Bootstrap Image Preview
ঢাকা, ২৫ বৃহস্পতিবার, এপ্রিল ২০২৪ | ১২ বৈশাখ ১৪৩১ | ঢাকা, ২৫ °সে

ছাত্রীকে মারধর করে গলার হার নিয়ে গেছে ছাত্রলীগের নেত্রীরা

বিডিমর্নিং ডেস্ক
প্রকাশিত: ১১ জুন ২০২২, ১২:৪৫ AM
আপডেট: ১১ জুন ২০২২, ১২:৪৫ AM

bdmorning Image Preview
ছবি সংগৃহীত


ছাত্রলীগের কর্মসূচিতে না যাওয়ায় রাজধানীর গভর্নমেন্ট কলেজ অব অ্যাপ্লাইড হিউম্যান সায়েন্স ( সাবেক হোম ইকনোমিকস কলেজ) কলেজের এক শিক্ষার্থীকে মারধরের অভিযোগ পাওয়া গেছে। ভুক্তভোগী ওই ছাত্রীর নাম জিনিয়া খানম মিশি৷ তিনি কলেজের শেখ হাসিনা হলের আবাসিক ছাত্রী৷

জানা গেছে, বৃহস্পতিবার (৯ জুন) রাত সাড়ে ১১টার দিকে এই ঘটনা ঘটে ৷ পরে আহত অবস্থায় ওই ছাত্রীকে উদ্ধার করে তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয় ৷ বর্তমানে হামলার শিকার ওই শিক্ষার্থী ঢামেকে চিকিৎসাধীন।

জানা গেছে, নতুন কমিটির সভাপতি বিথী দত্ত, পপি খাতুন, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সাবরিনা রহমান চৈতি, প্রান্ত দত্ত স্নিগ্ধা, সাংগঠনিক সম্পাদক ইসরাত জাহান মিষ্টি, মাহবুবা ফূর্তিসহ বেশ কয়েকজন ছাত্রলীগ কর্মী  শেখ হাসিনা হলের ৩১৮ নম্বর কক্ষে ঢুকে হামলা করেন৷ এ সময় মিশির ব্যবহৃত মোবাইল ফোন এবং স্বর্ণের হার নিয়ে যায় হামলাকারীরা৷ হামলায় অংশ নেওয়া সবাই কলেজ ছাত্রলীগের সভাপতি শারমিন সুলতানা সনির অনুসারী বলেও অভিযোগ রয়েছে।

আহত শিক্ষার্থী জিনিয়া খানম মিশি বলেন, আমার ওপর তারা হঠাৎ হামলা করেছে৷ আমি খুবই অসুস্থ ৷ আমি ছাত্রলীগের কর্মসূচিতে যাইনি বলেই আমাকে মারধর করা হয়েছে। তারা সবসময় আমাদের ওপর ফোর্স করে৷ আমার মোবাইল, গলার হারও নিয়ে গেছে৷

কলেজ শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি শারমিন সুলতানা সনির ইন্ধনে এ হামলার ঘটনা ঘটেছে বলে অভিযোগ করেছেন কমিটির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মেহেবুবা আফসানা৷ তিনি বলেন, ওরা (হামলাকারীরা) অনেক দিন ধরেই মেয়েদের বিরক্ত করছিল৷ গতকাল মিশি একটা রুমে বসেছিল৷ সভাপতির অনুসারীরা এসে রুমের লাইট বন্ধ করে মারধর করেছে। সভাপতির ইন্ধন ছাড়া মেয়েরা এতো সাহস পাবে না৷

এ ঘটনার ব্যাপারে কিছুই জানেন না বলে দাবি করেছেন কলেজ শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক আকলিমা আক্তার প্রভাতী। তিনি বলেন, আমি এ বিষয়ে কিছু জানি না৷ গতকাল ঢাকার বাইরে ছিলাম ৷ ঘটনা শুনেছি৷ একটু পরে ম্যামরা ডেকেছেন৷ আমরা ম্যামদের সঙ্গে বসব৷

তবে হামলার অভিযোগ অস্বীকার করেন গভর্নমেন্ট কলেজ অব অ্যাপ্লাইড হিউম্যান সায়েন্স কলেজ শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি শারমিন সুলতানা সনি। তিনি বলেন, আমি গতকাল থেকে গোপালগঞ্জে ছিলাম ৷ আজ ভোর ৫টায় হলে আসি৷ কাকে মারা হয়েছে, কে মেরেছে, হাসপাতালে কে ভর্তি এ বিষয়ে আমি কিছুই জানি না৷

শিক্ষার্থী পেটানোর বিষয়ে কলেজের অধ্যক্ষ অধ্যাপক ইসমাত রুমিনার কাছে জানতে চাইলে এমন কোনো ঘটনা ঘটেনি বলে দাবি করেন তিনি। অধ্যক্ষ বলেন, আমাদের কলেজে এমন কোনো ঘটনা ঘটেনি। যা শুনেছেন তা সম্পূর্ণ মিথ্যা ও ভুয়া। আপনারা হাসপাতালে গিয়ে খোঁজ নিয়ে দেখেন এ নামে কেউ সত্যি আছে কি না।

পরবর্তীতে সরেজমিনে ঢাকা মেডিকেল কলেজের পুরাতন বিল্ডিংয়ের ২০৩ নম্বর ওয়ার্ডের ১৩নম্বর বেডে ভুক্তভোগী ছাত্রীর নাম জিনিয়া খানম মিশিকে চিকিৎসাধীন অবস্থায় দেখা যায়।

এরপর অধ্যক্ষকে এ বিষয়টি জানানো হলে তিনি বলেন, সে নিজেই মারামারি করতে গিয়েছিল। আরেকজনকে মারতে গিয়ে সে আহত হয়েছে।

তবে কেউ অনভিপ্রেত কোনো ঘটনা ঘটালে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলেও জানান তিনি। তিনি বলেন, আমরা শিক্ষকরা মিটিংয়ে বসেছি। এটা নিয়ে তদন্ত কমিটি করব। কেউ দোষী সাব্যস্ত হলে তার বিরুদ্ধে কলেজ প্রশাসন ব্যবস্থা নেবে।

Bootstrap Image Preview