Bootstrap Image Preview
ঢাকা, ২৮ বৃহস্পতিবার, মার্চ ২০২৪ | ১৪ চৈত্র ১৪৩০ | ঢাকা, ২৫ °সে

কয়েক আঁটি শাক বেচে মায়ের জন্য চাল কিনবে আরিয়ান

বিডিমর্নিং ডেস্ক
প্রকাশিত: ২১ এপ্রিল ২০২২, ১০:৩৩ PM
আপডেট: ২১ এপ্রিল ২০২২, ১০:৩৩ PM

bdmorning Image Preview
ছবি সংগৃহীত


০৫ বছর বয়সী ছোট্ট আরিয়ান। হাতে পলিথিনের ব্যাগ। তাতে কয়েক আঁটি শাক নিয়ে ঘুরছে সে। শাকগুলো বেচে সে চাল কিনবে। চাল বাড়িতে নিয়ে মাকে দেবে। সেই চাল রান্না করে মা সেহেরিতে ভাত খাবেন। অবশ্য তরকারির প্রয়োজন নেই। একটু লবণ দিয়েই মা-ছেলে দিব্যি ভাত খেতে পারেন। গত কয়েকদিন তো শুধু পানি খেয়েই তাদের দিন কেটেছে।

গত মঙ্গলবার (১৯ এপ্রিল) রাতে বাগেরহাট শহরের শালতলা এলাকায় আরিয়ানকে ঘুরতে দেখা যায়। মায়ের জন্য চাল কিনবে বলে গ্রাম থেকে আসার সময় শাক কুড়িয়ে এনেছে। দুই আঁটি শাক নিয়ে আরিয়ান হাঁটছিল শহরের শালতলা এলাকার রাস্তা দিয়ে। সেখানে দেখা আনোয়ার নামে এক ব্যক্তির সঙ্গে। ডাক দিয়ে বলছিল মামা এক আঁটি শাক নেবেন, চাল কিনতে হবে আমার। কারণ ইতোমধ্যে শাক বিক্রির ৮০ টাকা দিয়ে মায়ের জন্য একটি চামচ আর প্লাস্টিকের কৌটা কিনেছে সে। চাল কেনার টাকা তো নেই। 

আরিয়ানের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, তার বাবার বাড়ি রংপুরে। কিন্তু দাদা বাড়ির লোকজন মাকে নির্যাতন করে ঘর থেকে বের করে দিয়েছে তিন বছর আগে। তাই মা আমেনা আক্তার পিয়ার সঙ্গে নানাবাড়ি বাগেরহাটে থাকে সে। বাগেরহাট সদর উপজেলার গোটাপাড়া ইউনিয়নের ভাটশালা গ্রামে জীর্ণ একটি ঘরে তাদের বসবাস।

ভাটশালা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিশু শ্রেণির ছাত্র আরিয়ান বলে, রোজার মধ্যে কয়েকদিন ধরে মা শুধু পানি দিয়ে ইফতার করে। আমারও পানি খেতে হয় শুধু। তাই মাঝে মাঝে খালের পাড় থেকে শাক তুলে শহরে যাই বেচতে। কিন্তু তেমন কেউ কেনে না আমার কাছ থেকে। আমি ছোট তো তাই। একটু চাল হলেই আমরা লবণ দিয়ে ভাত খেতে পারি। আমার মা অসুস্থ। তারপরও মানুষের বাড়ি কাজ করে। আমি বড় হয়ে সিআইডি হব। তারপর মায়ের চিকিৎসা করাবো।

দুটি মুরগি, কিছু পুরাতন কাপড়, একটি হাড়ি এতটুকুই সম্বল আরিয়ানের মা আমেনা আক্তারের। তিনি বলেন, অভাবের সংসারে মানুষের বাড়িতে কাজ করে যা পাই তাই দিয়ে মা-ছেলের দিন কাটে। কয়েকদিন ধরে অসুস্থ থাকায় কাজেও যেতে পারিনি ঠিকমতো। তবু ছেলের মুখের দিকে তাকিয়ে কাজে যাওয়ার চেষ্টা করি প্রতিদিন।

স্থানীয় বিজয় দে নামে এক শিক্ষার্থী জানান, প্রায় তিন বছর আগে আমেনা ছেলেকে সঙ্গে নিয়ে বাবার বাড়ি ফিরে আসেন। কোনোরকম ভাঙাচোড়া এক রুমের একটি ঘরে থাকেন। পরিবারটি খুবই অসহায়। মানুষ কত কিছু পায় কিন্তু ওরা পায় না।

বাগেরহাট সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মুহাম্মদ মুছাব্বেরুল ইসলাম বলেন, আমেনা আক্তার ও তার শিশু সন্তানের বিষয়টি আমাদের নজরে এসেছে। আমরা ইতিামধ্যে খোঁজখবর নিয়েছি। তাদের সমস্যা সমাধানে উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে যথাসম্ভব সাহায্য করা হবে। 

Bootstrap Image Preview