Bootstrap Image Preview
ঢাকা, ২৬ শুক্রবার, এপ্রিল ২০২৪ | ১৩ বৈশাখ ১৪৩১ | ঢাকা, ২৫ °সে

সোনা বন্ধক রেখে পাওয়া যাবে ব্যাংকঋণ

বিডিমর্নিং ডেস্ক
প্রকাশিত: ০৭ এপ্রিল ২০২২, ১১:৩৪ AM
আপডেট: ০৭ এপ্রিল ২০২২, ১১:৩৪ AM

bdmorning Image Preview
ছবি সংগৃহীত


গবাধি পশু, সোনা, মৎস্য খামার, বন্ড, কৃষিপণ্য, মেধাস্বত্বসহ বিভিন্ন অস্থাবর সম্পত্তি বন্ধক রেখে ব্যাংক থেকে ঋণ নেওয়ার বিধান রেখে ‘সুরক্ষিত লেনদেন (অস্থাবর সম্পত্তি) আইন, ২০২২’-এর খসড়া নীতিগতভাবে অনুমোদন দিয়েছে মন্ত্রিসভা।

গতকাল বুধবার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে জাতীয় সংসদ ভবনে অনুষ্ঠিত মন্ত্রিসভার বৈঠকে এই আইনের খসড়ার অনুমোদন দেওয়া হয়। পরে সচিবালয়ে বৈঠকের আলোচিত বিষয়গুলো সাংবাদিকদের ব্রিফ করেন মন্ত্রিপরিষদসচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম।

মন্ত্রিপরিষদসচিব বলেন, ‘এটি নতুন আইন। আমরা ব্যাংক থেকে যে ঋণ দিই, সেটির বিপরীতে ইকুইটি দিতে হয়, স্থাবর সম্পত্তি কিংবা ক্যাপিটাল ইকুইপমেন্ট। এখন আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগ থেকে অস্থাবর সম্পত্তিকে ইকুইটি হিসেবে দেওয়ার একটা প্রস্তাব আনা হয়েছে। ’

মন্ত্রিপরিষদসচিব বলেন, ‘এখন থেকে অস্থাবর সম্পত্তির বিপরীতেও ঋণ নেওয়া যাবে। কারো যদি স্থায়ী আমানত থাকে সেটির বিপরীতেও অনুপাত অনুযায়ী ঋণ নিতে পারবে। কারো বন্ড থাকলে সেটি দিয়েও ঋণ নেওয়া যাবে। দামি গাড়ি, সোনা, মেধাস্বত্ব বন্ধক রেখেও ঋণ নেওয়া যাবে। ’

মন্ত্রিপরিষদসচিব বলেন, খনিজ সম্পদ, কৃষিজাত পণ্য, প্রক্রিয়াজাত মাছ ও জলজ প্রাণী, গবাদি পশু, রপ্তানি আদেশ অনুযায়ী পণ্য প্রস্তুতের কাঁচামাল, ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের আমানত, নিবন্ধিত কম্পানির শেয়ার সার্টিফিকেট, কোনো সেবার প্রতিশ্রুতির বিপরীতে সেবাগ্রহীতার মূল্য পরিশোধের স্বীকৃতি বন্ধক রেখে ব্যাংকঋণ নেওয়া যাবে।

আনোয়ারুল ইসলাম বলেন, এখন অস্থাবর সম্পত্তির বিপরীতেও ঋণ দেওয়া যাবে। যেমন—কারো ফিক্সড ডিপোজিট থাকলে সেটিকে জামানত রেখে তার বিপরীতে ঋণ নিতে পারবে। রপ্তানি আদেশ অনুযায়ী পণ্য প্রস্তুতের কাঁচামাল, ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের আমানত, সোনা, রুপা বা অন্যান্য স্বীকৃত মূল্যবান ধাতু, নিবন্ধিত কম্পানির শেয়ার সার্টিফিকেট, খনিজ সম্পদ, মৎস্য ও গবাদি পশু অস্থাবর সম্পত্তি হিসেবে নতুন আইনে নির্দিষ্ট করা হয়েছে।

সচিব বলেন, মধ্যম ও ক্ষুদ্র উদ্যোক্তাদের বন্ধক দেওয়ার মতো স্থাবর সম্পত্তি নেই। তাঁরা যেন তাঁদের অস্থাবর সম্পত্তি জমা দিয়ে ঋণ নিয়ে বিনিয়োগ করতে পারেন, সে জন্য এটি করা হয়েছে। এটি বিনিয়োগের ভিত্তিকে অনেক বড় করবে।

স্থাবর সম্পত্তি বন্ধক রেখেই ঋণ নেওয়ার ক্ষেত্রে অনেক জালিয়াতি হয়। এ ক্ষেত্রেও জালিয়াতির সুযোগ নিয়ে আলোচনা হয়েছে কি না—জানতে চাইলে মন্ত্রিপরিষদসচিব বলেন, ‘এটা নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়েছে। আপনি শিল্প স্থাপন করতে গেলে তো ব্যাংকের আলাদা ক্রাইটেরিয়া আছে। এই আইন মধ্যম ও ক্ষুদ্র উদ্যোক্তাদের সুবিধা দেবে। কেউ সোনা দিলে ব্যাংক সেটা চেক করে নেবে। ’

এ ছাড়া গতকালের মন্ত্রিসভা বৈঠকে ‘সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় শিক্ষক কল্যাণ ট্রাস্ট আইন’, ‘বাংলাদেশ পরমাণুু শক্তি কমিশন (সংশোধন) আইন’-এর নীতিগত অনুমোদন দেওয়া হয়। এ ছাড়া বাংলাদেশ ও ইরানের মধ্যে স্বাক্ষরের লক্ষ্যে দ্বৈত করারোপন পরিহার ও রাজস্ব ফাঁকি রোধ সংক্রান্ত চুক্তির খসড়ার অনুমোদন দেওয়া হয়। ‘জাতীয় কর্মসংস্থান নীতি’র খসড়ার অনুমোদনও দেয় মন্ত্রিসভা।

কল্যাণ ট্রাস্ট আইন : মন্ত্রিপরিষদসচিব জানান, সরকার একটি সিদ্ধান্ত নিয়েছে যে প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের জন্য কল্যাণ ট্রাস্ট গঠন করা হবে। এটি একটি সংবিধিবদ্ধ সংস্থা হবে।

তিনি বলেন, ‘মূল বিষয় হলো, চাকরিরত অবস্থায় একজন শিক্ষকের মৃত্যু হলে তাঁর অপ্রাপ্তবয়স্ক কোনো সন্তান থাকলে, প্রতিবন্ধী বা বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন শিশু থাকলে ও তৃতীয় লিঙ্গের কোনো শিশু থাকলে তাদের পড়াশোনার খরচ ট্রাস্টের পক্ষ থেকে দেওয়া হবে। ’

জাতীয় কর্মসংস্থান নীতি : মন্ত্রিপরিষদসচিব বলেন, ‘চতুর্থ শিল্প বিপ্লব মোকাবেলায় আগামী তিন-চার বছরের মধ্যে ৫৬ লাখ লোককে দক্ষ করে গড়ে তুলতে জাতীয় কর্মসংস্থান নীতি, ২০২২-এর খসড়া অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। এখন যে চতুর্থ শিল্প বিপ্লব আসছে ও আধুনিক বিশ্বের প্রযুক্তি পরিবর্তন হচ্ছে, ফলে আমাদের উৎপাদন, প্রযুক্তি ও শ্রমিকদের দক্ষতার ব্যাপক পরিবর্তন করা দরকার। এ পরিপ্রেক্ষিতে এটা নিয়ে আসা হয়েছে। এটার মূল উদ্দেশ্য হলো, দেশের শ্রমজীবী মানুষের কল্যাণ ও কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টির জন্য এ বিষয়ে একটি আধুনিক, যুগোপযোগী নীতির গুরুত্ব ও প্রয়োজনীয়তা। ’

Bootstrap Image Preview