Bootstrap Image Preview
ঢাকা, ১৭ বুধবার, এপ্রিল ২০২৪ | ৩ বৈশাখ ১৪৩১ | ঢাকা, ২৫ °সে

বাঁশ-লতাপাতা দিয়ে চেষ্টা চলছে বন্যার পানি আটকানোর

বিডিমর্নিং ডেস্ক
প্রকাশিত: ২১ জুন ২০২২, ০৫:৫৭ PM
আপডেট: ২১ জুন ২০২২, ০৫:৫৭ PM

bdmorning Image Preview
ছবি সংগৃহীত


দুই দিন ধরে প্রবল বর্ষণ কিছুটা কমলেও উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢল অব্যাহত রয়েছে। ফলে কমছে না কুশিয়ার নদীর পানি। প্রতিদিনই নতুন নতুন এলাকায় ভাঙন দেখা দিচ্ছে। লোকালয়ের পানি বৃদ্ধি অব্যাহত রয়েছে। ফলে সিলেটের জকিগঞ্জে বন্যা পরিস্থিতির ক্রমেই অবনতি ঘটছে। গ্রামীণ সড়কের পাশাপাশি তলিয়ে গেছে সবকটি প্রধান সড়ক।

ইতোমধ্যে জকিগঞ্জে ৪৬ বন্যা আশ্রয়কেন্দ্র খোলা হয়েছে। এতে ৮৮৫ পরিবার আশ্রয় নিয়েছে। জকিগঞ্জে কুশিয়ারা নদীর বড়চালিয়া, আমলসীদ, পিল্লাকান্দি, রারাই, মানিকপুর, লোহারমহল, সুপ্রাকান্দি, গড়রগ্রাম, পীরনগর, লাফাকোনা ও সুরমা নদীর মুন্সিবাজার, রঘুরচক, আটগ্রাম, বড়বন্দ, শরীফাবাদ, পরচক, বারকুলিরচক, উত্তর খিলোগ্রামসহ ৪০ স্থানে সুরমা-কুশিয়ারার বাঁধ ভেঙে পানি লোকালয়ে প্রবেশ করছে।

স্থানীয়রা শতাধিক স্থানে স্বেচ্ছাশ্রমে বেড়িবাঁধ রক্ষায় চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। উপজেলার প্রায় ৭০ ভাগ মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। গত বন্যার ধকল কাটিয়ে উঠতে না উঠতেই ফের ভয়াবহ বন্যার কবলে পড়েছে জকিগঞ্জের মানুষ। দেখা দিয়েছে চরম গো-খাদ্যের সংকট।

বন্যাকবলিত মানুষজনের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, বেশিরভাগ মানুষের ঘরে পানি উঠেছে রান্না করার মতো পরিস্থিতিও নেই। কোথাও কোথাও রাস্তার উপর দিয়ে তীব্র স্রোতের কারণে চলাচল করা যাচ্ছে না। গ্রাম এলাকায় নৌকার অভাবে অনেকে ঘর থেকে বের হতে পারছেন না। বিশুদ্ধ পানি, শিশুখাদ্য ও গৃহপালিত পশুপাখি নিয়েও অনেকে মারাত্মক বেকায়দায় পড়েছেন। 

উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা আতাউর রহমান জানান, সরকারি হিসাব অনুয়ায়ী জকিগঞ্জের প্রায় দেড় লক্ষ মানুষ ইতোমধ্যে পানিবন্দি হয়ে পড়েছে, এ সংখ্যা ক্রমেই বাড়ছে।

জকিগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের এসডিই নিলয় পাশা জানিয়েছেন, জকিগঞ্জ উপজেলার সুরমা-কুশিয়ারা নদীর প্রায় ৪০টি স্থানের বাঁধ ভেঙে পানি লোকালয়ে প্রবেশ করছে। পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকায় বন্যা পরিস্থিতি খারাপ হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। জকিগঞ্জের আমলশীদ সুরমা-কুশিয়ারার মিলনস্থলে বিপৎসীমার ১৮৬ সেন্টিমিটার দিয়ে পানি প্রবাহিত হচ্ছে।

জকিগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা একেএম ফয়সাল জানান, পৌর শহরের কিছু অংশছাড়া পুরো উপজেলা বন্যায় পানিতে তলিয়ে গেছে। বন্যা পরিস্থিতিতে লোকজনকে সহায়তা করতে সার্বক্ষণিক কন্ট্রোল রুম চালু রাখে প্রশাসন। চালের পাশাপাশি প্রশাসনের পক্ষ থেকে শুকনো খাবারও বিতরণ করা হচ্ছে।

এদিকে জকিগঞ্জে ভয়াবহ বন্যার কারণ হিসাবে সুরমা-কুশিয়াররা বাঁধ সংস্কারে পানি উন্নয়ন বোর্ডের অবহেলাকেই দায়ী করেন স্থানীয়রা।

বেউর গ্রামের উপজেলা স্বাস্থ্য পরিদর্শক সঞ্জয় চন্দ্র নাথ বলেন, পানি উন্নয়ন বোর্ড বাঁধ রক্ষায় উল্লেখযোগ্য কোনো উদ্যোগ নেয়নি। বেউর এলাকায় বিগত ২৫ বছরে একমুঠো মাটি ফেলেনি। ফলে কুশিয়ারা নদীয় ৪২ কিলোমিটার বাঁধই ঝুঁকিপূর্ণ। পানি উন্নয়ন বোর্ডের এ অবহেলার কারণে পুরো জকিগঞ্জ আজ বন্যার পানিতে ভাসছে।

Bootstrap Image Preview