Bootstrap Image Preview
ঢাকা, ১৯ শুক্রবার, এপ্রিল ২০২৪ | ৬ বৈশাখ ১৪৩১ | ঢাকা, ২৫ °সে

কেন কাফনের কাপড় পরে ছিলেন নাজমুল?

বিডিমর্নিং ডেস্ক
প্রকাশিত: ১৮ মে ২০২২, ০৫:৪৫ PM
আপডেট: ১৮ মে ২০২২, ০৫:৪৫ PM

bdmorning Image Preview
ছবি সংগৃহীত


আশুলিয়ায় চলন্ত বাসে ছিনতাইয়ের চেষ্টার ঘটনায় পুলিশ বাদী হয়ে অজ্ঞাতপরিচয় তিন থেকে চারজনকে আসামি করে মামলা করেছে। এদিকে ঘটনায় গণধোলাইয়ে সন্দেহভাজন নাজমুল মিয়া নামের এক ছিনতাইকারী মৃত্যুর ঘটনায়ও আরেকটি মামলার প্রস্তুতি চলছে। তবে ছিনতাইচেষ্টার সময় পুরো শরীরে কাফনের কাপড় জড়ানো ছিল নিহত নাজমুল মিয়ার। এ ঘটনায় হতবাক তদন্ত কর্মকর্তা।

বুধবার (১৮ মে) দুপুরে মামলার বিষয়টি নিশ্চিত করেন আশুলিয়া থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) জিয়াউল ইসলাম। এর আগে রাতে সাভার ট্রাফিক বিভাগের পুলিশের এসআই হেলাল উদ্দিন বাদী হয়ে অজ্ঞাতপরিচয় তিন থেকে চারজনকে আসামি করে মামলাটি করেন। সোমবার ঘটনার রাতে এসআই হেলাল উদ্দিন দৌড়ে গিয়ে জাপটে ধরে আটক করেছিলেন সন্দেহভাজন ছিনতাইকারীকে। তবে এখন পর্যন্ত কোনো ভুক্তভোগীর খোঁজ পাওয়া যায়নি ও বাসটি শনাক্ত করা সম্ভব হয়নি।

মামলার বাদী এসআই হেলাল উদ্দিন বলেন, 'গত সোমবার রাত সোয়া ১০টার দিকে ঢাকা-আরিচা মহাসড়কের আশুলিয়ার নবীনগর বাসস্ট্যান্ড এলাকায় সাভার পরিবহনের একটি বাস যাত্রীবেশী ছিনতাইকারীদের কবলে পড়ে। এ সময় ডিউটি শেষ করে সাভারে যাওয়ার উদ্দেশে সড়কে দাঁড়িয়ে আছি। যাত্রীদের চিৎকার শুনে পেছনে থাকা হানিফ বাসে উঠে একটু সামনে গিয়ে আক্রান্ত বাসটির গতি রোধ করি। এ সময় ছুরি হাতে তিনজনকে বাসের জানালা দিয়ে লাফিয়ে নেমে চলে যেতে দেখি। একটু কাছে গিয়ে দেখি বাসের ভেতরে একজন পুরো শরীরে দুই ভাগে কাফনের কাপড় পরিহিত ও ছুরি হাতে যাত্রীদের জিম্মি করে আক্রমণ করার চেষ্টা করছে। আমাকে খেয়াল করেনি। আস্তে করে উঠে পেছন থেকে এক হাতে তার ছুরিটি ধরে ফেলি ও আরেক হাত দিয়ে গলা চেপে ধরি। আমাকে হামলার চেষ্টা করে। ধস্তাধস্তি করে তাকে বাস থেকে নিচে নামিয়ে ফেলি। এ সময় উত্তেজিত জনতা গণধোলাই দেয়। প্রায় ২০-২৫ জন যাত্রী ছিল। যে যার মতো চলে যায়। সাভার পরিবহনের বাসটি থামতে বললেও থামেনি। পিটুনিতে ছিনতাইকারীর কাফনের কাপড় ছিঁড়ে যায়। ভেতরে জিন্স প্যান্ট ও গেঞ্জি পরা ছিল।  আমি আশুলিয়া থানার পুলিশকে অবহিত করি। তারা ছুরিসহ কাফনের কাপড় জব্দ করে। '

তিনি আরো জানান, গণধোলাইয়ের শিকার সন্দেহভাজন ছিনতাইকারীকে পুলিশ রাতে ঘটনাস্থলে থেকে উদ্ধার করে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করে। পরদিন মঙ্গলবার (১৭ মে) সকালে তার মৃত্যু হয়। নিহতের নাম নাজমুল মিয়া। তিনি রংপুর জেলার মিঠাপুকুর থানার দক্ষিণপাড়া গ্রামের খোকা মিয়ার ছেলে। সাভারে রাজফুলবাড়িয়া ছাগিপাড়ায় বড় ভাইয়ের সঙ্গে বসবাস করতেন।

নিহতের বড় ভাই গার্মেন্ট শ্রমিক মঞ্জু মিয়া মুঠোফোনে বলেন, 'আমি কিছু বুঝতে পারছি না। নাজমুল সাভারে রিকশা ভ্যানে করে বিভিন্ন খেলনা বিক্রি করত। ৮-৯ বছর ধরে এখানে বসবাস করছে। আমার পাশের ঘরে নামজুল তার স্ত্রীসহ থাকত। তিন দিন আগে তার বউ বাড়ি চলে যায়। ' সোমবার রাতে বাসে কোথায় গিয়েছিলেন―এমন প্রশ্নে মঞ্জু বলেন, 'আমি জানি না কোথায় ছিল। '

মামলা তদন্ত কর্মকর্তা ও আশুলিয়া থানার এসআই শ্যামল বলেন, 'কাফনের কাপড় পরিহিত ছিল কেন? আমাদেরও অবাক করেছে বিষয়টি। প্রাথমিকভাবে মনে হচ্ছে, খুব অ্যাগ্রেসিভ চিন্তাভাবনা থেকে এমন ঘটনা। সে গার্মেন্টকর্মী ছিল। পরে চাকরি ছেড়ে ফেরি করে খেলনা বিক্রি করত। তার বিষয়ে আমরা কিছু তথ্য সংগ্রহ করেছি। সেগুলো তদন্ত করে দেখা হচ্ছে। আশা করি দ্রুত বাকি আসামিদের গ্রেপ্তার করতে পারব। '

Bootstrap Image Preview