ঢাকা কলেজের শিক্ষার্থীদের সঙ্গে ব্যবসায়ীদের রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষে দুই দিন বন্ধ থাকার পর ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান খোলার সিদ্ধান্ত নিয়েছে নিউ মার্কেট দোকানমালিক সমিতি।
বুধবার বেলা ৩টা থেকে তারা নিউ মার্কেটের সব দোকান খুলবেন বলে জানানো হয়। তবে এখন পর্যন্ত কোনো দোকান খুলতে দেখা যায়নি।
ঢাকা নিউ মার্কেটে নিজেদের কার্যালয়ে বুধবার দুপুরে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে দোকান খোলার ঘোষণা দেন ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি দেওয়ান আমিনুল ইসলাম শাহিন।
সংবাদ সম্মেলেন নিউমার্কেট দোকান সমিতির সভাপতি আমিনুল ইসলাম বলেন, আমরা শান্তিপূর্ণ অবস্থান চাই। গতকাল মঙ্গলবার সংঘর্ষে যারা হামলা চালিয়েছিলেন তারা কেউ ব্যবসায়ী নন।
দোকান মালিক সমিতির সভাপতি হেলাল উদ্দিন বলেন, আমরা এ ঘটনার শান্তিপূর্ণ সমাধান চাই। এ ঘটনা নিয়ে কেউ যেন উসকানিমূলক কথা, বক্তব্য ও পোষ্ট না দেন এ জন্য সংশ্লিষ্ট সবার প্রতি তিনি অনুরোধ জানিয়েছেন।
নিউমার্কেট এলাকার সড়ক আজ সকাল ১০টা থেকেই শান্ত দেখা গেছে। সড়কে ব্যবসায়ী-কর্মচারী, শিক্ষার্থীসহ বিবদমান কোনো পক্ষের উপস্থিতি দেখা যায়নি। নীলক্ষেত-নিউমার্কেট এলাকার সড়কে যান চলাচল স্বাভাবিক রয়েছে। এলাকায় বিপুলসংখ্যক পুলিশ মোতায়েন রয়েছে।
এর আগে সকালে আমিনুল ইসলাম বলেছিলেন, গতকাল মঙ্গলবার রাতে তিনি ও দোকান মালিক সমিতির সভাপতি হেলাল উদ্দিন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খানের সঙ্গে দেখা করেছেন। তাঁরা স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে দুই পক্ষের মধ্যে সমঝোতার প্রস্তাব দিয়েছেন। কারণ, সমঝোতা না হলে যেকোনো সময় সংঘর্ষ লাগতে পারে। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী তাঁদের আজ দুপুর পর্যন্ত তাদের অপেক্ষা করতে বলেন।
আমিনুল ইসলাম বলেন, নিউমার্কেট ও আশপাশের বিপণিবিতাণগুলোতে ব্যবসায়ী ও কর্মচারী আছেন ৫০ লাখের মতো। শিক্ষার্থীও আছেন বিপুলসংখ্যক। এমন পরিস্থিতিতে সমঝোতা না হলে অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা ঘটতে পারে। সেটি নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব হবে না।
ব্যবসায়ী ও শিক্ষার্থীদের মধ্যে দুই দিনের সংঘর্ষের পর শান্ত অবস্থা বিরাজ করছে নিউ মার্কেট এলাকায়। বুধবার সকাল থেকে নির্বিঘ্নে যানবাহন চলাচল করতে দেখা গেছে। নিউ মার্কেট থেকে সায়েন্সল্যাব পর্যন্ত এলাকায় সড়কে দেখা যায়নি কোনো শিক্ষার্থীকে।
গত সোমবার রাতে আড়াই ঘণ্টা সংঘর্ষের পর গতকাল মঙ্গলবার সকালে আবার ঢাকা কলেজের ছাত্র ও ব্যবসায়ীদের মধ্যে সংঘর্ষ শুরু হয়। দিনভর থেমে থেমে সংঘর্ষের পর রাত সাড়ে ১০টার দিকে দুই পক্ষ নিবৃত্ত হয়। সংঘর্ষের কারণে গতকাল নিউমার্কেটসহ আশপাশের অন্তত ২০টি মার্কেট বন্ধ ছিল। ঈদ সামনে রেখে বেচাকেনার মৌসুমে এমন ঘটনায় ব্যবসায়ীরা ব্যাপক ক্ষতির আশঙ্কা জানিয়েছেন।