Bootstrap Image Preview
ঢাকা, ২৬ শুক্রবার, এপ্রিল ২০২৪ | ১২ বৈশাখ ১৪৩১ | ঢাকা, ২৫ °সে

পার্ক থেকে গ্রেপ্তারের পর ফেনীর সেই শিক্ষার্থীরা মানসিকভাবে বিপর্যস্ত

বিডিমর্নিং ডেস্ক
প্রকাশিত: ৩১ মে ২০২২, ০৬:৫৪ PM
আপডেট: ৩১ মে ২০২২, ০৬:৫৪ PM

bdmorning Image Preview


ফেনীতে বিনোদন কেন্দ্রে আড্ডা দেওয়ার সময় আটক করে থানায় নিয়ে যাওয়ার ঘটনায় ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীরা এখন মানসিকভাবে বিপর্যস্ত।

পুলিশের এমন কাণ্ডে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন অভিভাবক, শিক্ষক ও বিশিষ্টজনরা।

গত রবিবার দিনের বেলা পুলিশ শহরের মহিপাল এলাকার ওই পার্কে অভিযান চালিয়ে বিভিন্ন স্কুল-কলেজের ২৫ শিক্ষার্থীকে আটক করে। পরে তাদের অভিভাবকদের জিম্মায় দেওয়া হয়।

আটক শিক্ষার্থীদের ভিডিও ধারণ করে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে দেওয়ায় জেলাজুড়ে আলোচনা-সমালোচনা চলছে।

ভুক্তভোগী এক শিক্ষার্থী বলেন, তারা বিদ্যালয়ে মর্নিং শিফটের ক্লাস শেষে বন্ধুর সঙ্গে বিজয় সিংহ দীঘির পার্কে ঘুরতে যায়। উন্মুক্ত পার্কের গাছের ছায়ায় বসে তারা আইসক্রিম খাচ্ছিল। স্কুলের পোশাক দেখে সেখান থেকে তাদের আটক করে গাড়িতে তোলে পুলিশ। অনেক কাকুতি-মিনতি করলেও কোনো কথা শোনেনি পুলিশ।

আরেকজন কলেজশিক্ষার্থী জানান, কোচিং শেষে সহপাঠীর কাছে থেকে নোট নেওয়ার জন্য তিনি পার্কে যান। পার্কের একটি গাছতলায় দাঁড়িয়ে কথা বলার সময় পুলিশ তাকে আটক করে থানায় নেয়। এ সময় এক পুলিশ সদস্য নানা আপত্তিকর কথাবার্তা বলেন।

ফেনী আইনজীবী সমিতির সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট গিয়াস উদ্দিন বলেন, ‘পার্কে অভিযান চালিয়ে শিক্ষার্থী আটক আইনসিদ্ধ নয়।’

তিনি ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, ‘পার্ক থেকে আটক করে থানায় নিয়ে আটকে রেখে অভিভাবকদের কাছে সোপর্দ করে নৈতিক শিক্ষার জ্ঞান দেওয়ার অধিকার পুলিশকে কে দিয়েছে? উন্মুক্ত পার্ক থেকে এভাবে শিশু-কিশোরদের আটক করা পুলিশের অতিরঞ্জিত কাজ।’

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন কলেজশিক্ষক বলেন, ‘পুলিশ দিয়ে শিশু-কিশোরদের আটক করে থানায় নিয়ে যাওয়ার বিষয়টি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে জানার পর অবাক হয়েছি, কষ্ট পেয়েছি। এভাবে শিশু-কিশোরদের পুলিশ দিয়ে হেনস্তা করলে শিশুমনে এক ধরনের মানসিক ভীতি ও হীনম্মন্যতা তৈরি হবে। মানসিক বিকাশ ব্যাহত হবে।

তিনি বলেন, স্কুল-কলেজ ফাঁকি দিয়ে কেউ আড্ডা দিলে সেটা দেখার দায়িত্ব শিক্ষক-অভিভাবকের।

এ প্রসঙ্গে ফেনী জেলা শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক মোসাদ্দেক আলী বলেন, ‘ফেনীতে সিনেমা হলে যাওয়ার পরিবেশ নেই। শহরে নির্মল বিনোদনের কোনও জায়গা নেই। পার্কে বসাও যদি শিক্ষার্থীদের অপরাধ হয়, তবে তারা যাবে কোথায়? তাদের মানসিক বিকাশ হবে কীভাবে? স্কুল ফাঁকি দিয়ে বিনোদন পার্কে আড্ডা দিলে পুলিশ স্কুল কর্তৃপক্ষকে অবহিত করতে পারে, অভিভাবক সমাবেশ করে বিষয়টি নজরে আনতে পারে। কিন্তু কোনোভাবেই আটক করে শিশুদের মানসিক নির্যাতন করার অধিকার তাদের নেই।’

রবিবার দুপুরে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে শহরের মহিপাল বিজয় সিংহ দিঘীর পাড়ে অভিযান চালিয়ে বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ১১ জন ছাত্রী ও ১৪ জন ছাত্রকে আটক করে পুলিশ। এরপর গাড়িতে তুলে তাদের সদর থানায় নেওয়া হয়। সেখানে তাদের আটকে রাখার পর অভিভাবকদের ডেকে তাদের জিম্মায় দেওয়া হয়।

আটক শিশু-কিশোরদের বেশিরভাগই শহরের বিভিন্ন স্কুল-কলেজের অষ্টম শ্রেণি থেকে উচ্চ মাধ্যমিক শ্রেণির শিক্ষার্থী।

Bootstrap Image Preview