হাফেজ মনিরুল ইসলাম নামে এক ফেসবুক ব্যবহারকারীকে চেয়ারম্যানের সতর্কবার্তা ফেসবুকে প্রচার করতে দেখা যায়। সোমবার (১৪ মার্চ) স্থানীয়ভাবে তা ছড়িয়ে পড়ে। উল্লিখিত চেয়ারম্যান ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের উপদেষ্টা। একজন চেয়ারম্যানের ৭৫ হাজার টাকা পর্যন্ত জরিমানা করার নিয়ম রয়েছে।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে চেয়ারম্যান খালেদ সাইফুল্লাহ বলেন, রাতে উচ্চৈঃস্বরে গান-বাজনা হলে মানুষ ঘুমাতে পারে না। এ জন্য রাতে গান-বাজনা না করতে সবাইকে সতর্ক করা হয়েছে। মানুষ অভিযোগ দিলে জরিমানা করা হবে। যেহেতু চেয়ারম্যান হিসেবে ৭৫ হাজার টাকা পর্যন্ত জরিমানা করা সম্ভব। আমার ফেসবুক আইডি নেই। কে বা কারা আমার নাম দিয়ে ফেসবুক চালাচ্ছে, আমি এর বিরুদ্ধে জিডি করে আইনগত ব্যবস্থা নেব।

তিনি আরো বলেন, একজন আলেম হিসেবে মা-বোন ও স্কুল-কলেজ-মাদরাসাছাত্রীদের পর্দার জন্য বোরকা পরে বাইরে বের হওয়ার পরামর্শ দিয়েছি। স্কুলে মোবাইল নিয়ে গেলে পড়ালেখায় ব্যাঘাত ঘটবে। এতে স্কুলে যেন শিক্ষার্থীরা মোবাইল নিতে না পারে সে জন্য অভিভাবকদের সতর্ক করার জন্য ওয়াজ-মাহফিলে আমি কথা বলেছি। আমার কথাগুলো কোনো আইন নয়, সতর্কবার্তা ও পরামর্শ। রাষ্ট্রের আইনের বিরুদ্ধে আমি যেতে পারি না। আমি বলেছি এক রকম, লোকজন প্রচার করছে অন্য রকম।

সোমবার ফেসবুকে স্ট্যাটাস দেওয়া হাফেজ মনিরুল ইসলামের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করেও তার বক্তব্য জানা যায়নি।

এ ব্যাপারে কমলনগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ সোলাইমান বলেন, ঘটনাটি আমি শুনেছি। ঘটনার তদন্ত চলছে। চেয়ারম্যানের সঙ্গেও কথা বলেছি। তিনি জানিয়েছেন, ফেইক আইডি থেকে এসব অপপ্রচার চালানো হচ্ছে। তিনি লিখিত অভিযোগ দেবেন বলেও জানিয়েছেন।

ফেসবুকে হাফেজ মনিরুল ইসলামের (Hafej Monirul Islam) স্ট্যাটাসটি হুবহু তুলে ধরা হলো- ‘আলহামদুলিল্লাহ, শুরু হলো ইসলামী শাসনব্যবস্থা। কাদিরা ইউনিয়নের বিয়ের অনুষ্ঠানে কোনো গানবাজনা চলবে না। যদি চলে পঁচাত্তর হাজার টাকা জরিমানা করা হবে। বাজারে কোনো গানের আওয়াজ যেন না শুনি। তোমার মন চাইলে কানে এয়ার ফোন দিয়ে শোনো, আরেকজনকে শুনাইয়ো না। যারা বক্স ভাড়া দাও, মনে রেখো এমন বাজেয়াপ্ত হবে, কোনো দিন ফিরে পাবে না। কোনো অভিভাবক বোরকা ছাড়া মেয়েদের স্কুলে পাঠাবেন না। যারা পাঠাবেন, তাদের তালিকা করব। কী ব্যবস্থা নিই, সেটা পরে দেখবেন। স্কুলে কোনো ছাত্র-ছাত্রী মোবাইল নিতে পারবে না। মোবাইল বাড়িতে চালাবে। অভিভাবক ও স্কুল কর্তৃপক্ষ খেয়াল রাখবেন। ’

নির্বাচনী প্রচারণায় মাওলানা খালেদ সাইফুল্লাহ বলেছিলেন, 'ভোটে বহিরাগত ক্যাডাররা এলে পা ভেঙে রেখে দেব। তারা (বহিরাগত) আসার আগে যেন মা-বাবা, স্ত্রী-ছেলে-মেয়ের কাছ থেকে বিদায় নিয়ে আসে। আর নারীদের উদ্দেশে বলা হয়, কেন্দ্রে ব্যালট পেপার নিয়ে কেউ টানাটানি করলে পায়ের জুতা খুলে দুই গালে ঠাস ঠাস করে মুখে বাড়ি দেবেন। তাহলে ১০ হাজার টাকা পুরস্কার পাবেন। আর একটা জুতাপেটা দিলে আমি পাঁচ হাজার টাকা দেব। ’ তার এ বক্তব্য ওই সময় গণমাধ্যমে প্রচার হলে তোলপাড় হয়। গত বছরের ১১ নভেম্বর দ্বিতীয় ধাপের ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে দ্বিতীয়বারের মতো খালেদ সাইফুল্লাহ চেয়ারম্যান (হাতপাখা) নির্বাচিত হন।

Bootstrap Image Preview