Bootstrap Image Preview
ঢাকা, ২৬ শুক্রবার, এপ্রিল ২০২৪ | ১২ বৈশাখ ১৪৩১ | ঢাকা, ২৫ °সে

সেই দুই ফাস্ট ফুড দোকানিকে খুঁজছে নিউমার্কেটের সাধারণ ব্যবসায়ীরাও

বিডিমর্নিং ডেস্ক
প্রকাশিত: ২১ এপ্রিল ২০২২, ১১:০৮ PM
আপডেট: ২২ এপ্রিল ২০২২, ১২:৩৩ AM

bdmorning Image Preview
ছবি সংগৃহীত


ব্যবসায়ীদের সঙ্গে ঢাকা কলেজের শিক্ষার্থীদের সংঘর্ষ যে দুই দোকানের কারণে বাঁধে, সেই দোকানদারদের খুঁজছেন মার্কেটের সাধারণ ব্যবসায়ীরা। নিউমার্কেটের অন্য দোকান খুললেও এখনো বন্ধ সেই ক্যাপিটাল ও ওয়েলকাম ফাস্ট ফুড। এমনকি সেই দুই ফাস্ট ফুড দোকানের কারো কোন খোঁজও নেই। 

নিউমার্কেটের গার্মেন্টস সামগ্রী বিক্রেতা ফেরদৌস বলেন, ‘এই ঝামেলাতেই সব শেষ। দোকান যে বন্ধ হইছে, এ দোকান কবে খুলতে পারবো তার ঠিক নাই! বেচাকেনা নিয়া নিজেরা নিজেরা মারামারি করছে। এখন পারলে বন্ধ দোকানে বেশি বেচাকেনা করুক। নিজেরা তো শেষ, আমাগো শেষ করতাছে।’

‘আমার কয়েক লাখ টাকার ক্ষতি হয়েছে। যারা ঝামেলা করছে সেই দুই দোকানের মালিক পালাইছে। তাদের আমি খুঁজতেছি। আমার যা ক্ষতি হয়েছে তার টাকা তাদের দেয়া লাগবে।’

ক্ষোভের সঙ্গে কথাগুলো বলছিলেন রাজধানীর নিউ মার্কেটের এয়ার ফাস্ট ফুডের মালিক জাহিদুল ইসলাম। ব্যবসায়ীদের সঙ্গে ঢাকা কলেজের শিক্ষার্থীদের সংঘর্ষে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে তার খাবারের দোকান।

সোমবার রাতে এই মার্কেটের ক্যাপিটাল ও ওয়েলকাম ফাস্ট ফুড থেকে সূত্রপাত হয় মারামারির। এরপর তা ব্যবসায়ী ও ঢাকা কলেজের শিক্ষার্থীদের মধ্যে ছড়িয়ে পড়ে।

মারামারির কারণে দুই দিন থেকেই বন্ধ ছিল দুই ফাস্ট ফুডের দোকানসহ পুরো মার্কেট। বৃহস্পতিবার সকালে নিউ মার্কেটের অন্যান্য দোকানপাট খুলেছে। তবে খোলেনি ক্যাপিটাল ও ওয়েলকাম ফাস্ট ফুড।

এয়ার ফাস্ট ফুডের মালিক জাহিদুল ইসলাম বলেন, ‘দোকানের সামনের গ্লাস ভাঙছে, তিনটা ফ্রিজ ভাঙছে, কত বলমু? আমার কয়েক লাখ টাকার ক্ষতি হয়েছে। যারা ঝামেলা করছে সেই দুই দোকানের মালিক পালাইছে।’

ক্যাপিটাল ফাস্ট ফুডের সামনে গিয়ে দেখা গেল দোকানের সব শাটারই বন্ধ। সামনে গ্লাসের কাউন্টারের ভেতরে পড়ে আছে শুকনো ফুচকা। সঙ্গে কয়েকটি প্লেট, খাবারের বাসনপত্র। পাশে স্তুপ করে রাখা শখানেক চেয়ার। একপাশে রাখা ফ্রিজে পানির বোতলসহ নানা খাবার সামগ্রী।

ক্যাপিটাল ফাস্ট ফুডের সামনে থাকা চেয়ারগুলোতে বিশ্রামের জায়গা হয়েছে এই মার্কেটে আসা ক্রেতাদের। অথচ দুইদিন আগে সকাল থেকে মাঝরাত পর্যন্ত মানুষের আনাগোনা ছিল এ দোকানে।

অন্যদিকে ওয়েলকাম ফাস্ট ফুডের সামনের জায়গায় এখন এই মার্কেটের দায়িত্বরত পুলিশের বসার জায়গা হয়েছে। মার্কেটের নিরাপত্তায় বাড়তি পুলিশকে দায়িত্ব দেয়া হয়েছে।

এই দোকানের সামনে পোশাক বিক্রি করছেন মো. রিপন। তিনি বলেন, ‘নিজেদের মধ্যে সামান্য ঘটনাটাকে তারা পুরো মার্কেট করছে, পুরো দেশ করছে। এতে আমগো মত সাধারণ দোকানদারগো অবস্থা খারাপ। দুই দিন বন্ধ থাকার পর যাও দোকান খুলছি, কাস্টমার নাই।’খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ওয়েলকাম ও ক্যাপিটাল নামে যে দুটি ফাস্ট ফুড দোকানের কর্মচারীর মধ্যে বিরোধের জেরে সংঘর্ষের সূত্রপাত, সেই দোকান দুটি ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন থেকে বরাদ্দ নিয়েছিলেন মকবুল হোসেন। পরে দোকান দুটি তিনি ভাড়া দেন।

গত চার মাস নিউমার্কেট এলাকায় যাননি মকবুল হোসেন। তিনি সংবাদমাধ্যমকে এ তথ্য জানিয়ে বলেন, ‘আমিও এ রকম একটা মেসেজ পেয়েছি। কিন্তু গত চার মাস আমি ওই এলাকাতেই যাইনি। ইটপাটকেল নিক্ষেপ, জখম, ভাঙচুরের প্রশ্নই আসে না। নব্বইয়ের দশকে আমি সিটি করপোরেশন থেকে দোকান দুটি ভাড়া নিই।

তিনি নিউমার্কেট থানা বিএনপির সাবেক সভাপতি বলেও জানান।

এই মামলায় নাম উল্লেখ করা অন্য আসামিরা হলেন আমির হোসেন আলমগীর, মিজান, টিপু, হাজি জাহাঙ্গীর হোসেন পাটোয়ারী, হাসান জাহাঙ্গীর মিঠু, হারুন হাওলাদার, শাহ আলম শন্টু, শহিদুল ইসলাম শহিদ, মিজান ব্যাপারী, আসিফ, রহমত, সুমন, জসিম, বিল্লাল, হারুন, হেহা, মনির, বাচ্চু, জুলহাস, মিঠু, মিন্টু ও বাবুল।

মকবুল হোসেনকে আসামি করায় আপত্তি তুলেছেন ঢাকা নিউমার্কেট ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি দেওয়ান আমিনুল ইসলাম।

তিনি সংবাদমাধ্যমকে বলেন, মকবুল হোসেনের রাজনৈতিক পরিচয় আছে। কিন্তু তিনি তো শুধু তার নামে বরাদ্দ হওয়া দোকান ভাড়া দিয়েছেন। সেই ভাড়া দেওয়া দুই দোকানের কর্মচারীদের বিরোধে যদি তিনি আসামি হন, তাহলে তো সমস্যা।

এদিকে মার্কেট এলাকায় সংঘর্ষের ঘটনায় গতকাল বুধবার গভীর রাতে হত্যাসহ মোট তিনটি মামলা করা হয়েছে। পথচারী নাহিদ হত্যা, পুলিশের ওপর হামলা ও বিস্ফোরক দ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে করা এসব মামলায় ঢাকা কলেজ ও নিউমার্কেট এলাকায় ব্যবসায়ী, কর্মচারী ও হকার মিলে মোট ১ হাজার ৪০০ ব্যক্তিকে আসামি করা হয়েছে। তবে আজ বৃহস্পতিবার পর্যন্ত এসব মামলায় কাউকে গ্রেপ্তার করা যায়নি

Bootstrap Image Preview