ভারতে ক্ষমতাসীন বিজেপির কেন্দ্রীয় নেত্রী মহানবী হযরত মুহাম্মদ (সা. ) কে অবমাননা করেছেন- এমন অভিযোগে জুমার নামাজের পর রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় বিক্ষোভ হয়েছে। নামাজ শেষ হওয়ার পর পর মসজিদ থেকে মুসল্লিরা বের হয়ে একজোট হয়ে মিছিল বের করে। এসব মিছিল থেকে ভারতীয় পণ্য বর্জনের ডাক দেয়া হয়।
বায়তুল মোকাররমের উত্তর গেটে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশের আয়োজন করে ইসলামী আন্দোলন। সমাবেশ থেকে মহানবীকে নিয়ে বিজেপি নেতাদের বিতর্কিত মন্তব্যের জাতীয় সংসদে নিন্দা প্রস্তাব আনার আহ্বান জানিয়েছেন দলটির নেতারা। তা না হলে সরকারের বিরুদ্ধে তীব্র আন্দোলন গড়ে তোলা হবে বলে হুমকি দেন নেতারা।
মিছিলে ‘বিশ্বনবীর অপমান মানবে না মুসলমান’, ‘নূপুর শর্মার ফাঁসি চাই’ এমন স্লোগান দিতে শোনা যায়।
বিক্ষোভ মিছিল পূর্ব সমাবেশে ইসলামী আন্দোলনের নায়েবে আমির মুফতি ফয়জুল করিম সরকারের উদ্দেশে বলেন, ‘জাতীয় সংসদ চলমান। এ বিষয়ে জাতীয় সংসদে নিন্দা প্রস্তাব আনুন। ভারতীয় রাষ্ট্রদূতকে তলব করুন।’
সরকারের সমালোচনা করে তিনি বলেন, ‘ক্ষমতার নেশায় ভারতের বিরুদ্ধে নিন্দা করছে না সরকার। এ দেশের মুসলমানরা তাদের ক্ষমতায় রাখবে না।’
আগামী ১৬ জুন ভারতীয় দূতাবাসমুখী প্রতিবাদ মিছিল ও স্মারকলিপি প্রদানের কর্মসূচি ঘোষণা করেন দলটির সিনিয়র নায়েবে আমির।
জ্ঞানবাপী মসজিদ নিয়ে একটি টেলিভিশন চ্যানেলের অনুষ্ঠানে নূপুর মহানবীকে নিয়ে আপত্তিকর মন্তব্য করেন।
ইসলাম সম্পর্কেও তার কিছু মন্তব্যের জেরে দেশটিতে মুসলিম সমাজে ক্ষোভ দানা বাঁধছিল। নূপুরের বক্তব্যের প্রতিবাদে গত শুক্রবার কানপুরে বনধ পালনকে কেন্দ্র করে উত্তেজনা সৃষ্টি হয়। বিভিন্ন রাজ্যে এরই মধ্যে নূপুরের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে।
শুধু নূপুরই নন, মহানবীকে নিয়ে বিতর্কিত মন্তব্য করেছিলেন নবীন কুমার জিন্দালও।
এ ইস্যুতে পরিস্থিতি জটিল আকার ধারণ করায় বিজেপির পক্ষ থেকে রোববার নূপুর ও নবীনকে ছয় বছরের জন্য বরখাস্ত করা হয়েছে।
মহানবীকে নিয়ে বিজেপির দুই নেতার বিতর্কিত মন্তব্যের জেরে আন্তর্জাতিকভাবে ব্যাপক সমালোচনার মুখে পড়েছে দলটি। অন্তত ১৫টি দেশ এ ঘটনায় নিন্দা জানিয়েছে। ব্যাপক প্রতিক্রিয়া এসেছে মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলো থেকে। এসব দেশে ভারতের বিরুদ্ধে বিক্ষোভও হয়েছে। মধ্যপ্রাচ্যের বেশ কিছু সংবাদমাধ্যম এবং পশ্চিমা সংবাদমাধ্যম বিবিসি জানায়, সেসব দেশে ভারতীয় পণ্য বর্জনের ঘোষণাও দিচ্ছেন মুসলমানরা।
এ ঘটনার পর দলের নেতা ও মুখপাত্রদের টিভি বিতর্কে অংশ নেয়ার ব্যাপারে নতুন নিয়ম করেছে বিজেপি। এখন থেকে কেবল দলটির অনুমোদিত মুখপাত্র এবং প্যানেলিস্টরা টেলিভিশন বিতর্কে অংশ নিতে পারবেন। টিভি বিতর্কে অংশ নিতে মুখপাত্র এবং প্যানেলিস্ট নির্ধারণ করে দেবে দলটির মিডিয়া সেল।