Bootstrap Image Preview
ঢাকা, ২৪ বুধবার, এপ্রিল ২০২৪ | ১১ বৈশাখ ১৪৩১ | ঢাকা, ২৫ °সে

পদ্মা সেতুর নাম শুনলেই এখন ভয় করে : রিজভী

বিডিমর্নিং ডেস্ক
প্রকাশিত: ১৬ জুন ২০২২, ০৯:১১ PM
আপডেট: ১৬ জুন ২০২২, ০৯:১১ PM

bdmorning Image Preview
ছবি সংগৃহীত


বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, আওয়ামী লীগ ও গণমাধ্যমের স্বাধীনতা একসঙ্গে যায় না। এখন সেই আওয়ামী লীগ সরকার পদ্মা সেতুর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের মাধ্যমে উদোর পিণ্ডি বুধোর ঘাড়ে চাপাতে চায়। তারা মিডিয়াকে বিকৃতভাবে ব্যবহার করছে।আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে জাতীয় প্রেস ক্লাবের মওলানা মোহাম্মদ আকরম খাঁ হলে এক আলোচনাসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

সংবাদপত্রের কালো দিবস উপলক্ষে ‘সংবাদপত্রের স্বাধীনতা ও আজকের বাংলাদেশ’ শীর্ষক এই আলোচনাসভার আয়োজন করে বাংলাদেশ ইয়ূথ ফোরাম।সংগঠনের সভাপতি মুহাম্মদ সাইদুর রহমানের সভাপতিত্বে ও শাহাদাত হোসেন বিপ্লবের পরিচালনায় অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক অ্যাডভোকেট আবদুস সালাম আজাদ, কৃষকদলের সাধারণ সম্পাদক শহীদুল ইসলাম বাবুল, বিএনপির সহ-তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক আমিরুজ্জামান খান শিমুল, নির্বাহী কমিটির সদস্য আবু নাসের মুহাম্মদ রহমাতুল্লাহ, আনোয়ার হোসেন বুলু, ইয়ুথ ফোরামের অ্যাডভোকেট আজিজুল হাই সোহাগ, কৃষকদলের শাহ আব্দুল্লাহ আল বাকি, কাদের সিদ্দিকী, স্বেচ্ছাসেবক দলের রফিকুল ইসলাম (ভিপি মাসুম) ও গণতান্ত্রিক আন্দোলনের আমির হোসেন বাদশা প্রমুখ।

রুহুল কবির রিজভী বলেন, ফ্যাসিবাদ আমরা আবারও দেখছি। যেমনটি ছিল ১৯৭৫ সালে। তবে এখন কিছুটা পরিবর্তন হয়েছে। ইতালিতে যে ফ্যাসিজম ও জার্মানির নাৎসিবাদ, তারই আরেক রূপ বাংলাদেশে আওয়ামী বাকশাল বা ফ্যাসিবাদ। তারা ১৪ বছর অবৈধভাবে ক্ষমতা খল করে আছে। তারা মানুষের ভোট ডাকাতি করে নিশিরাতে নির্বাচনের মাধ্যমে ক্ষমতা কুক্ষিগত করেছে। ১৯৭৫ সালে বাকশাল করেছিল আওয়ামী লীগ। সে সময় ৪টি বাদে অন্য সব গণমাধ্যম বন্ধ করা হয়েছিল। সেই আওয়ামী লীগ আবারও ২০১৮ সালে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের নামে কালো আইন করেছে। এই আইনে মানুষের বাকস্বাধীনতা হরণ করা হয়েছে।

তিনি বলেন, গণমাধ্যমের ওপর গোয়েন্দা নজরদারি করা হচ্ছে। সরকারের বিভিন্ন সংস্থার লোকেরা পরিকল্পিতভাবে নানা ধরনের বিভ্রান্তি ছড়াচ্ছে। বিএনপি হচ্ছে বাকস্বাধীনতার পক্ষে। বিএনপির শাসনামলে গণমাধ্যমের স্বাধীনতা নিশ্চিত করা হয়েছে। অন্যদিকে আওয়ামী লীগ সরকার মিডিয়াকে বিকৃতভাবে ব্যবহার করছে। আওয়ামী লীগ আর গণমাধ্যমের স্বাধীনতা একসঙ্গে যায় না। এখন অনেক গণমাধ্যম দেখা যায় ঠিকই, কিন্তু সরকার সেগুলোকে ভয়-ভীতির মাধ্যমে নিয়ন্ত্রণ করে। যার উদাহরণ এখন পদ্মা সেতু নিয়ে সব গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশিত করা হচ্ছে। এটাই তো ফ্যাসিবাদ। কই, খালেদা জিয়ার শাসনামলে তো অসংখ্য ব্রিজ-কালভার্ট নির্মাণ হয়েছে, সে সময় তো এমন ঢাকঢোল পেটানো হয়নি।

রিজভী বলেন, সরকার নাকি নিজের টাকায় পদ্মা সেতু নির্মাণ করেছে। এটা সম্পূর্ণ মিথ্যা কথা। বরং চীনের কাছ থেকে চড়া সুদে ঋণ নিয়ে পদ্মা সেতু করা হয়েছে। যার ঋণের বোঝা আমাদের সবাইকে শোধ করতে হবে। আসলে যে টাকা খরচ হওয়ার কথা তা হয়নি। বরং বেশি টাকা খরচ করা হয়েছে। মূলত এসব টাকা বিদেশে পাচার করা হয়েছে।

তিনি আরো বলেন, পদ্মা সেতুর উদ্বোধনী অনুষ্ঠান নিয়ে প্রধানমন্ত্রী আশঙ্কা করছেন কেন? সবই তো তার নিয়ন্ত্রণে। আপনার এত বাহিনী, এত গোয়েন্দা সংস্থা তাহলে তারা কী করে? এটাকেই বলে যে ঠাকুর ঘরে কে রে? আপনার হাতে সব কিছু আর আপনিই দুর্ঘটনার আশঙ্কা করছেন! আপনার আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী তো বিএনপির মৃত নেতার নামেও মিথ্যা মামলা দেয়। কিন্তু আমাদের আশঙ্কা আপনার লোকেরা কী এমন অঘটন ঘটিয়ে উদোর পিণ্ডি বুধোর ঘাড়ে চাপিয়ে দেবে!

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উদ্দেশে রিজভী বলেন, আপনার হিংসাশ্রয়ী আচরণ তো ইতিমধ্যে প্রমাণিত হয়েছে। আপনি একজন সাবেক প্রধানমন্ত্রীকে পদ্মা সেতু থেকে টুস করে ফেলে দেবেন? নোবেল বিজয়ী ব্যক্তিকে চুবাবেন। এখন তো পদ্মা সেতুর নাম শুনলেই ভয় হয়। কারণ শেখ হাসিনা এসব কথা বলে এবং পদ্মা সেতু নির্মাণের মাধ্যমে গোটা জাতিকে বিভক্ত করে ফেলেছেন। তারা নাকি একেবারে স্বর্গে চলে যাবে। পদ্মা সেতুর শুরু থেকেই সীমাহীন দুর্নীতি হয়েছে। গোটা জাতিকে ঋণে জর্জরিত করেছেন প্রধানমন্ত্রী। ১৩ হাজার কোটি টাকার প্রকল্প এখন প্রায় ৪০ হাজার কোটি টাকায় ঠেকেছে। আর কত হবে তা বলা যায় না। একটি শিশুও জন্মের পর থেকেই ঋণে জর্জরিত। আমরা ভয়ংকর একদলীয় শাসনের জাঁতাকলে নিষ্পেষিত।

তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ এখন ফ্যাসিজমের নতুন রূপে আবির্ভূত হয়েছে। নব্য বাকশাল '৭৫ সালের চেয়ে আরো ভয়াবহ। সাংবাদিকরা স্বাধীনভাবে লিখতে পারেন না। দিগন্ত টিভি, ইসলামিক টিভি এবং আমার দেশ পত্রিকা বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। আসলে যেই গণমাধ্যম মানুষের পক্ষে স্বাধীনতার পক্ষে সেগুলোকে সরকার বন্ধ করেছে। তার ওপর নতুন নতুন কালাকানুন করেছে। এ ধরনের কঠোর আইন ব্রিটিশ সরকারও করেনি। কিন্তু শেখ হাসিনা করেছেন। এটা নাৎসিবাদ ও ফ্যাসিবাদের ভয়াবহ রূপ বলে মন্তব্য করেন তিনি।

Bootstrap Image Preview