করোনায় মালয়েশিয়ার কুয়ালালামপুরে এক বাংলাদেশির শ্রমিকের মৃত্যু হয়েছে। তার সাথে বৈধ পাসপোর্ট বা কোন ডকুমেন্টস না থাকায় তার পূর্ণাঙ্গ পরিচয় সনাক্ত করতে পারছে না দেশটির পুলিশ। পুলিশ ও হাসপাতাল সুত্রে জানা গেছে গত এপ্রিলের ১৫ তারিখে তার মৃত্যু হয়েছে। সেই থেকে ঐ বাংলাদেশির মরদেহ কুয়ালালামপুর হাসাপাতালের হিমঘরে অজ্ঞাতনামা হিসেবে পড়ে আছে। তার পরিবারের সম্মতি পেলে মরদেহ কুয়ালালামপুরের দাফন করা হবে। তার পরিচয় সনাক্ত না হওয়ার কারণে ঐ ব্যক্তির লাশ দাফন করতে পারছে না হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।
তার সাথে যে পাসপোর্ট পাওয়া গেছে সেটি কুয়ালালামপুরস্থ বাংলাদেশ দূতাবাসের সার্ভারে চেক করে দেখা গেছে এই পাসপোর্টটি ভুয়া। কারণ পাসপোর্টে লেখা আছে হারুনর রশীদ, বাড়ি বরিশাল। কিন্তু দূতাবাসের সার্ভারের রেকর্ডে আছে ইব্রাহিম, ঠিকানা অন্য এলাকা। তার সাথে যে সমস্ত তথ্যাদি পাওয়া গেছে তা যাচাই করার সময় দেখা যাচ্ছে কখনো তার ঠিকানা সিরাজগঞ্জ আবার কখনো নরসিংদী পাওয়া যাচ্ছে। নাসির মিয়া নামে মালয়েশিয়া এক প্রবাসী জানিয়েছেন, তার বাড়ি নরসিংদী জেলায় হতে পারে এবং তাকে আজ থেকে ৩ বছর আগে জেল থেকে বের করা হয়েছিল
কিন্তু নাসির মিয়ার এই তথ্যের সত্যতা যাচাই করা সম্ভব হয়নি।
পরিচয় সনাক্তকরণে জটিল হয়ে পড়ছে কারণ ঐ লাশের সাথে যে ২ জন বাংলাদেশি ছিলেন তারা বিভিন্ন জায়গায় দৌড়ঝাঁপ করতে হবে তাই তারা আত্মগোপনে চলে গেছেন। কারণ একটি লাশ দাফন করা অথবা দেশে পাঠাতে হলে বিভিন্ন দপ্তরে যোগাযোগ করে এই প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে হয়।
মালয়েশিয়ায় কেউ আহত ও নিহত হলে পুলিশ রিপোর্ট হয় এবং হাসপাতালে ডাটা সংগ্রহ করা হয়। পুলিশ রিপোর্টে দেখা যাচ্ছে গত এপ্রিলের ১৫ তারিখে রাজধানী কুয়ালালামপুর এর Taman setiawangsa, keluarga TLDM Menara Sri pulai Jalan ২৭/৫৬ এলাকা থেকে তার লাশ উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। মালয়েশিয়ায় করোনা আক্রান্ত হয়ে মারা গেলে সে যে কোন দেশের নাগরিক হউক না কেন তাকে মালয়েশিয়ায় দাফন করা হয়। তবে মালয়েশিয়ায় দাফনের আগে লাশের পরিবারের সম্মতি নেওয়ার প্রয়োজন হয়। যদি তার পরিবারের সন্ধান না পাওয়া যায় তাহলে একটা নির্দিষ্ট সময় পর বেওয়ারিশ হিসেবে লাশ দাফন করতে বাংলাদেশ দূতাবাসের অনুমতি চাওয়া হবে।
এ বিষয়ে মালয়েশিয়া বাংলাদেশি কমিউনিটির নেতা মোঃ জহিরুল ইসলাম জহির বলেন, আমাকে পুলিশ ও হসপিটাল কর্তৃপক্ষ থেকে জানানো হয় অজ্ঞাতনামা এক বাংলাদেশির লাশ পড়ে আছে, তখন আমি খোঁজ খবর নিতে গিয়ে জানতে পারি তার সাথে যে পাসপোর্ট টি রয়েছে সেটি নকল পাসপোর্ট। এই পাসপোর্ট নিয়ে দূতাবাসে যাওয়ার পর কর্মকর্তারা চেকিং করে দেখছেন এর ছবির সাথে লাশের ছবির কোন মিল নেই, তাই কেহ যদি মৃত ব্যক্তিকে চিনে থাকেন তাহলে কুয়ালালামপুরস্থ বাংলাদেশ দূতাবাস অথবা আমার সাথে যোগাযোগের অনুরোধ করছি।
যোগাযোগ করা হলে, কুয়ালালামপুরস্থ বাংলাদেশ দূতাবাসের মিনিস্টার (শ্রম) মো. নাজমুল সাদাত সেলিম বলেন, এ বিষয়ে পুলিশ ও হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ আমাদের সাথে যোগাযোগ করলে আমরা অবশ্যই সরেজমিনে তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করব।