Bootstrap Image Preview
ঢাকা, ২৯ শুক্রবার, মার্চ ২০২৪ | ১৪ চৈত্র ১৪৩০ | ঢাকা, ২৫ °সে

ফিনল্যান্ডে বিদ্যুৎ বন্ধ করলো রাশিয়ার

বিডিমর্নিং ডেস্ক
প্রকাশিত: ১৪ মে ২০২২, ০১:৪০ PM
আপডেট: ১৪ মে ২০২২, ০১:৪০ PM

bdmorning Image Preview
ছবি সংগৃহীত


বিদ্যুতের দাম পরিশোধজনিত বিষয়ে সমস্যা হওয়ার কারণে আজ থেকে ফিনল্যান্ডে বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ করবে রুশ বিদ্যুৎ ও জ্বালানি সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান রাও নরডিক।

বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, রাও নরডিকের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, ফিনল্যান্ড আগের সরবরাহকৃত বিদ্যুতের মূল্য পরিশোধ করেনি।

গত বৃহস্পতিবার ফিনল্যান্ড ন্যাটোতে যোগদানের পরিকল্পনার বিষয়টি জানালে রাশিয়ার পক্ষ থেকে পাল্টা পদক্ষেপ নেয়ার ঘোষণা দেয়া হয়।

যদিও রাও নরডিকের সিদ্ধান্ত ফিনল্যান্ডের সিদ্ধান্তের সঙ্গে যুক্ত নয়। রুশ রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন প্রতিষ্ঠানটি বলছে, ‘এই পরিস্থিতি ব্যতিক্রমী এবং আমাদের বাণিজ্য ইতিহাসের ২০ বছরেরও বেশি সময়ের মধ্যে প্রথমবারের মতো ঘটেছে।’

রাও নরডিক বা ফিনল্যান্ডের গ্রিড অপারেটর প্রতিষ্ঠান ফিনগ্রিড কেউই ব্যাখ্যা করেননি যে অর্থ প্রদানের সমস্যা হওয়ার কারণ কী।

তবে ফিনগ্রিড জানিয়েছে, ফিনল্যান্ডের চাহিদার কেবল ১০ শতাংশ বিদ্যুৎ সরবরাহ করা হয় রাশিয়া থেকে। তাই জাতীয় পর্যায়ে দেশটিতে কোনো বিদ্যুৎ ঘাটতি সৃষ্টি হবে না।

প্রতিষ্ঠানটির সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট রিমা পাইভিনেন জানিয়েছেন, রাশিয়া থেকে আসা বিদ্যুতের বিকল্প হিসেবে সুইডেন থেকে আমদানি করা হবে। এ ছাড়া ফিনল্যান্ডের অভ্যন্তরীণ বিদ্যুৎ উৎপাদনও বাড়ানো হবে।

ফিনল্যান্ড শীতপ্রধান দেশ। শীতের সময় হিটারের মাধ্যমে বাসস্থানগুলো গরম রাখে ফিনিশরা। এ জন্য দেশটিতে শীতকালে বিদ্যুৎ চাহিদা বৃদ্ধি পায়। এখন আবহাওয়া উষ্ণ হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে ফিনল্যান্ডে বিদ্যুতের চাহিদা কমছে। এ ছাড়া ফিনগ্রিড জানিয়েছে, এই গ্রীষ্মে নতুন একটি পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র খোলা হবে যা রাশিয়ার বন্ধ করে দেয়া বিদ্যুৎ সরবরাহের থেকে আরও বেশি বিদ্যুৎ গ্রিডে যুক্ত করবে।

গত মাসে প্রাকৃতিক গ্যাসের মূল্য রুবলে পরিশোধ করতে অস্বীকার করায় বুলগেরিয়া ও পোল্যান্ডে গ্যাস সরবরাহ বন্ধ করে দেয় রাশিয়া।

ফিনল্যান্ডের সঙ্গে রাশিয়ার চলমান বিরোধ যে কারণে

ইউক্রেনে চলমান রুশ সামরিক অভিযানের মধ্যেই এবার ন্যাটোতে যোগদানের বিষয়টি বৃহস্পতিবার জানিয়েছে রাশিয়ার আরেক প্রতিবেশী রাষ্ট্র ফিনল্যান্ড। তবে রাশিয়ার পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, এমন পদক্ষেপের জন্য ফিনল্যান্ডের বিরুদ্ধে তারা ‘পাল্টা ব্যবস্থা’ নিতে বাধ্য হবে।

রুশ পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে বলেছে, ফিনল্যান্ডের এমন পদক্ষেপ রুশ-ফিনিশ দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের পাশাপাশি উত্তর ইউরোপের নিরাপত্তা ও স্থিতিশীলতাকে মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করবে। ফলে জাতীয় নিরাপত্তার স্বার্থে ফিনল্যান্ডকে নিরপেক্ষ দেশের ভূমিকায় থাকতে বাধ্য করার জন্য রাশিয়া সামরিক প্রযুক্তিগত ও অন্যান্য বিকল্প উপায়ে পাল্টা পদক্ষেপ নিতে বাধ্য হবে।

তবে বিবৃতিতে মস্কো ঠিক কী কী পদক্ষেপ নেবে তা স্পষ্ট করে বলা হয়নি। এর আগে রাশিয়ার পক্ষ থেকে বলা হয়েছিল, যদি ফিনল্যান্ড ও সুইডেন ন্যাটোতে যোগ দেয়, তবে রাশিয়া পারমাণবিক অস্ত্র মোতায়েন করবে।

নিরাপত্তা পরিষদের ডেপুটি চেয়ারম্যান দিমিত্রি মেদভেদেভ এর আগে সুইডেন ও ফিনল্যান্ডকে সতর্ক করে দিয়ে বলেছিলেন, দুই দেশ যাতে বাস্তবতা মাথায় রেখে সিদ্ধান্ত নেয়। অন্যথায় বাড়ির পাশে পরমাণু অস্ত্র ও হাইপারসনিক ক্ষেপণাস্ত্র নিয়ে বসবাস করতে হবে তাদের।

এ ছাড়া ক্রেমলিনের মুখপাত্র দিমিত্রি পেসকভ এর আগে সাংবাদিকদের বলেছিলেন, ‘ন্যাটোর সম্প্রসারণ কীভাবে কার্যকর হয় এবং তা রুশ সীমান্তের কতটা কাছে চলে আসে, তার ওপর সবকিছু নির্ভর করছে।’

এর আগে ইউক্রেনে রুশ হামলার প্রেক্ষাপটে ন্যাটোতে যোগ দিতে জনসমর্থন বৃদ্ধি পাওয়ায় ফিনল্যান্ডের প্রেসিডেন্ট সাউলি নিনিসতো ও প্রধানমন্ত্রী সানা মারিন এক যৌথ বিবৃতিতে দেশটিকে বিলম্ব না করে ন্যাটোতে যোগ দেয়ার আহ্বান জানিয়েছেন। সংসদে আলোচনার পাশাপাশি ও অন্যান্য সিনিয়র নেতাদের মতামত নিয়ে ফিনল্যান্ড আনুষ্ঠানিকভাবে ন্যাটোতে যোগদানের বিষয়টি রোববার ঘোষণা করবে।

যৌথ বিবৃতিতে দাবি করা হয়, ন্যাটোতে যোগদান ফিনল্যান্ডের নিরাপত্তা জোরদার করবে। ফিনল্যান্ডকে বিলম্ব না করে ন্যাটোতে যোগদানের আবেদন করতে হবে।

পরে মস্কোর প্রতিক্রিয়ার বিষয়ে সাংবাদিকদের প্রেসিডেন্ট নিনিস্তো বলেন, রাশিয়ার আক্রমণের জন্যই এই পদক্ষেপ।

তিনি ক্রেমলিনকে উদ্দেশ করে বলেন, ন্যাটোতে যোগদান কারও বিরুদ্ধে হবে না, আপনিই এটা ঘটিয়েছেন, আয়নায় নিজের মুখ দেখুন।

গত সপ্তাহের এক জনমত জরিপে দেখা যায়, ৭৬ শতাংশ ফিনিশ ন্যাটোতে যোগদানের পক্ষে ও ১২ শতাংশ বিপক্ষে মত দিয়েছেন।

রাশিয়ার সঙ্গে ফিনল্যান্ডের ১ হাজার ৩০০ কিলোমিটারের (৮০০ মাইল) সীমান্ত রয়েছে। দেশটি রাশিয়ার সঙ্গে সামরিক বিরোধ এড়াতে এত দিন ন্যাটো জোটের বাইরে থেকে এক অর্থে নিরপেক্ষ দেশের ভূমিকা পালন করেছে।

Bootstrap Image Preview