Bootstrap Image Preview
ঢাকা, ২৯ শুক্রবার, মার্চ ২০২৪ | ১৫ চৈত্র ১৪৩০ | ঢাকা, ২৫ °সে

শ্রীলঙ্কায় আগুন জ্বলছে, চীনা লাড্ডু খেয়ে উদরাময়

বিডিমর্নিং ডেস্ক
প্রকাশিত: ০৬ এপ্রিল ২০২২, ০৪:২৫ AM
আপডেট: ০৬ এপ্রিল ২০২২, ০৪:২৫ AM

bdmorning Image Preview
ছবি সংগৃহীত


বিচারপতি শামসুদ্দিন চৌধুরী মানিক।। চীনের এক অতি মহাপরিকল্পনার নাম ‘বেল্ট অ্যান্ড রোড প্রজেক্ট’, যার দ্বারা চীন বিশ্বজুড়ে তার প্রভাব বলয় সৃষ্টি এবং ঋণের ফাঁদে ফেলে বিভিন্ন দেশের ভূমি দখলের পাঁয়তারায় ব্যস্ত। এ প্রকল্পে আগ্রহী দেশগুলোকে উচ্চসুদে, উঁচু অঙ্কের ঋণ দিয়ে চীন ঋণগ্রহীতা দেশগুলোর উন্নয়নের চেয়ে দেশগুলোকে ঋণের জালে জর্জরিত করছে বলে অনেক দেশই এ প্রকল্প থেকে পিছু হটছে, যার একটি বড় প্রমাণ মিলল সম্প্রতি চীনের প্রকল্পের প্রতি নেপালের দৃঢ় ‘না’ সূচক সিদ্ধান্ত থেকে। দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোকে চীনের এ বেল্ট অ্যান্ড রোড প্রজেক্টে আকৃষ্ট করে চীন থেকে অঢেল ঋণ নেওয়ার জন্য সম্প্রতি চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ওয়াং ইয়ে তাঁর সফরের অংশ হিসেবে নেপাল গমন করলে এবং এ প্রকল্প ও ঋণ নেওয়ার জন্য নেপালকে চুক্তিবদ্ধ হতে প্ররোচিত করার উদ্যোগ নিলে নেপাল চীনা মন্ত্রীর মুখের ওপর বলে দেয় তারা এ চুক্তি করবে না।

বর্তমান পরিস্থিতিতে চীনের ঋণের ফাঁদে না জড়াতে নেপালের শীর্ষ অর্থনীতিবিদরা তাঁদের সরকারকে এ পরামর্শ দেওয়ার কারণে নেপাল এহেন সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে। তাঁরা বলেছেন উন্নয়নের নামে ঋণের পসরা সাজিয়ে বসেছে চীন। তাঁরা উপলব্ধি করেছেন, বেল্ট অ্যান্ড রোড প্রজেক্টের আওতায় চীনের ঘনিষ্ঠতম বন্ধু পাকিস্তান, শ্রীলঙ্কাসহ এশিয়ার দেশগুলোয় ‘ডেট ট্র্যাপ’ বা ‘ঋণের ফাঁদ’ বিস্তার করে চীন সেসব দেশের সর্বনাশের কারণ হয়েছে। ইতোমধ্যে চীনের এ প্রকল্প নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে বেশ কটি দেশ। চীন-পাকিস্তান ইকোনমিক করিডোর নিয়ে অসন্তোষ দেখা দিয়েছে পাকিস্তানেই। চীনের মদদে একটি উচ্চাকাক্সক্ষী পরিকাঠামোর প্রকল্প ইতোমধ্যে মালয়েশিয়া সরকার বাতিল করে দিয়েছে। চীনের ঋণ গ্রহণ করে কোনো গ্রহীতা দেশই উপকার পাচ্ছে না, বরং এর ফলে দেশগুলো বাণিজ্যিক ঘাটতির মুখে পড়ছে, যার সবচেয়ে বড় উদাহরণ শ্রীলঙ্কা। চীনের ঋণের অভিশাপগ্রস্ত দেশটির অর্থনীতি আজ ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে, দেশটি দেউলিয়া হয়ে গেছে। আর তারই স্বাভাবিক পরিণতিতে দেশটিতে দাউ দাউ করে আগুন জ্বলছে। রয়টার্স জানিয়েছে, হাজারো মানুষ শ্রীলঙ্কার রাষ্ট্রপতি ভবন আক্রমণ করলে দেশটি জরুরি অবস্থা জারি করে। বহু লোককে গ্রেফতার করা হয়েছে, দাবি উঠেছে রাষ্ট্রপতির পদত্যাগের।

ভারতের প্রখ্যাত দৈনিক আনন্দবাজারের খবরে প্রকাশ, হাজার হাজার মানুষ দেশটির রাষ্ট্রপ্রধানের ভবন আক্রমণ করে সেখানে অগ্নিসংযোগের চেষ্টা করেছে। পুলিশ ও সামরিক বাহিনীর বেশ কয়েকটি গাড়ি জ্বালিয়ে দিয়েছে, কয়েকজন পুলিশ কর্মকর্তাকে আহত করেছে। পুলিশ ঘটনা নিয়ন্ত্রণে আনতে ব্যর্থ হওয়ার পর একটি বিশেষ বাহিনীকে নামানো হয়েছে এবং সেখানে সান্ধ্য আইন জারি করা হয়েছে। অনেক দিন থেকেই এ ধরনের কিছু ঘটার কথা নিয়ে সবাই শঙ্কিত ছিল। কেননা অভাবের তাড়নায় মানুষের পীঠ যখন দেয়ালে ঠেকে যায় তখন এমনটিই হয়। আনন্দবাজার ছাড়াও পৃথিবীর বেশ কয়েকটি নামিদামি পত্রিকায়ও এ খবর ছাপা হয়েছে। দেশটির বিদেশ থেকে নেওয়া ঋণের পরিমাণ বিপুল, যার অর্ধেকই চীনের। চীনা ঋণ নিয়ে শ্রীলঙ্কা শুধু তাদের একটি বন্দরই চীনকে দিতে বাধ্য হয়নি, বরং নিক্ষিপ্ত হয়েছে অর্থনীতির সংকটে এবং দারিদ্র্যের অতল সাগরে। অতীতে একটি সুন্দর দ্বীপরাষ্ট্র শ্রীলঙ্কা এখন ধ্বংসের মুখোমুখি, যে দেশে শিক্ষার হার ছিল অতি উঁচুতে, চিকিৎসাব্যবস্থা ছিল খুবই সন্তোষজনক, সে দেশে এখন বিরাজ করছে চরম দুর্ভিক্ষ, খাবার এবং ওষুধ হয়ে গেছে দুষ্প্রাপ্য। বিদ্যুতের অভাবে প্রতিনিয়ত চলছে ‘ব্ল্যাক আউট’। মিলছে না রান্নার গ্যাস, এমনকি কাগজের অভাবে অনেক পত্রিকা বন্ধ হয়ে গেছে, পাঠ্যবই প্রকাশ করাও দুষ্কর হয়ে গেছে, ছাত্রদের পরীক্ষা বন্ধ হয়ে গেছে। পেট্রোল স্টেশনে ঘণ্টার পর ঘণ্টা লাইন দিতে হচ্ছে গাড়িচালকদের। ওষুধের অভাবে, চিকিৎসার অভাবে, হাসপাতালে ভর্তি না হতে পেরে বহু লোক মৃত্যুর মুখোমুখি। বিদ্যুতের অভাবে হাসপাতালে অপারেশন ও রোগ নির্ণয় বন্ধ হয়ে গেছে। অনেকেই শ্রীলঙ্কা ছেড়ে পাশের রাষ্ট্রগুলোয় পাড়ি দিচ্ছে নেহাতই বেঁচে থাকার জন্য।

দেশটি গত সাত দশকে সবচেয়ে কঠিন অর্থ সংকটে নিমজ্জিত, আর এর জন্য দায়ী মূলত চীনা ঋণ। চীনের টাকার বস্তা দেখে লোভ সামলাতে না পেরে যত ইচ্ছা তত ঋণ নেওয়ার সময় দেশের সরকার ভেবে দেখেনি চীনা ঋণ তারা পরিশোধ করতে পারবে কি না। আর চীনও গ্রামের মহাজনদের মতো নিজ দেশের স্বার্থ চিন্তা করে শ্রীলঙ্কা যত চেয়েছে ততই ঋণ দিয়েছে, বলেছে আরও নাও। শ্রীলঙ্কার ভবিষ্যতের কথা ভাবেনি। শ্রীলঙ্কা এখন ভিক্ষার ঝুলি নিয়ে দেশে দেশে ঘুরছে। কয়েক মাস আগে বাংলাদেশ থেকে ঋণ নেওয়ার পর আবার নতুন করে ২৫ কোটি ডলার ঋণের জন্য হাত পেতেছে। হাত পেতেছে ভারতের কাছেও। এ ছাড়া দেশটি বাঁচতে পারবে না। এ প্রসঙ্গে বাংলাদেশ সফররত মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের আন্ডার-সেক্রেটারি ভিক্টোরিয়া ন্যুল্যান্ড শ্রীলঙ্কার অবস্থার কথা মনে করিয়ে দিয়ে চীনের ঋণের বিষয়ে বাংলাদেশকে সতর্ক থাকার পরামর্শ দিয়েছেন। বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভে বড় ধরনের ঘাটতি ও বিপুল ঋণের বোঝায় বেসামাল শ্রীলঙ্কার অর্থনীতি। শ্রীলঙ্কার কেন্দ্রীয় ব্যাংকের গভর্নর নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য আমদানির জন্য ভারতের কাছে ১৫০ কোটি ডলারের ঋণ চেয়েছেন। তদুপরি শ্রীলঙ্কার প্রেসিডেন্ট চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে এক বৈঠকে ঋণ পুনর্গঠনের জন্য অনুরোধ করেছেন। মুদ্রাস্ফীতি, উচ্চ বেকারত্ব ও খাদ্য থেকে ওষুধ পর্যন্ত নিত্যপ্রয়োজনীয় সব জিনিসেরই ঘাটতি। অনেক লোক অনাহারে বা অর্ধাহারে দিন কাটাচ্ছে।

শ্রীলঙ্কার জনপ্রিয় ইংরেজি দৈনিক ‘দ্য আইল্যান্ড’ জানিয়েছে ঠিকমতো বিদ্যুৎ না পাওয়ায় সেখানকার মানুষ কাপড় ইস্ত্রি করছে পুরনো পদ্ধতির কাঠ-কয়লার ইস্ত্রি দিয়ে, অন্ধকার দূর করতে ব্যবহার করছে কেরোসিনের হ্যারিকেন বাতি। পত্রিকাটি আরও লিখেছে জ্বালানি সংকটের কারণে বিদ্যুৎ বিভ্রাট, গ্যাস ও পানির তীব্র সংকট দেখা দিয়েছে। ফলে কেরোসিন বাতি ও কয়লার ইস্ত্রির দামও বহুগুণ বেড়েছে। এসবের কারণ চীন থেকে প্রচুর ঋণ নিয়ে কয়েকটি মেগা প্রকল্প হাতে নেওয়া। কলম্বো বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতির অধ্যাপক শ্রীমাল আবিরত্নে বিবিসিকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে বলেছেন, কিছু বিশাল প্রকল্প ছিল শ্রীলঙ্কার জন্য সাদা হাতি, যার মধ্যে রয়েছে হাম্বানটোটা সমুদ্রবন্দর ও বিমানবন্দর। শ্রীলঙ্কার অন্য গণমাধ্যমগুলো একই কথা বলে যাচ্ছে। আশঙ্কা করা হচ্ছিল, সে দেশের ক্রমবর্ধমান আর্থিক ও খাদ্য সংকটের কারণে একসময় জনগণের ধৈর্যের বাঁধ ভেঙে যেতে পারে, আর সে আশঙ্কাই এখন বাস্তব রূপ নিয়েছে। লন্ডনভিত্তিক থমসন রয়টার্স ফাউন্ডেশন বলছে, ১৯৪৮ সালে স্বাধীনতা লাভের পর থেকে শ্রীলঙ্কা ইতিহাসের সবচেয়ে ভয়াবহ অর্থনৈতিক মন্দায় পড়েছে। বৈদেশিক ঋণের ভারে জর্জরিত শ্রীলঙ্কায় খাদ্যের দাম আকাশ ছুঁয়েছে।

বিশ্বব্যাংকের মতে ২০২০ সালে আনুমানিক ৫ লাখের বেশি লোক দারিদ্র্যের মধ্যে পড়েছে। বহু অর্থনীতিবিদ আশঙ্কা করছেন দেশটি ঋণখেলাপি হওয়ার পথে। গত এক দশক ধরে সড়কপথ, সমুদ্রবন্দর, বিমানবন্দরসহ শ্রীলঙ্কার বিভিন্ন মেগা প্রকল্পে অর্থায়নের জন্য বিশাল অঙ্কের ঋণ দিয়েছে চীন। সমালোচকরা বলছেন, ঋণের অর্থ অপ্রয়োজনীয় প্রকল্পে খরচ করা হয়েছে যেখান থেকে নেহাতই সামান্য পরিমাণ আয় হচ্ছে। বর্তমানে বিশ্বব্যাপী সমালোচিত চীনা ডেট ট্র্যাপ ডিপ্লোম্যাসি বা চীনের ঋণের ফাঁদ কথাটির বাস্তব উদাহরণ দিতে অনেকেই শ্রীলঙ্কার প্রসঙ্গ টানেন। চীনা বিনিয়োগে শ্রীলঙ্কা হাম্বানটোটায় বৃহদাকারের বন্দর নির্মাণের প্রকল্প শুরু করে। কয়েক শ কোটি ডলারের ওই প্রকল্পে চীনা ঋণ ও চীনা ঠিকাদারদের ব্যবহার করা হচ্ছে। সারা বিশ্বেই এ প্রকল্প কতটা বাস্তবায়নযোগ্য তা ঘিরে বহু বিতর্ক তৈরি হয়েছে। আশঙ্কা করা হচ্ছিল এর ফলে শ্রীলঙ্কা ক্রমবর্ধমান ঋণের চাপে জর্জরিত হয়ে পড়বে। সে আশঙ্কা যে অমূলক নয় তা প্রমাণ করতেই যেন বছর পাঁচেক আগে শ্রীলঙ্কা আরও চীনা বিনিয়োগের বিনিময়ে বন্দরটির ৭০ ভাগ নিয়ন্ত্রণ চীনের রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন চায়না মার্চেন্ট কোম্পানির কাছে ৯৯ বছরের জন্য ইজারা মালিকানায় ছেড়ে দিতে বাধ্য হয়েছে। চীনের ঋণ শোধ করতে না পারার কারণে শ্রীলঙ্কা এমন অবস্থায় পড়ে যায় যখন চীনের নির্দেশনা ছাড়া শ্রীলঙ্কার পক্ষে এক পা এগোনো সম্ভব হয়নি, সোজা কথায় দেশটি চীনের বাহুবলে আবদ্ধ হয়ে যায়। চীনা নির্দেশনা অনুযায়ী শ্রীলঙ্কা চীন থেকে বহু টাকা দিয়ে জৈব সার আমদানি করতে বাধ্য হয়, কিন্তু পরে যখন দেখা গেল সেই সার শ্রীলঙ্কার ভূমির জন্য অনুপযুক্ত, তখন শ্রীলঙ্কার অনুরোধ উপেক্ষা করে চীন সারগুলোও ফেরত নেয়নি, টাকাও ফেরত দেয়নি। এর ফলে শ্রীলঙ্কায় শস্য উৎপাদন বিঘ্নিত হয়। এর বাইরেও আর্থিক বিপর্যয় মোকাবিলা করতে চীনের কাছ থেকে আরও ১ বিলিয়ন ডলার ধার করে শ্রীলঙ্কা। কলম্বো বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক উমেস মুরা মুদালি উল্লেখ করেছেন, ‘আমরা বেঁচে থাকার জন্য সংগ্রাম করছি। আমাদের জীবন দুর্বিষহ করে তোলার জন্য (তাদের) কখনই ক্ষমা করব না। বিদ্যুৎ নেই, গ্যাস নেই, পানি নেই, জ্বালানি নেই।’

বাংলাদেশের সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের এক গবেষক বলেছেন, শ্রীলঙ্কায় যে রিজার্ভ আছে তা দিয়ে সপ্তাহ-খানেকের পেমেন্ট মেটাতে পারবে। এমন দুর্বল রিজার্ভ দিয়ে জ্বালানি আমদানি করতে হিমশিম খাচ্ছে দেশটি। বাংলাদেশের সাবেক এক সচিব ও অর্থনীতিবিদ বলেছেন, ‘শ্রীলঙ্কা পারিপার্শ্বিক বিষয়গুলো খেয়াল না করে দ্রুত এগোতে চেয়েছে আর সেজন্যই আজকের এ ফল। না ভেবে-চিন্তে তারা প্রজেক্ট হাতে নিয়েছে। আমাদের দেশেও এমন লক্ষণ দেখা যাচ্ছে।’ সিপিডির এক গবেষক বলেছেন, শ্রীলঙ্কায় বেশ কিছু বড় বড় প্রকল্প দেশটির জন্য সাদা হাতিতে রূপান্তরিত হয়েছে। বিদেশি ঋণে সেসব বড় বড় অবকাঠামো করতে গিয়ে যেমন ঋণের বোঝায় পড়েছে তেমনি সেগুলো থেকে আশানুরূপ কোনো অর্থনৈতিক লাভও হয়নি। আমাদের দেশেও ঋণের টাকায় বিভিন্ন বড় প্রজেক্ট হাতে নেওয়া হয়েছে যেগুলোয় অপচয়ের খবর এসেছে। অনেক প্রজেক্টের ঋণের টাকা শোধের সময় হয়ে গেছে। অপ্রয়োজনীয় প্রজেক্ট যাতে না হয় কিংবা প্রজেক্টের অতিরিক্ত বা অযাচিত খরচ যেন না হয় সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে। শ্রীলঙ্কার গণমাধ্যমগুলো বলছে, চীনের মেগা প্রকল্প আর ঋণ তাদের ভিক্ষার ঝুলি হাতে নিতে বাধ্য করেছে।

সম্প্রতি আমাদের মহামান্য রাষ্ট্রপতিকে পাঠানো এক বার্তায় চীনের স্বৈরশাসক শি জিন পিং বলেছেন, ‘বেল্ট অ্যান্ড রোড’ প্রকল্প বাংলাদেশ-চীন সম্পর্ককে আরও উন্নত করবে। চীন এমনই ধরনের মিষ্টি কথা দিয়ে শ্রীলঙ্কা, মালদ্বীপ, জিবুতি প্রভৃতি দেশকে ঋণের ফাঁদে ফেলে ফায়দা লুটেছে। তাদের মিষ্টি কথায় ভুলে যাওয়ার আগে সবকিছু গভীরভাবে পর্যালোচনার প্রয়োজন রয়েছে বইকি, যাতে আমরা শ্রীলঙ্কার মতো অবস্থায় না পড়ি। নেপাল ও মালয়েশিয়া এটা উপলব্ধি করে তাদের দেশকে চীনা ঋণের ফাঁদ থেকে বাঁচিয়ে যে দূরদৃষ্টির পরিচয় দিয়েছে, সেটাই বাঞ্ছনীয়। অন্যান্য দেশকেও বিশেষ করে দরিদ্র, স্বল্পোন্নত ও উন্নয়নশীল দেশগুলোকে চীনের ঋণের ফাঁদ থেকে সাবধান হতে হবে, নইলে তাদের অবস্থাও শ্রীলঙ্কার মতোই হবে। একটি প্রবাদ আছে- ‘ঘুঘু দেখেছ, ফাঁদ দেখনি’। চীন তাদের টাকার বস্তা দেখিয়ে ঘুঘুই দেখাচ্ছে, সে বস্তার পেছনে যে ফাঁদ রয়েছে তা দেখাচ্ছে না। এখন অন্তত শ্রীলঙ্কার অবস্থা দেখে প্রতিটি দেশেরই উচিত ঘুঘুর পেছনের সে ফাঁদ দেখা।

লেখক : আপিল বিভাগের অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি।

Bootstrap Image Preview